চট্টগ্রামের অলিগলিতে অবৈধ পশুর হাট
চট্টগ্রাম নগরের পাঁচলাইশের শুলকবহর মাদরাসা গেটের সামনে মহাসড়কের ওপরেই সাতটি গরু নিয়ে দাঁড়িয়েছেন সালামত আলী। তিনি এ গরুগুলো বিক্রি করবেন। আর এসব গরু কেনার উদ্দেশে দেখতে এসেছেন অর্ধশতাধিকের বেশি ক্রেতা।
শুলকবহর থেকে মহাসড়কটি ধরে মুরাদপুর মোড়ের দিকে যাওয়ার ৩০০ মিটার সামনে আখতারুজ্জামান ফ্লাইওভারের নিচে দেখা যায় আরেকটি গরুর ছোট হাট। পাঁচ-ছয়টি গরু নিয়ে এখানে দাঁড়িয়েছেন আরেক বিক্রেতা। ক্রেতার ছদ্মবেশে তার সঙ্গে কথা বলা হয়।
তিনি জানান, ‘এখান আপাতত পাঁচ-ছয়টি গরু বিক্রির জন্য এনেছি। এগুলো বিক্রি হলে আরও কয়েকটি আনব। আপনার কোনটা পছন্দ হয় দেখেন।’
এ বাজারটির আরও ১০০ মিটার সামনে একই ফ্লাইওভারের নিচে গড়ে ওঠেছে আরেকটি বাজার। এরপর ২ নম্বর গেট বিপ্লব উদ্যানের বিপরীতে মসজিদের পেছনে দেখা যায় আরেকটি গরুর বাজার। তার পাশে সিঅ্যান্ডবি কলোনির ভেতরেও একটি ছোট গরুর বাজার দেখা যায়। এভাবে মাত্র দুই কিলোমিটার এলাকার মধ্যে পাঁচটি অবৈধ গরুর হাট বসানোর দৃশ্য দেখা মেলে।
শুধু এ কয়েকটি নয়। শনিবার (১৭ জুলাই) চট্টগ্রাম নগরের বিভিন্ন স্থান ঘুরে অলিগলিতে এভাবে যত্রতত্র পশুর হাট গড়ে ওঠতে দেখা গেছে। এছাড়াও বিভিন্ন এলাকায় খোঁজ নিয়ে নগরে এ ধরনের ছোট ছোট শতাধিক গবাদি পশুর হাট গড়ে ওঠার খবর পাওয়া গেছে।
জানা গেছে, নগরে স্থায়ী তিনটি পশুর হাট রয়েছে। এগুলো হলো- বিবির হাট, সাগরিকা গরু বাজার ও পোস্তার পাড় ছাগলের হাট। এবারের কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে আরও তিনটি অস্থায়ী পশুর হাট বসানোর অনুমতি দিয়েছে জেলা প্রশাসনের স্থানীয় সরকার শাখা। এগুলো হলো- নুর নগর হাউজিংয়ের কর্ণফুলী গরুর হাট, সল্টগোলা রেলক্রসিং সংলগ্ন মাঠ ও কাটগড়ে বাটারফ্লাই পার্ক সংলগ্ন মাঠের হাট।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, নগরে নির্ধারিত স্থায়ী-অস্থায়ী এ ছয়টির বাইরে কোনো ধরনের পশুর হাট বসানোর সুযোগ নেই। এ ধরনের হাট বসানোর কারণে সরকারকে রাজস্ব দিয়ে যারা হাট ইজারা নিয়েছেন তারা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। যদিও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, অবৈধ এসব পশুর হাটের বিরুদ্ধে তাদের উচ্ছেদ অভিযান অব্যাহত আছে।
সাগরিকা গরুর হাটের ইজারাদার আবুল কালাম আজাদ বাবুল জাগো নিউজকে বলেন, ‘কোরবানিকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রাম শহরে আমার জানামতে প্রায় ২০০টি অবৈধ গরুর বাজার গড়ে ওঠেছে। এভাবে যদি গরুর বাজার গড়ে ওঠে তবে আমাদের ১১ কোটি টাকা দিয়ে ইজারা নেয়ার দরকার কি ছিল? তাদের কারণে আমাদের বেচা-বিক্রির ওপর প্রভাব পড়ছে।’
বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে চসিকের প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, ‘অবৈধ গরুর বাজার উচ্ছেদে আমাদের অভিযান অব্যাহত আছে। চসিকের দুজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এ অভিযানে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। শনিবার মোহাম্মদপুর ও খতিবের হাটসহ বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে এ ধরনের বাজার উচ্ছেদ করা হয়েছে। পাশাপাশি অবৈধ বাজার বসানোর দায়ে চার মামলায় ১৬ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে। চসিকের অভিযান অব্যাহত থাকবে।’
মিজানুর রহমান/জেডএইচ/জিকেএস