বংশালে শাটার নামিয়ে সেলুন খুলেছেন তারা
সন্ধ্যা ৭টা। পুরান ঢাকার বংশালের নবাবকাটরা রোড। পাশাপাশি থাকা দুটি সেলুনের দুই-তৃতীয়াংশ শাটার খোলা। বাইরে দাঁড়িয়ে পাহারা দিচ্ছেন এক ব্যক্তি। কেউ চুল কাটাতে এলে আগে এই পাহারাদারের সঙ্গেই কথা বলতে হয়। কতক্ষণ অপেক্ষা করতে হবে এবং কত টাকা দিতে হবে তিনিই তা নির্ধারণ করে দেন।
এ সময় শাটারের নিচে উঁকি দিয়ে দেখা যায়, দুটি সেলুনের ভেতর পৃথক চারটি চেয়ারে চুল কাটছেন চারজন নরসুন্দর। এই প্রতিবেদক ছবি তুলতে চাইলে তাৎক্ষণিক সেলুন বন্ধ করে দেন তারা। যারা চুল কাটতে বসেছিলেন, তারাও এদিক ওদিক চলে যান।
জানতে চাইলে সোহাগ হেয়ার কাটিংয়ের মালিক মো. সোহাগ বলেন, লকডাউনের প্রথম দুদিন এই এলাকার সব দোকানপাট এবং সেলুন বন্ধ ছিল। কিন্তু আজ শনিবার (৩ জুলাই) অনেকেই অর্ধেক শাটার খোলা রেখে দোকানপাট খুলেছেন। তাই তারাও এই পন্থা অবলম্বন করেছেন।
তিনি বলেন, সেলুন বন্ধ থাকলে ঘরে খাবার থাকে না। বউ-বাচ্চা নিয়ে না খেয়ে থাকতে হয়। সরকার তাদের খাদ্যসহায়তা দেয় না। তাই ঝুঁকি নিয়েই তারা সেলুন খুলেছেন।
এই সেলুনের সামনে দাঁড়িয়ে যে পাহারা দিচ্ছিলেন তার নাম আরিফ হোসেন। তিনি বলেন, তিনিও এই সেলুনে কাজ করেন। তবে পুলিশের ভয়ে বাইরে পাহারা দিচ্ছিলেন। পুলিশ আসার সঙ্গে সঙ্গে তারা সেলুনের শাটার লাগিয়ে ভেতরের লাইটও বন্ধ রাখেন।
নবাবকাটরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন মাহতাব হোসেনের বাসা। তার বাড়ির নিচে আলাপকালে তিনি বলেন, এ এলাকার মানুষের মাঝে করোনা সচেতনতা কম। লকডাউন চললেও এলাকার ভেতর যে যার মতো চলাচল করছেন। সেলুনসহ অনেক দোকানপাটই খোলা রয়েছে। কিন্তু পুলিশ তা তদারকি করছি না।
জানতে চাইলে বংশাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল খায়ের জাগো নিউজকে বলেন, ফার্মেসি, মুদি এবং খাবার দোকান ছাড়া সব কিছু বন্ধ থাকার কথা। খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নিচ্ছি।
দেশে করোনা সংক্রমণ উদ্বেগজনক হারে বেড়ে যাওয়ায় বৃহস্পতিবার (১ জুলাই) সকাল ৬টা থেকে ৭ জুলাই মধ্যরাত পর্যন্ত কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়। করোনাভাইরাস সংক্রমণের বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় ২১টি শর্ত যুক্ত করে এ বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে বলে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়।
এমএমএ/জেডএইচ/এএসএম