কিবরিয়া হত্যা মামলায় তিনজনের সাক্ষ্যগ্রহণ


প্রকাশিত: ০৯:১২ এএম, ১০ ডিসেম্বর ২০১৫
ফাইল ছবি

আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়া হত্যা মামলায় ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী তিনজনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছে। টানা তিন দফা আলোচিত এই হত্যা মামলার সাক্ষ্যগ্রহণের তারিখ পেছানোর পর বৃহস্পতিবার দুপুরে তিনজনের সাক্ষ্যগ্রহণ ও জেরা সম্পন্ন হয়।

সিলেট বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মকবুল আহসান বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা থেকে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত তিনজনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেন। এরা হলেন- ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী মকসুদ মিয়া, কারী আবদুস শহীদ ও জাহেদুর রহমান জাহেদ।

ট্রাইব্যুনালের বিশেষ পিপি অ্যাডভোকেট কিশোর কুমার কর জাগো নিউজকে বলেন, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর ও সিলেট সিটি কর্পোরেশনের সাময়িক বরখাস্তকৃত মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী ছাড়া কারাগারে আটক সব আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

তিনিবিলেন, আজ সকালে মামলার অন্যতম আসামি হুজির শীর্ষ জঙ্গি মুফতি হান্নান, হবিগঞ্জের সাময়িক বরখাসস্তকৃত মেয়র জিকে গউছসহ ১২ আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়। এছাড়া এ মামলায় জামিনে থাকা আরও আট আসামি সাক্ষ্যগ্রণের সময় এজলাসে হাজির ছিলেন।

মামলার পরবর্তী তারিখ পরে জানানো হবে বলে জানান ট্রাইব্যুনালের বিশেষ পিপি।

চাঞ্চল্যকর এ হত্যা মামলার ৩২ আসামির মধ্যে ৮ জন জামিনে, ১৪ জন কারাগারে ও ১০ জন পলাতক রয়েছেন।

এর আগে গত ২, ৩ ও ৯ ডিসেম্বরসহ মোট ১১ দফা এই মামলায় সাক্ষী ও পর্যাপ্ত আসামি উপস্থিত না হওয়ায় সাক্ষ্যগ্রহণ পেছানো হয়েছে। গত ৩০ সেপ্টেম্বর মামলার বাদী হবিগঞ্জ-২ আসনের সাংসদ ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল মজিদ খান। ওইদিন সাক্ষগ্রহণের মধ্য দিয়ে সাক্ষ্যগ্রহণ প্রক্রিয়া শুরু হয়।

প্রসঙ্গত, টানা ৯ দফা চার্জগঠনের তারিখ পেছানোর পর গত ১৩ সেপ্টেম্বর প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়া হত্যা মামলার চার্জ (অভিযোগ) গঠন করা হয়। মামলার কারান্তরীণ ও জামিনে থাকা সকল আসামির উপস্থিতিতে মোট ৩২ জনকে অভিযুক্ত করে চার্জ গঠন করা হয়।

অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছেন প্রাক্তন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, সিসিকর মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, হবিগঞ্জ পৌরসভার মেয়র জিকে গউছ, হরকাতুল জিহাদ নেতা মুফতি হান্নান প্রমুখ।

গত ২১ জুন, ৬, ১৪ ও ২৩ জুলাই এবং ৩, ১০, ১৮, ২৫ আগস্ট ও ৬ সেপ্টেম্বর আলোচিত এই মামলার চার্জ গঠনের তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছিল। কিন্তু সকল আসামিকে আদালতে হাজির করতে না পারায় চার্জ গঠনের তারিখ পিছিয়ে যায়।

২০০৫ সালের ২৭ জানুয়ারি হবিগঞ্জ সদরের বৈদ্যের বাজারে এক জনসভায় গ্রেনেড হামলায় নিহত হন প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়া। হামলায় নিহত হন কিবরিয়ার ভাতিজা শাহ মনজুরুল হুদা, আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুর রহিম, আবুল হোসেন ও সিদ্দিক আলী।

এ ঘটনায় হবিগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক আবদুল মজিদ খান হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দুটি মামলা দায়ের করেন।

তিন দফা তদন্তের পর এ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির সিলেট অঞ্চলের সহকারী পুলিশ সুপার মেহেরুন নেছা পারুল ২০১৪ সালের ২১ ডিসেম্বর আরিফুল, গউছ এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরীসহ ১১ জনের নাম যোগ করে মোট ৩২ জনের বিরুদ্ধে সম্পূরক অভিযোগপত্র দেন।

হবিগঞ্জের জেলা ও দায়রা জজ মো. আতাবুল্লাহ মামলাটি বিচারের জন্য গত ১১ জুন সিলেট দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে পাঠিয়ে দেন।
    
ছামির মাহমুদ/এসএস/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।