জবাবদিহিতাই প্রকৃত জীবন
পৃথিবী মানুষের স্থায়ী আবাসস্থল নয়। এখানে কেউ নির্দিষ্ট সময়ে বেশি থাকতেও পারবে না। শুধু আমরাই এ পৃথিবীতে আসিনি, আমাদের পূর্বে অগণিত অসংখ্য মানুষ এ দুনিয়ায় এসেছে এবং চিরবিদায় নিয়ে চলে গেছে। আল্লাহ তাআলা মানুষকে তার প্রতিনিধি হিসেবে পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন। প্রত্যেকটি মানুষেই পর্যায়ক্রমে দায়িত্বশীল। আজকে যে শিশু একদিন তার সংসার হবে। বড় হয়ে সেও তার পরিবারের দায়িত্ব পালন করবে। এর মাধ্যমে পৃথিবীর প্রতিটি কাজের জন্য প্রতিদান দিবসে আল্লাহর আলীশান দরবারে জবাবদিহি করতে হবে। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সমগ্র উম্মাহকে তা বর্ণনা করেছেন-
হজরত আবদুল্লাহ ইবনে উমার রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘আমি রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি, ‘তোমাদের প্রত্যেকেই রক্ষণাবেক্ষণকারী বা দায়িত্বশীল এবং তোমাদের প্রত্যেকেই তার অধীনস্থদের রক্ষণাবেক্ষণ সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। ইমাম (শাসক) দায়িত্বশীল, তাকে তার অধিনস্থদের প্রতিপালন ও দায়িত্বপালন সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। পুরুষ তার পরিবার ও সংসারের জন্য দায়িত্বশীল এবং তাকে তার রক্ষণাবেক্ষণ ও দায়িত্বপালন সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। স্ত্রীলোক তার স্বামীর ঘরের রক্ষণাবেক্ষণকারিনী এবং তাকে সে সম্পর্কে জবাবদিহি করতে হবে। খাদেম তার মনিবের সম্পদের রক্ষণাবেক্ষণকারী এবং তাকে তার সে দায়িত্বপালন সম্পর্কে জবাবদিহি করতে হবে। অতএব তোমাদের প্রত্যেকেই দায়িত্বশীল এবং প্রত্যেককে নিজ নিজ দায়িত্ব পালন সম্পর্কে জবাবদিহি করতে হবে।’ (বুখারি)
উপরোক্ত হাদিস থেকে স্পষ্ট বুঝা যায় যে, পৃথিবীর প্রতিটি বনি আদম তাঁর ওপর অর্পিত দায়িত্ব সম্পর্কে আল্লাহ তাআলার দরবারে জবাব দিতে হবে। যতক্ষণ মানুষের মাঝে এ চিন্তা চেতনা জাগ্রত থাকবে, ততক্ষণ দুনিয়ার জীবন হবে সুন্দর এবং সার্থক। যেখানে থাকবে না কোনো ধরনের সমস্যা। চাই ব্যক্তিগত, পারিবারিক বা জাতীয় পর্যায়ের। এ হাদিসের শিক্ষাকে কাজে লাগতে পারলেই মানুষ দুনিয়াতে প্রকৃত জীবন-যাপনের স্বাদ পাবে। আখিরাতের বিশাল জিন্দেগিতে পাবে মুক্তি। আল্লাহ তাআলা সমগ্র মুসলিম উম্মাহকে প্রত্যেকের যথাযথ দায়িত্ব পালনে সচেষ্ট থাকার তাওফিক দান করুন। আমিন।
ইসলাম বিভাগে লেখা পাঠাতে ই-মেইল করুন : [email protected]
জাগোনিউজ২৪.কমের সঙ্গে থাকুন। কুরআন-হাদিস মোতাবেক আমলি জিন্দেগি যাপন করে আল্লাহর নৈকট্য অর্জন করুন। আমিন, ছুম্মা আমিন।
এমএমএস/এমএস