বাধ্য হয়েই অধিনায়ক মাশরাফি!


প্রকাশিত: ০৩:১৪ পিএম, ০৭ ডিসেম্বর ২০১৫

বাধ্য হয়েই কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের নেতৃত্ব দিচ্ছেন মাশরাফি বিন মর্তুজা! বরিশাল বুলসের বিপক্ষে ৭ উইকেটে জয়ের পর সংবাদ সম্মেলনে এসে মাশরাফি নিজে যেভাবে কথা বললেন, তাতেই বোঝা যাচ্ছে, বাধ্য হয়েই নেতৃত্ব চালিয়ে যেতে হচ্ছে তাকে। তবে, এটা ঠিক, মালিক পক্ষের চাওয়ার বিষয়টি থাকলেও, তারা কিন্তু মাশরাফিকে বাধ্য করছে না। মূলতঃ দলের পরিস্থিতির কারণেই নেতৃত্ব চালিয়ে যেতে হচ্ছে নড়াইল এক্সপ্রেসকে।

ইনজুরির সঙ্গে তার সখ্য ক্যারিয়ারের শুরু থেকে। এ নিয়ে হাঁটুতে অন্তত ১০বার অস্ত্রোপচার করিয়েছেন তিনি। শুধু তাই নয়, খেলতে নামার আগে এখনও ৩০ থেকে ৪০ মিনিট হাঁটুতে পট্টি বাঁধতে হয় মাশরাফিকে। এ কারণে তাকে নিয়ে শঙ্কার একটা কালোমেঘ সব সময়ই থাকে।

ইনজুরির সঙ্গে বিপিএলের আগে যোগ হয়েছে ডেঙ্গু। জিম্বাবুয়ে সিরিজের আগেই ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছিলেন তিনি। এরপর বিশ্রাম নেয়া প্রয়োজন হলেও, তা না নিয়ে দলের জন্য ঝাঁপিয়ে পড়েছেন মাঠে। সাকিব আল হাসান কন্যা সন্তান জন্মের কারণে চলে গিয়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্রে। যে কারণে, চাইলেও বিশ্রাম নিতে পারেননি মাশরাফি।

এরপরই শুরু হলো বিপিএল। নিজের ফ্রাঞ্চাইজি কুমিল্লার সঙ্গে দায়বদ্ধতার কারণেই মাশরাফিকে টানা খেলে যেতে হচ্ছে। হালকা চোট সমস্যা থাকলেও সেগুলোকে করছিলেন থোড়াই কেয়ার। কিন্তু বিপত্তিটা বেধেছে, চট্টগ্রামে সিলেট সুপার স্টারসের বিপক্ষে ম্যাচের দিন। ওই দিন বোলিং করার কথা ছিল না মাশরাফির। এ কারণে হাঁটুতে পট্টি না বেধেই মাঠে নামেন তিনি।

কিন্তু ডলার মাহমুদের হঠাৎ ইনজুরির কারণে বোলার সংকটে পড়েই বল হাতে তুলে নেন মাশরাফি। ওই দিনের পর অবশ্য টানা দুইম্যাচ বোলিং করেননি তিনি। এমন ইনজুরিপ্রবণ হওয়ার পরও কেন তিনি খেলে যাচ্ছেন? এমন প্রশ্নে মাশরাফি জানান, বাধ্য হয়েই তাকে দলে থেকে নেতৃত্ব দিতে হচ্ছে। দলে দেশি অভিজ্ঞ সিনিয়র খেলোয়াড়ের সংকট থাকার কারণেই মূলতঃ নেতৃত্ব চালিয়ে যেতে হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

এখন বোলার নয়, মাশরাফি দলে অন্তর্ভূক্ত হচ্ছেন একজন ব্যাটসম্যান হিসেবে। ব্যাটসম্যান হিসেবে খেললেও সম্পূর্ণ ফিট নন মাশরাফি। সোমবার মাঠে তা ভালোভাবেই চোখে পড়েছে। তারপরও কেন তিনি খেলা চালিয়ে যাচ্ছেন? এমন প্রশ্নে কুমিল্লার অধিনায়ক বলেন, ‘আমি না থাকলে দলটি পরিচালনার জন্য একজন বিদেশির ওপর নির্ভর করতে হবে। আমরা এখনই তা চাচ্ছি না। চাইলেও সমস্যা নাই; কিন্তু তারা আমাদের স্থানীয় ছেলেদের ভালো করে চেনে না। আমাদের উচিত ওদের থেকে সাহায্য নেওয়া। ওরা খেলবে আমরা সহযোগিতা করবো। এই মানসিকতা শুরু থেকেই তৈরী করতে চাচ্ছি। আমাদের স্থানীয় বোলারদের খুব কাছ থেকে চিনি। এজন্য মাঠে থাকতে হচ্ছে আমাকে।’

বিদেশি খেলোয়াড় কাউকে অধিনায়ক করলে যে সকল সমস্যা হবে তার ব্যাখ্যাও দেন মাশরাফি। তারা খুব ভালো করে স্থানীয় খেলোয়াড়দের না চেনার কারণে সঠিকভাবে বোলারদের ব্যবহার করতে পারবে না বলে মনে করেন তিনি। যদিও বিকল্প হিসাবে ইমরুল কায়েসকে ভেবেছিলেন তারা; কিন্তু অধিনায়কত্বের অভিজ্ঞতা না থাকায় সে পথ থেকেও সরে আসতে হয়েছে বলে জানান কুমিল্লার অধিনায়ক। আর ফ্র্যাঞ্চাইজি মালিকরাও তাকে চাচ্ছেন দলের নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য। তাদের চাওয়া ব্যাটিং-বোলিং কিছু না করলেও চলবে। তাই বিকল্প না দেখে বাধ্য হয়েই অধিনায়কত্ব করছেন মাশরাফি বিন মর্তুজা।

আরটি/আইএইচএস/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।