কালো টাকা সাদা : অর্থমন্ত্রীর নতুন বক্তব্যে টিআইবির হতাশা-বিস্ময়
প্রস্তাবিত বাজেটে ঢালাওভাবে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ না বাড়ানোয় সৎ করদাতাদের মধ্যে যে স্বস্তি মিলেছিল, তা একদিনের ব্যবধানে উৎকণ্ঠায় পরিণত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছে টিআইবি। বাজেট পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে অর্থমন্ত্রীর ‘এক মাস দেখে সিদ্ধান্ত’ নেয়ার ঘোষণায় গভীর হতাশা, বিস্ময় ও ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে সংস্থাটি।
এর আগে বাজেটে কালো টাকা সাদা করা নিয়ে কোনো ঘোষণা না থাকাকে টিআইবি সরকারের বোধোদয় হয়েছে বলে মনে করেছিল এবং সতর্ক সাধুবাদ জানিয়েছিল উল্লেখ করে শনিবার (৫ জুন) এক বিবৃতিতে সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করতে চাই যে, বাজেট অর্থমন্ত্রী ও অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে শুরু করে সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের দিকনির্দেশনায় তৈরি একটি সমন্বিত চিন্তার আর্থিক দলিল। কিন্তু সেটি সংসদে উপস্থাপনের পরদিনই তারই একটি সিদ্ধান্ত নিয়ে অর্থমন্ত্রীর সংশয় এবং বাস্তবে ইউ-টার্ন সত্যিই অবাক করার মতো।’
ড. ইফতেখারুজ্জামান আরও বলেন, ‘চলতি অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে রেকর্ড ১৪ হাজার কোটি টাকার বেশি অর্থ বৈধ করার ঘটনাকে ফুলিয়ে-ফাঁপিয়ে দেখানোর একটি প্রচেষ্টা শুরু থেকেই ছিল। শঙ্কা হচ্ছে তিনি অন্যায় এ সুবিধার পক্ষে সেই ঢালটি এখন ব্যবহার করতে চাইছেন, যা কোনোভাবেই কাম্য হতে পারে না। অথচ এর মাধ্যমে সত্যিকারভাবে সরকার কতোটা রাজস্ব ক্ষতির স্বীকার হলো, সেটি কোনোভাবেই বিবেচনায় আনা হচ্ছে না। যেটিকে সৎ ও বৈধ পন্থায় উপার্জনকারী করদাতাদের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করার মাধ্যমে কর ব্যবস্থায় খেলাপির সংস্কৃতি প্রাতিষ্ঠানিকীকরণের পাঁয়তারা বলে মনে করা মোটেই বাহুল্য হবে না।’
ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘আয়কর অধ্যাদেশের আইনি মারপ্যাঁচে থাকা অপ্রদর্শিত আয়ের মোড়কে কালো টাকা সাদা করার অন্যান্য সুযোগও বাতিল করার এখনই সময়। অপ্রদর্শিত অর্থ আর কালো টাকার মধ্যে পার্থক্য যে অতীব ক্ষীণ তা কর্তৃপক্ষের অজানা থাকার কথা নয়। কোনো না কোনো কৌশলে দুর্নীতিবাজদের তোষণের নীতি থেকে বেরিয়ে এসে সরকার দুষ্টের দমন ও শিষ্টের পালনে মনোযোগী হওয়ার মাধ্যমে সাংবিধানিক অঙ্গীকার রক্ষায় এগিয়ে আসবে এমনটাই প্রত্যাশা।’
এইচএস/এমএইচআর/এমকেএইচ