দশটার পরীক্ষা সকাল ৮টায় গ্রহণ করে মাদ্রাসায় নির্বাচনী ভুড়িভোজ
পরীক্ষার সময় এগিয়ে এনে মানিকগঞ্জে একটি মাদ্রাসায় নির্বাচনী সভা করলেন আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী মো. রমজান আলী। এসময় বিভিন্ন মসজিদ-মাদ্রাসার ইমাম, মোয়াজ্জেম ও শিক্ষকদের ভুড়িভোজ করানো হয়। নির্বাচন কমিশন এ ঘটনাকে আচরণ বিধি ভঙ্গ বললেও, মেয়র প্রার্থীর দাবি এতে কোনো বিধি ভঙ্গ হয়নি।
জানা গেছে, মানিকগঞ্জ ইসলামিয়া কামিল মাদ্রাসার কয়েকটি শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষা ছিলো রোববার সকাল ১০টা থেকে। কিন্তু নির্বাচনী সভার কারণে দুই ঘণ্টা এগিয়ে এনে সকাল আটটা থেকে এই পরীক্ষা শুরু হয়। পরীক্ষা শেষে বেলা ১১টা থেকে নৌকার প্রার্থী মো. রমজান আলীর পক্ষে নির্বাচনী সভা শুরু হয়। এতে বিভিন্ন মসজিদ-মাদ্রাসার ইমাম, মোয়াজ্জেম, শিক্ষকসহ দুই শতাধিক মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
সভা শেষে মেয়র প্রার্থী রমজান আলী, তার ভাই দেলোয়ার হোসেনসহ পৌরসভার কয়েকজন কর্মচারী ভুড়িভোজের তদারকি করেন।
খবর পেয়ে সাংবাদিকরা মাদ্রাসায় উপস্থিত হন। কয়েকজন ইমাম ও মাদরাসা শিক্ষক জানান, মেয়র প্রার্থী রমজান আলীর ডাকেই তারা উপস্থিত হয়েছেন। রমজান আলী তাদের কাছে নৌকার পক্ষে ভোট চেয়েছেন। সভা শেষে ভাত, মাছ, মাংস ও দই দিয়ে আপ্যায়ন করা হয়।
এসময় উপস্থিত মেয়র প্রার্থী রমজান আলী সাংবাদিকদের জানান, হুজুরদের আমন্ত্রণেই মাদ্রাসায় এসেছেন তিনি। খাবারের ব্যবস্থা হুজুররাই করেছেন বলে দাবি করেন তিনি। নৌকার পক্ষে ভোট চাওয়ার বিষয়টি তিনি স্বীকার করলেও, মাদরাসা ব্যবহার করে প্রচারণা ও খাওয়া-দাওয়ার ফলে আচরণ বিধি লংঘন হয়নি বলে দাবি করেন তিনি।
মানিকগঞ্জ ইসলামিয়া কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাও. মোহাম্মদ মুসা জাগো নিউজকে জানান, মেয়র প্রার্থী রমজান আলীর সৌজন্যে মাদ্রাসায় মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়। খাবার বাইরে থেকে আনা হয়েছে। মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালেক স্বপনের মৌখিক অনুমতি নিয়েই এই সভার আয়োজন করা হয় বলে দাবি করেন তিনি।
জেলা নির্বাচন অফিসার মুনীর হোসাইন জাগো নিউজকে জানান, নির্বাচনী সভা ও ভুড়িভোজ করে ভোটাদের আকৃষ্ট করা নির্বাচনী আচরণ বিধি লংঘন। এর জন্য প্রাথমিকভাবে প্রার্থীকে সর্তক করাসহ আর্থিক জরিমানা এবং প্রার্থিতা বাতিলের বিধান রয়েছে।
জেলা রিটার্নিং অফিসার গাজী মো. আসাদুজ্জামান কবির জাগো নিউজকে বলেন, মাদ্রাসা রুম ব্যবহার করে নির্বাচনী সভা ও ভুড়িভোজ করার বিষয়টি জানতে পেরে ঘটনাস্থলে ম্যাজিস্ট্রেট পাঠানো হয়েছিলো। কয়েকজন ইমাম-মোয়াজ্জেমকে পাওয়া গেলেও, মেয়র প্রার্থী ও তার সমর্থকদের পাওয়া যায়নি।
বি.এম খোরশেদ/ এমএএস/পিআর