আজ বীরগঞ্জ শক্রমুক্ত দিবস


প্রকাশিত: ০৩:৩৪ এএম, ০৬ ডিসেম্বর ২০১৫

আজ ৬ ডিসেম্বর (রোববার)। বীরগঞ্জ শক্রমুক্ত দিবস । ১৯৭১ সালের এই দিনে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই করে বীরগঞ্জ এলাকাকে শক্রমুক্ত করে মুক্তি বাহিনী এবং মিত্র বাহিনীর যোদ্ধারা।

দিবসটি পালন উপলক্ষে ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে স্থানীয় সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংগঠন। বীরগঞ্জ পাবলিক লাইব্রেরির আয়োজনে বেলা ১১টায় বর্ণাঢ্য পতাকা র‌্যালি বের হবে। উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের উদ্যোগে বিকেলে স্থানীয় পুরাতন শহীদ মিনার চত্বরে আলোচনা সভা ও সন্ধ্যায় স্থানীয় পত্রিকা বীরগঞ্জ প্রতিদিনের আয়োজনে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে।

Denaspur

বীরগঞ্জ কিভাবে শক্রমুক্ত হয় জানতে চাইলে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার অধ্যাপক কালিপদ রায় এবং সাবেক কমান্ডার মো. কবিরুল ইসলাম বলেছেন, পার্শ্ববর্তী জেলা ঠাকুরগাঁও ৩ ডিসেম্বর শক্র মুক্ত হওয়ার পর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী সৈয়দপুর (পাক বিহার) অভিমুখে পালিয়ে যাওয়ার সময় মুক্তি বাহিনী ও মিত্র বাহিনীর প্রবল প্রতিরোধের মুখে পড়ে। হানাদার বাহিনী বীরগঞ্জ থেকে পিছু হটে বীরগঞ্জ-কাহারোল উপজেলা সীমান্তের দিনাজপুর-পঞ্চগড় মহাসড়কে ভাতগাঁও ব্রিজের পূর্ব প্রান্তে অবস্থান নেয়। এখানে পাক বাহিনী ও রাজাকারদের সঙ্গে মুক্তি বাহিনীর তুমুল যুদ্ধে ভাতগাঁও ব্রিজের একাংশ ভেঙে যায়। এ সময় বেশ কিছু মুক্তি বাহিনী ও মিত্র বাহিনীর বীর যোদ্ধা শহীদ হন।

স্বাধীনতা যুদ্ধে দিনাজপুর ৬ নম্বর সেক্টরের অধীন হওয়ায় বীরগঞ্জ উপজেলা এর আওয়াতধীন ছিল। লে. কর্নেল কাজী নুরুজ্জামান এর নেতৃত্বাধীন সেনাবাহিনীর হাবিদার মোস্তাফিজুর রহমান বীরগঞ্জ ও খানসামার যুদ্ধ পরিচালনার দায়িত্বে নিয়েজিত ছিলেন।

৫ ডিসেম্বর বিকেল ৪ টায় মিত্র বাহিনীর বিমান হামলার মধ্যে দিয়ে বীরগঞ্জ শক্র মুক্ত হতে থাকে। রাতেই পুরো এলাকা মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনী দখল করে নেয়। সকালে বীরগঞ্জের অলিগলিতে মুক্ত বাতাসে উড়ে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা।
 
উল্লেখ্য, ১৯৭১ সালে যুদ্ধ শুরুর প্রাক্কালে ১৪ এপ্রিল ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান বীরগঞ্জ শাখার গার্ড লক্ষ্মীপুর জেলার লক্ষ্মীপুর থানার দিঘলী গ্রামের মৃত. সিকান্দার আলীর ছেলে মো. মহসিন আলী এবং বীরগঞ্জ উপজেলার সুজালপুর ইউনিয়নের শীতলাই গ্রামের মো. আব্দুর রাজ্জাক মদনপুর সন্মুখ যুদ্ধে শহীদ হন।

এছাড়াও বীরগঞ্জের বীর সন্তান বুধারু বর্মণ, রমেন সেন ও মতিলাল বর্মণসহ ৩ জন স্বাধীনতাযুদ্ধে দেশের বিভিন্ন রণাঙ্গনে শহীদ হন।

২০০৮ সালে স্থানীয় সাংবাদিক মো. আব্দুর রাজ্জাক এ বিষয়টি পত্রিকায় তুলে ধরেন এবং উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত বিজয় দিবস উদযাপন প্রস্তুতি সভায় দিনটিকে আনুষ্ঠানিকভাবে পালনের দাবি জানান। তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. হাসান মারুফ আনুষ্ঠানিকভাবে দিবসটি পালনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। সেই সভায় সর্বসম্মতিক্রমে বীরগঞ্জ পাবলিক লাইব্রেরিকে দিবসটি পালনের সার্বিক দায়িত্ব দেয়া হয়। বীরগঞ্জ পাবলিক লাইব্রেরির বর্ণিল আয়োজনের মধ্য দিয়ে স্বাধীনতার পর ২০০৮ সালে প্রথমবারের মতো আনুষ্ঠানিকভাবে পালন করা হয় বীরগঞ্জ মুক্ত দিবস।

এমদাদুল হক মিলন/এসএস/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।