তাওহিদই ইবাদাতের উৎস
আল্লাহ তাআলা হিদায়াত এবং গুমরাহীর দিক থেকে মানুষের তিনটি দলের কথা উল্লেখ করার পর মানবমণ্ডলীর সবাইকে সম্মিলিতভাবে ইসলামের দুটি মৌলিক ভিত্তি একত্ববাদ-রিসালাত এবং তার ইবাদাতের প্রতি প্রত্যেক মানুষকে আহবান করেন। কেননা একত্ববাদ ব্যতিত ইবাদাত সম্ভব নয়।
বলা হচ্ছে, যখন তোমাদের ও সারা বিশ্ব জাহানের স্রষ্টা আল্লাহ তাআলা। তোমাদের সমস্ত প্রয়োজনের ব্যবস্থাপক যখন তিনিই, তখন তোমরা তাকে বাদ দিয়ে অন্যের ইবাদাত কেন কর? অন্যকে তার সাথে অংশীদার স্থাপন কেন কর? যদি তোমরা আল্লাহর আযাব থেকে বাঁচতে চাও। তবে উপায় একটাই তা হলো- তোমরা আল্লাহকে একক মেনে নিয়ে কেবল তাঁরই ইবাদাত করো। এবং জেনে শুনে শির্ক করো না। আল্লাহ বলেন-
‘হে মানব সমাজ! তোমরা তোমাদের পালনকর্তার ইবাদাত কর, যিনি তোমাদিগকে এবং তোমাদের পূর্ববর্তীগণকে সৃষ্টি করেছেন। তাতে আশা করা যায়, তোমরা পরহেযগারী অর্জন করতে পারবে। যে পবিত্রসত্তা তোমাদের জন্য ভূমিকে বিছানা এবং আকাশকে ছাদ স্বরূপ স্থাপন করে দিয়েছেন, আর আকাশ থেকে পানি বর্ষণ করে তোমাদের জন্য ফল-ফসল উৎপাদন করেছেন তোমাদের খাদ্য হিসাবে। অতএব, আল্লাহর সাথে তোমরা অন্য কাউকে সমকক্ষ করো না। বস্তুতঃ এসব তোমরা জান। (সুরা বাক্বারা : আয়াত ২১-২২)
আলোচ্য প্রথম আয়াতে শুধুমাত্র এক আল্লাহর ইবাদাত করার কথা বলা হয়েছে, অন্যকে এর মধ্যে অংশীদার করা যাবে না। ইবাদাত অর্থ শুধু উপাসনাই নয় বরং আনুগত্য ও ভক্তি অন্তর্ভূক্ত। যার মধ্যে নামাজ, রোজা, হজ, জাকাতও এসে গেছে এমনকি বিয়ে-তালাক, আদান-প্রদান, ব্যবসা-বাণিজ্যসহ সকল বিধি-বিধান এসে গেছে। যারাই এ বিধি-বিধান মেনে চলবে আশা করা যায় তারাই পরহেজগার।
দ্বিতীয় আয়াতে আকাশ-পৃথিবীর আকৃতি বর্ণনা করা অথবা উভয়ের রহস্য প্রকৃতি বর্ণনা করা উদ্দেশ্য নয়। উদ্দেশ্য শুধু এ কথা বুঝিয়ে দেয়া যে, আকাশ-পৃথিবীর জন্য মানুষকে সৃষ্টি করা হয়নি বরং আসল লক্ষ্য এবং উদ্দেশ্যে হচ্ছে মানুষ। আর মানুষের কল্যাণেই আসমান-জমিনকে আল্লাহ তাআলা বিছানা ও সামিয়ানা হিসেবে তৈরি করেছেন।
জমিন হলো এমন সমতল বিছানা। যাতে আমরা পা রেখে চলাফেরা করতে পারি। পৃথিবীর আকৃতি যেমনই হোক মানুষ ও মানবতার আবাসভূমি হিসেবে জমিনের মতো এত সুন্দর ধরণী আর হতে পারে না। ঠিক তদ্রুপ আসমান উপর থেকে আমাদেরকে ঢেকে রেখেছে এবং আল্লাহ তাআলা আসমানকে খুঁটিবিহীন মানুষের সেবায় নিয়োজিত রেখেছেন। যাতে বান্দা আল্লাহ সঙ্গে অন্য কাউকে অংশীদার স্থাপন না করে। (জালালাইন)
সুতরাং সমগ্র মুসলিম উম্মাহর উচিত, শুধুমাত্র ঐ আল্লাহর দাসত্ব করা, যিনি মানুষকে ইবাদাতের জন্য সৃষ্টি করে জমিনকে বিছানা করে দিয়েছেন, আসমানকে সামিয়ানা বানিয়েছেন, আসমান থেকে বৃষ্টির মাধ্যমে পানি বর্ষণ করে মানুষের জন্য জীবিকা হিসেবে ফলমূল উৎপন্নের ব্যবস্থা করেছেন। আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে শুধুমাত্র তার একত্ববাদে বিশ্বাসী হয়ে ইবাদাত বন্দেগি করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
এমএমএস/পিআর