সেমাইয়ে স্বস্তি, চিনিতে বিরক্তি

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০১:১৩ পিএম, ১৩ মে ২০২১

ঈদে আপ্যায়নের অন্যতম অনুষঙ্গ সেমাই। তাই ঈদের আগের দিন দোকানগুলোতে সেমাই-চিনি কিনতে মানুষের ভিড় দেখা গেছে। তবে শেষ সময় বাজারে সেমাইয়ের দাম কিছুটা স্বস্তিদায়ক হলেও চিনির দামে বিরক্তি রয়েছে ক্রেতাদের মধ্যে।

এখন খুচরায় এক কেজি চিনি কিনতে গুনতে হচ্ছে থেকে ৭০ থেকে ৮০ টাকা। পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, গত এক সপ্তাহে চিনির দাম কেজিতে অন্তত পাঁচ টাকা বেড়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে দেখা গেছে, খুচরা বাজারে আমদানি করা সাদা চিনি বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৭২ টাকায়, আর দেশি লাল চিনি (সরকারি চিনিকলের) বিক্রি হচ্ছে ৭৫ থেকে ৮০ টাকায়।

jagonews24

সেগুনবাগিচায় একটি সুপারশপ থেকে সেমাই চিনি কেনার সময় ফরিদ-উল-রেজা নামের এক বেসরকারি কর্মকর্তা বলেন, ‘ঘরে ঘরে ফিরনি, সেমাইসহ নানাজাতের মিষ্টান্ন তৈরির এই উৎসবে চিনির চাহিদা বেড়েছে। সেই সুযোগে দাম বাড়িয়ে বিক্রি হচ্ছে। পবিত্র উৎসবের সময় বিষয়টা খুবই নৈতিক ও বিরক্তিকর। সরকার এসব কঠোরভাবে মনিটরিং করতে পারত।’

যদিও এ বিষয়ে দেশের উন্নতম চিনি সরবরাহকারী এক প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার দাবি, আন্তর্জাতিক বাজার অস্থিতিশীল হওয়ার কারণেই দেশের চীনের বাজারে দাম বেড়েছে। করোনার কারণে আন্তর্জাতিক বাজারের এ অবস্থা। তিনি এও দাবি করেন, মিল পর্যায়ে চিনির দাম ততটা বাড়েনি যতটা খুচরা বাজারে বাড়তি বিক্রি হচ্ছে।

এদিকে সেমাইয়ের দামে খুব একটা হেরফের লক্ষ করা যায়নি। বিক্রি হচ্ছে গত বছরের দামেই। বাজারে গিয়ে দেখা যায়, মুদি দোকানিরা সামনেই সাজিয়ে রেখেছেন বিভিন্ন ব্র্যান্ডের সেমাই। এখানে বিভিন্ন পরিচিত ব্র্যান্ডের প্যাকেটের ২০০ গ্রাম লাচ্ছা বিক্রি হচ্ছে ৩৫ থেকে ৪০ টাকায়। আর ৫০০ গ্রামের স্পেশাল লাচ্ছা সেমাই বিক্রি হচ্ছে ৯০ থেকে মানভেদে ১৪০ টাকা পর্যন্ত।

jagonews24

তবে দোকান ও সুপারশপে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের স্পেশাল সেমাই এবং ভারতের কিছু ব্র্যান্ডের সেমাই ২০০ গ্রামের দাম ১৬০ টাকা থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করতে দেখা গেছে। সেগুলোর দাম নিয়ে যথেষ্ট অভিযোগ রয়েছে ক্রেতাদের মধ্যে।

সেমাইয়ের পাশাপাশি বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ঘি, কিসমিস, বাদাম, মসলা, দারুচিনি, এলাচি, গুঁড়ো ও তরল দুধ বিক্রি হচ্ছে বেশি। বিক্রেতারা বলছেন, ঈদের অন্যান্য কেনাকাটা শেষে এখন তড়িঘড়ি করেই সেমাই কিনছে মানুষ। শেষ সময়ে সেমাই চিনির বাজার বেশ জমে উঠেছে। তবে করোনার প্রভাবে অন্যান্য বছরের সঙ্গে তুলনা করলে বিক্রি বেশ কম।

কারওয়ান বাজারের বড় বড় সেমাইয়ের দোকানেও ক্রেতাদের বেশ ভিড় দেখা গেছে। এখানকার বিক্রেতারা বলেন, পোশাক কেনা শেষে লোকজন এখন সেমাই-চিনি কিনছেন। তবে লকডাউনে অতিথি আপ্যায়ন কম থাকায় সেই প্রভাব বাজারে পড়েছে।

jagonews24

কারওয়ান বাজারে ২০০, ৪০০, ৫০০ ও ৮০০ গ্রামের সেমাইয়ের প্যাকেট বিক্রি হচ্ছে। প্যাকেটজাত সেমাইয়ের পাশাপাশি এখানে খোলা সেমাইও বিক্রি হচ্ছে।

কারওয়ান বাজারের বিভিন্ন দোকানে খোলা চিকন সেমাই বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৫০ থেকে ৬০ টাকা। দুই ধরনের খোলা লাচ্ছা সেমাই বিক্রি হচ্ছে এখানে। একটা সাদা, আরেকটা রঙিন। সেসব সেমাই বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৯০ থেকে ১২০ টাকায়। সেগুলোর কোনোটিকে ডালডায় ভাজা আবার কোনোটিকে ঘিয়ে ভাজা বলে দাবি করছেন দোকানিরা।

অপরদিকে ঈদ উপলক্ষে পোলাওয়ের চালও বেশ বিক্রি হচ্ছে। কারওয়ান বাজারে খোলা চাল মানভেদে প্রতি কেজি ৯০ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া বিক্রি হচ্ছে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের পোলাওয়ের চাল।

এনএইচ/বিএ/এমকেএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।