ঢামেকের মর্গে থাকবে ২৫, সোহরাওয়ার্দীতে ১৫ মরদেহ
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে সজীব গ্রুপের হাশেম ফুড অ্যান্ড বেভারেজ লিমিটেডের কারখানায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নিহত ৪৮ জনের মরদেহ রাখা হয়েছে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের মর্গে। এই মরদেহগুলোর মধ্যে ১৫টি পাঠানো হবে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং ৮টি রাখা হবে ঢামেকের ইমারজেন্সিতে। বাকি ২৫টি মরদেহ থাকবে ঢামেকের মর্গে।
নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মশিউর রহমান শনিবার (১০ জুলাই) সকালে ঢামেকের মর্গ থেকে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। গতকাল (শুক্রবার) ৪৮টি মরদেহের ময়নাতদন্ত ও সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
ওসি মশিউর বলেন, আমাদের কাছে যে তথ্য আছে এখানে ৪৮টি মরদেহ এসেছে। ডিএনএ শনাক্তকরণের মাধ্যমে মরদেহগুলো স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে। সব মরদেহ শনাক্তের জন্য ডিএনএ নমুনা ঢাকা মেডিকেলের মর্গ থেকে নেয়া হবে।
তবে ঢাকা মেডিকেলের মর্গে রাখা হবে ২৫টি মরদেহ। বাকিগুলোর মধ্যে ১৫টি সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হবে। ৮টি রাখা হবে ঢাকা মেডিকেলের ইমারজেন্সিতে। সবগুলো মরদেহ ফ্রিজিং করে রাখা হবে। ডিএনএ শনাক্তের পর সেগুলো স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
এর আগে, গতকাল নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক শামীম বেপারী জানিয়েছিলেন, মরদেহ শনাক্তের জন্য ডিএনএ পরীক্ষার নমুনা দিতে ঢাকা মেডিকেলের মর্গে আসতে হবে স্বজনদের।
ঢাকা মেডিকেলের মর্গের সামনে থেকে তিনি বলেন, মৃতদেহগুলো এমন ভাবে পুড়ে গেছে যে পরিচয় শনাক্তের জন্য ডিএনএ পরীক্ষা করতে হবে। আমাদের পক্ষ থেকে স্বজনদের ডিএনএ নমুনা দেয়ার জন্য ঢাকা মেডিকেলের মর্গে আসতে বলা হয়েছে।
আর নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুভাষ চন্দ্র সাহা সাংবাদিকদের বলেন, আমাদের প্রথম কাজটি হবে মরদেহগুলোর যথাযথ প্রক্রিয়ায় ডিএনএ স্যাম্পল সংগ্রহ করা। সবগুলো মরদেহ আগুনে পুড়ে ঝলসে গেছে। প্রয়োজনে তাদের মরদেহ ফ্রিজিং করা হবে। আত্মীয়দের সঙ্গে ডিএনএ স্যাম্পল মিলিয়ে পরবর্তীতে মরদেহ হস্তান্তর করা হবে।
শুক্রবার বিকেল ৩টার দিকে পাঁচটি অ্যাম্বুলেন্সে করে সজীব গ্রুপের হাশেম ফুড অ্যান্ড বেভারেজ লিমিটেডের কারখানার ধ্বংসস্তূপ থেকে উদ্ধার করা মরদেহগুলো ঢামেকের মর্গে নিয়ে আসা হয়। এরপর সেগুলো এক এক করে মর্গের হিমঘরে নিয়ে যাওয়া হয়।
গত ৮ জুলাই বিকেলে রূপগঞ্জে সজীব গ্রুপের হাসেম ফুডস লিমিটেডের কারখানায় অগ্নিকাণ্ড ঘটে। ঘটনার প্রথম দিন তিনজনের মৃত্যু হয়। আহত হন অর্ধশত শ্রমিক। ফায়ার সার্ভিসের ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জের ১৮টি ইউনিট ২০ ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন প্রাথমিকভাবে নিয়ন্ত্রণে আনে। এরপর গত ৯ জুলাই সকালে ওই ভবনের চারতলা থেকে ২৬ নারীসহ ৪৯ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। সব মিলিয়ে এ ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৫২ জনে। ২৯ ঘণ্টা পর ৯ জুলাই রাতে পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসে আগুন।
এমএএস/এসএস/এমএস