দাফনের সিদ্ধান্ত হয়নি : ঢামেক মর্গে ময়নাতদন্ত কার্যক্রম ব্যাহত

বিশেষ সংবাদদাতা
বিশেষ সংবাদদাতা বিশেষ সংবাদদাতা
প্রকাশিত: ০১:০৮ পিএম, ১১ জুলাই ২০২১

নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জের সেজান জুস ফ্যাক্টরির অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে প্রায় কয়লা হয়ে যাওয়া মরদেহগুলো দাফনের সিদ্ধান্ত না হওয়ায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) মর্গে স্বাভাবিক ময়নাতদন্ত কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। শুক্রবার (৯ জুলাই) বিকেলে রূপগঞ্জের ঘটনাস্থল থেকে আনা সর্বমোট ৪৮টি লাশের ময়নাতদন্ত ও পরিচয় শনাক্তের জন্য ডিএনএ নমুনা (পাঁজরের হাড়ও দাঁত) সংগ্রহ করা হয়।

প্রয়োজনীয় কার্যক্রম শেষে ঢামেক ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান সহযোগী অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ মাকসুদ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে জানান মর্গে মরদেহগুলো সংরক্ষণের আর কোনো প্রয়োজন। তিনি দ্রুততম সময়ে মরদেহ দাফনের পরামর্শ দেন।

অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ মাকসুদ রোববার (১১ জুলাই) দুপুর ১২টায় জাগো নিউজকালে জানান, ঢামেক মর্গে একসঙ্গে এতগুলো লাশ রাখার জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক মরচুয়ারি কুলার না থাকায় গতকাল শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ মর্গে ১৫টি ও ঢামেক জরুরি বিভাগ সংলগ্ন মর্গে ৮টি লাশ পাঠানো হয়। অবশিষ্ট লাশগুলো মর্গ ঘরে রয়েছে।

তিনি জানান, শনিবার (৫টি) ও রোববার (৩টি) ঢামেক মর্গে ময়নাতদন্তের জন্য বিভিন্ন থানা এলাকা থেকে আরও ৮টি লাশ আনা হয়। রূপগঞ্জে অগ্নিকাণ্ডে আগুনে পুড়ে যাওয়া লাশগুলো থেকে মারাত্মক পচা দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। ময়নাতদন্তের কক্ষে এসব লাশ রাখায় স্বাভাবিক ময়নাতদন্ত কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। মর্গের আশেপাশের পরিবেশের দূষণ হচ্ছে।

তিনি বলেন, ‘এ মুহূর্তে লাশগুলো রাখার আর কোনো প্রয়োজন নেই। তারা ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করে রেখেছেন। সিআইডি পুলিশের ফরেনসিক এক্সপার্টরা নিহতের স্বজন দাবি করছেন যারা তাদের কাছ থেকে ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করছেন। লাশ থেকে সংগ্রহীত ডিএনএ এবং স্বজনদের ডিএনএ পরীক্ষা করে পরিচয় শনাক্তে কমপক্ষে এক মাস সময় লেগে যাবে। যেহেতু নিহতদের লাশ দেখে চেনার কোনো সম্ভাবনা নেই, ফলে লাশগুলো দ্রুত দাফন করা হলে মর্গের স্বাভাবিক কার্যক্রম আবার শুরু করা যাবে।’

তিনি বলেন, ‘গতকালই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে লাশগুলো দ্রুততম সময়ে দাফনের জন্য পরামর্শ ও অনুরোধ জানানো হয়। আজ দুপুর ১২টা পর্যন্ত লাশ দাফনের ব্যাপারে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কিছুই জানায়নি।’

এদিকে রোববার তৃতীয় দিন পর্যন্ত অগ্নিকাণ্ডে নিহত ৪২ জন ভিকটিমের বিপরীতে ৬০ জন রক্তের সম্পর্কের স্বজনের নমুনা সংগ্রহ করেছে সিআইডির ফরেনসিক দল। নমুনা সংগ্রহের ক্ষেত্রে বাবা-মা ও সন্তানদের অগ্রাধিকার দেয়া হচ্ছে।

গত ৮ জুলাই বিকেলে রূপগঞ্জে সজীব গ্রুপের হাসেম ফুডস লিমিটেডের কারখানায় অগ্নিকাণ্ড ঘটে। ঘটনার প্রথম দিন তিনজনের মৃত্যু হয়। আহত হন অর্ধশত শ্রমিক। ফায়ার সার্ভিসের ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জের ১৮টি ইউনিট ২০ ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন প্রাথমিকভাবে নিয়ন্ত্রণে আনে। এরপর গত ৯ জুলাই সকালে ওই ভবনের চারতলা থেকে ২৬ নারীসহ ৪৯ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। সব মিলিয়ে এ ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৫২ জনে। ২৯ ঘণ্টা পর ৯ জুলাই রাতে পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসে আগুন।

এমইউ/ইএ/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।