ব্যাটিংই ভুলে গেল দক্ষিণ আফ্রিকা!


প্রকাশিত: ১১:৪৬ এএম, ০৪ ডিসেম্বর ২০১৫

ভারত সফরে এসে ব্যাটিংই ভুলে গেলো দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটসম্যানরা! ভারতীয় স্পিনারদের কোনভাবেই সামলাতে পারছে না হাশিম আমলা, এবি ডি ভিলিয়ার্স, ফ্যাফ ডু প্লেসিস থেকে শুরু জেপি ডুমিনিরমত ব্যাটসম্যানরা। টেস্ট র্যাং কিংয়ে যারা শীর্ষস্থান নিয়ে ভারতে এলো, তারাই কি না একের পর এক ভারতীয় স্পিনারদের সামনে চরম অসহায় হয়ে পড়েছে।

চার টেস্টের সিরিজের মধ্যে ব্যাঙ্গালুরু টেস্টটার একদিন খেলা হওয়ার পর বাকি চারদিন বৃষ্টিতে ভেসে যায়। বাকি দুটিতে জিতে সিরিজ নিজেদের করে নিয়েছে বিরাট কোহলির ভারত। দিল্লির ফিরোজ শাহ কোটলায় তাই সম্মান বাঁচানোর লড়াইয়ে নামতে হলো হাশিম আমলার দক্ষিণ আফ্রিকাকে।

কিন্তু এখানেও ভাগ্যের বদল ঘটাতে পারছে না প্রোটিয়ারা। টস জিতে ব্যাট করতে নেমে প্রথম ইনিংসে দক্ষিণ আফ্রিকার সামনে ৩৩৪ রানের বিশাল স্কোর গড়ে তুলেছে বিরাট কোহলিরা। জবাব দিতে নেমে সেই তথৈবচ অবস্থা দক্ষিণ আফ্রিকার। একের পর এক উইকেট হারাতে হারাতে দিশেহারা অবস্থা প্রোটিয়াদের।

৩৩৪ রান পার হয়ে কোথায় লিড নেবে আমলারা, উল্টো দেখা যাচ্ছে ফলো অনেই পড়তে হচ্ছে তাদেরকে। এক রবিন্দ্র জাদেজার ঘূর্ণির সামনেই মাথা পেতে দিতে হচ্ছে প্রোটিয়াদের। দেখলে মনে হচ্ছে যেন, ব্যাটিং কীভাবে করতে হয়- তা কোনদিনও শেখে নাই প্রোটিয়া ব্যাটসম্যানরা।

টেস্টের দ্বিতীয় দিন মধ্যাহ্ন বিরতির পর ৫ ওভার ব্যাটিং করেই অলআউট হয়ে যায় ভারত। এরপর ব্যাট করতে নামে দক্ষিণ আফ্রিকা এবং দ্বিতীয় দিনের খেলা ৫.৩ ওভার বাকি থাকতেই ১২১ রানে অলআউট হয়ে চরম লজ্জায় ডোবে প্রোটিয়ারা। রবিন্দ্র জাদেজার ঘূর্ণিতেই নাকাল হয়েছে মূলতঃ সফরকারী দক্ষিণ আফ্রিকা। জাদেজা নেন ৫ উইকেট। অশ্বিন নেন ২টি। বাকি তিন উইকেট নেন দুই পেসার উমেষ যাদব (২টি) এবং ইশান্ত শর্মা (১টি)।

৩৩৪ রানের জবাবে ব্যাট করতে নেমে ডিন এলগার আর টেম্বা ভাবুমা মিলে গড়েন ৩৬ রানের জুটি। প্রোটিয়াদের ব্যাটিংয়ে এটাই সবচেয়ে বড় জুটি। উমেষ যাদব প্রথমে আঘাত হানেন প্রোটিয়া ইনিংসের ওপর। ১৭ রান করা ডিন এলগারকে ফিরিয়ে দেন তিনি।

Du-Plasis

এরপরই শুরু হয় জাদেজার ঘূর্ণি ভেলকি। এলগারের পর মাঠে নামেন হাশিম আমলা। মাত্র ৩ রান করার পর আমলার বলে ঋদ্ধিমান সাহার হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন প্রোটিয়া অধিনায়ক। ডি ভিলিয়ার্সই যা একটু প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেছিলেন। এক প্রান্তে যখন ব্যাটসম্যানরা আসা-যাওয়ার মিছিলে সামিল হচ্ছিল, তখন ৭৮ বল মোকাবেলা করে ডি ভিলিয়ার্স খেলেন ৪২ রানের এক ‘সাহসী’ ইনিংস। এছাড়া দুই অংকের ঘর ছুঁয়েছিলেন মাত্র ভাবুমা (২২) আর ড্যান ভিলাস (১১)। বাকিদের রান পাশাপাশি বসালে নিশ্চিত একটি ফোন নাম্বার হয়ে যাবে।

টি২০ এবং ওয়ানডে সিরিজে ভারতের মাটিতে একাধিপত্য দেখিয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকাই। কিন্তু টেস্ট সিরিজে এসে বদলে গেল যেন প্রোটিয়াদের পুরো চেহারা। মোহালির পাঞ্জাব ক্রিকেট এসোসিয়েশন মাঠে প্রথম টেস্ট থেকেই দেখা যাচ্ছে প্রোটিয়া ব্যাটসম্যানদের দুর্দশা। দুই ইনিংসেই তারা অলআউট হয়েছিল ১৮৪ ও ১০৯ রানে। ফলে ১০৮ রানে হারে হাশিম আমলার দল।

দ্বিতীয় টেস্ট ছিল ব্যাঙ্গালুরুর এম চিন্নাস্বামীতে। টস জিতে ব্যাট করতে নেমে ২১৪ রানেই অলআউট হয় দক্ষিণ আফ্রিকা। জবাবে ব্যাট করতে নেমে বিনা উইকেটে ৮০ রান করে প্রথম দিন শেষ করে ভারত। টেস্টের বাকি চারদিন ভেসে যায় বৃষ্টিতে। ফলে খেলা ড্র।

তৃতীয় টেস্ট ছিল নাগপুরের বিদর্ভ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে। এই টেস্টে প্রথম ইনিংসে ৭৯ এবং দ্বিতীয় ইনিংসে ১৮৫ রানে অলআউট হয় প্রোটিয়ারা। ফলে ১২৪ রানে হেরে ভারতের কাছে সিরিজও খুইয়ে ফেলে দক্ষিণ আফ্রিকা। দিল্লিতে শেষ টেস্টেও দেখা যাচে প্রোটিয়া ব্যাটসম্যানদের দৈন্যদশা।

এটা কি শুধুই উইকেটের কারণে নাকি তাদের ব্যাটসম্যানদেরও কোন সমস্যা, নিশ্চিত সিরিজ পোস্ট মর্টেমে সেটা বের হয়ে আসবে।

আইএইচএস/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।