উন্নয়ন কর্মযজ্ঞ শুরুর অপেক্ষায় যবিপ্রবি


প্রকাশিত: ০৮:২৬ এএম, ০৯ ডিসেম্বর ২০১৫

উন্নয়নের বিশাল কর্মযজ্ঞ শুরু হতে যাচ্ছে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (যবিপ্রবি)। যবিপ্রবি’র উন্নয়নে প্রায় ২৮২ কোটি টাকার প্রকল্পের চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আন্তরিকতায় এটি সম্ভব হয়েছে বলে জানিয়েছেন যবিপ্রবি উপাচার্য প্রফেসর ড. আব্দুস সাত্তার।

এ প্রকল্পের কাজ শেষ হলে যশোর বিশ্ববিদ্যালয়ের চেহারাই পাল্টে যাবে। যবিপ্রবির জন্য বিশাল উন্নয়ন বরাদ্দ দেয়ায় এ নিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন এ অঞ্চলের বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ। পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতাও জ্ঞাপন করেছেন তারা।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়নের জন্য ২৮১ কোটি ৮৯ লাখ টাকার প্রকল্প অনুমোদন করা হয়। ওই সভায় বিশেষ আমন্ত্রিত অতিথি ছিলেন যবিপ্রবি উপাচার্য প্রফেসর ড. আব্দুস সাত্তার।

যবিপ্রবি উপাচার্য প্রফেসর ড. আব্দুস সাত্তার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, এর আগে দেশের কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে এককালীন এতো উন্নয়ন বরাদ্দ দেয়া হয়নি। এ প্রকল্পের আওতায় ২৮১ কোটি ৮৯ লাখ টাকা ব্যয়ে যবিপ্রবির একাডেমিক ও অবকাঠামোগত উন্নয়ন কার্যক্রম পরিচালিত হবে।

সূত্র জানিয়েছে, একনেকে অনুমোদিত এ প্রকল্পের আওতায় যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন ১০তলা বিশিষ্ট একাডেমিক ভবন, ১০তলা বিশিষ্ট ছাত্রাবাস, ১০ তলার ভিতের ওপর ৫ তলা বিশিষ্ট ছাত্রীনিবাস, ৬ তলা ভিতের ওপর দুই তলাবিশিষ্ট টিএসসি ভবন, তিনতলা ভিতের ওপর দুই তলাবিশিষ্ট স্কুলভবন ও শেখ রাসেল জিমনেসিয়াম নির্মাণ করা হবে।

পাশাপাশি মেডিকেল সেন্টারের দুই তলা ভবনকে ৬ তলায়, ৫ তলাবিশিষ্ট বঙ্গবন্ধু একাডেমিক ভবনকে ৯ তলায়, তিনতলা বিশিষ্ট লাইব্রেরি ভবনকে ৬ তলায় উন্নীত করা হবে। এছাড়া গবেষণাগারের জন্য ২০ কোটি টাকার যন্ত্রপাতি, ২০ কোটি টাকার আসবাবপত্র ক্রয় ছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরের রাস্তা, কালভার্ট নির্মাণ ও সংস্কার করা হবে। সব মিলিয়ে এ প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের চেহারা পাল্টে যাবে।

উল্লেখ্য, যশোর শহর থেকে ১২ কিলোমিটার উত্তর পশ্চিমে যশোর-চৌগাছা সড়কের আমবটতলায় ৩৫ একর জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। ২০০৭ সালের ২৫ জানুয়ারি এর একাডেমিক কার্যক্রম শুরু হয়। এরপর ২০০৯ সালের ১০ জুন চারটি বিভাগে পাঠদানের মধ্যে দিয়ে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়। বর্তমানে ৬টি অনুষদে ১৮টি বিভাগে বিএসসি, এমএসসি, পিএইচডি, বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং ও এমএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সে ৩ হাজার শিক্ষার্থী অধ্যায়ন করছেন। সেশনজটমুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়টি বিশ্বমানের আধুনিক উচ্চতর শিক্ষা কার্যক্রম এবং প্রায়োগিক ও বাস্তবমুখী গবেষণাকর্ম সুশৃংখলভাবে পরিচালিত হচ্ছে। এসব কারণে বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রতি সরকারেরও সুদৃষ্টি রয়েছে বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্টরা।

আর সর্বশেষ বিশাল কর্মযজ্ঞের এ প্রকল্প অনুমোদনের সংবাদ যবিপ্রবি ক্যাম্পাসে পৌঁছানোর সঙ্গে সঙ্গে সকল শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের মাঝে আনন্দের ঢেউ খেলে যায়। তারা নিজেদের মধ্যে মিষ্টি বিতরণও করেন। এ প্রকল্প অনুমোদন পাওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি, কর্মকর্তা সমিতি, কর্মচারী সমিতি এবং এলাকার সর্বস্তরের জনগণ প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।

একনেকের সভায় যশোর বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য ২৮২ কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদনের খবরে যশোরবাসীও উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন। যশোরের মানুষ এ জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেছেন। এই প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে যশোরে বিনম্র আমন্ত্রণ জানিয়েছেন এই জেলার বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ।  

যবিপ্রবি উপাচার্য প্রফেসর ড. আব্দুস সাত্তার বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আন্তরিকতায় এই প্রকল্প অনুমোদন পেয়েছে। যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতি বরাবরই প্রধানমন্ত্রীর সুদৃষ্টি রয়েছে। ২০১০ সালে ২৭ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী যবিপ্রবি ক্যাম্পাস উদ্বোধন করে যে উন্নয়নের ধারার সূচনা করেছিলেন তারই ধারাবাহিকতার ফসল এ প্রকল্প।

মিলন রহমান/এসএস/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।