‘মানুষ গ্রামে চইল্যা গ্যাছে, প্যাসেঞ্জার নাই’
রাজধানীর নীলক্ষেত মোড়ে দাঁড়িয়ে মিরপুরে ফুটপাতের সামনের রাস্তায় দাঁড়িয়ে হাঁকডাক ছাড়ছেন সুপার লিঙ্ক মিনিবাসের হেলপার। ‘অ্যাই আসেন, সায়েন্সল্যাব, কলাবাগান, আসাদগেট, কল্যাণপুর, মিরপুর, মিরপুর...’। তবে তার ডাকে সাড়া দিয়ে যাত্রা উঠতে দেখা যায়নি।
বেশ কয়েক মিনিট দাঁড়িয়ে থাকায় পাশেই ডিডাইডারের সামনে দায়িত্বরত পুলিশ সার্জেন্ট ইশারায় চালক-হেলপার সামনে এগিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেন। এ সময় বাসচালক ওই কর্মকর্তাকে বলেন, ‘স্যার, বাস একদম খালি। দু-চারজন প্যাসেঞ্জার তোলার সুযোগ দেন।’ তবে সার্জেন্ট নারাজ। গাড়ি এগিয়ে নেয়ার নির্দেশ দেন। বাধ্য হয়ে যাত্রী না নিয়ে চলে যান চালক।
বাসচালক সাত্তার মিয়া জাগো নিউজকে বলেন, ‘এমনিতেই করোনায় গাড়িতে অর্ধেক প্যাসেঞ্জার উঠাইতে হয়। আগামীকাল ঈদ হইবো মনে কইরা মানুষ গ্রামে চইল্যা গ্যাছে। গতকাইলের চাইতে আইজ গাড়িতে প্যাসেঞ্জার আরও কম।’
তার কথার সত্যতা যাচাইয়ে আরও বেশ কিছুক্ষণ নীলক্ষেত মোড়ে দাঁড়িয়ে থেকে দেখা যায় মিরপুর রুটে চলাচল করা বেশিরভাগ বাসেই যাত্রী সংখ্যা তুলনামূলক অনেক কম। সর্বোচ্চ ৮-১০ জন যাত্রী নিয়ে অধিকাংশ বাস চলাচল করছে।
আজিমপুর বা নীলক্ষেত মোড় থেকে যারা যাত্রী হিসেবে উঠছেন তাদের বেশিরভাগেরই গন্তব্য গাবতলী বাসস্ট্যান্ড। সবার হাতেই বেশ বড়সড় ব্যাগ ও পোটলা। গাবতলী থেকে তারা স্বজনদের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করতে বিভিন্ন জেলায় রওয়ানা হবেন।
আন্তঃজেলা বাস চলাচল বন্ধ থাকলেও গত দু-তিনদিন ধরে মানুষ নানা উপায়ে পথে পথে যানবাহন পাল্টে গন্তব্যে যাচ্ছেন। দ্বিগুণ ও তিনগুণ ভাড়া গুণলেও স্বজনদের সঙ্গে ঈদ আনন্দ ভাগাভাগি করতে পারবেন এই আনন্দে কষ্ট উপেক্ষা করছেন তারা।
শুধু বাসই নয়, অন্যান্য দিনের তুলনায় আজ ব্যক্তিগত যানবাহনের সংখ্যাও কম। রাস্তার মোড়ে মোড়ে রিকশাচালকরা যাত্রীর আশায় দাঁড়িয়ে থাকলেও বেশিরভাগ রিকশাচালককে দীর্ঘসময় বসে থাকতে দেখা যায়।
নীলক্ষেত মোড়ে কর্তব্যরত একজন পুলিশ সার্জেন্ট বলেন, করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে আন্তঃজেলা পরিবহন বন্ধ রাখা হলেও মানুষ যেকোনো উপায়ে গ্রামে ফিরে যাচ্ছে। এর প্রভাব পড়তে শুরু করেছে রাজধানীতে। মার্কেট এলাকা ছাড়া রাস্তাঘাটে গণপরিবহনসহ অন্যান্য যানবাহনের সংখ্যা তুলনামূলক কম।
এমইউ/এএএইচ/এমকেএইচ