অর্থ সংকটে এইডস প্রতিরোধ কার্যক্রম ব্যাহতের আশঙ্কা


প্রকাশিত: ১২:২০ পিএম, ৩০ নভেম্বর ২০১৫

স্বাস্থ্যখাতে এইচআইভি এইডস প্রতিরোধ কার্যক্রমে বিদেশি আর্থিক সহায়তা কমেছে। কয়েক বছর আগেও গ্লোবাল ফান্ড টু ফাইট অ্যাগেইনস্ট এইডস, টিউবারকিউলোসিস অ্যান্ড ম্যালেরিয়া (জিএফএটিএমএ) এবং ইউএনএআইডিএস বাংলাদেশে এইচআইভি এইডস প্রতিরোধ ও সচেতনতামুলক কার্যক্রমে বিপুল পরিমাণ আর্থিক সহায়তা প্রদান করলেও গত দুই বছর যাবত ইউএনএআইডিএস্ আর্থিক সহায়তা প্রদান সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করে দিয়েছে।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের উপ-পরিচালক ও ন্যাশনাল এইডস এসটিডি প্রোগ্রাম (এনএএসপি) এর প্রোগ্রাম ম্যানেজার ডা. মো. আনিসুর রহমান জাগো নিউজকে জানান, বছর তিনেক আগে গ্লোবাল ফান্ড এইচআইভি এইডস কার্যক্রমে এক বছরের জন্য ১৪মিলিয়ন ডলার আর্থিক সহায়তা দিয়েছে।

অথচ গত দুই বছরে আর্থিক সহায়তা দিয়েছে মাত্র ১২মিলিয়ন অর্থাৎ গড়ে বছরে মাত্র ৬ মিলিয়ন ডলার। বার্ষিক আর্থিক সহায়তা অর্ধেকের নীচে নেমে আসায় এইচআইভি এইডস প্রতিরোধ কার্যক্রম ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

এনএএসপি সূত্রে জানা গেছে, ১৯৮৯ সাল থেকে ২০১৪ সালের নভেম্বর মাস পর্যন্ত দেশে মোট ৩ হাজার ৬৭৪ জন এইচআইভি আক্রান্ত হয়েছেন। ১৯৮৯ সালে কক্সবাজারে দেশের প্রথম এইচআইভি পজেটিভ রোগী পাওয়া যায়। সাড়ে তিন হাজারেরও বেশি সংখ্যক এইচআইভি রোগীর মধ্যে এইডস আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন মোট ৫৩৩ জন। ২০১৪ সালে বাংলাদেশে নতুন এইচআইভিতে আক্রান্ত হয়েছেন ৪৩৩ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৯১ জনের। নতুন সংক্রমিত রোগীদের মধ্যে শতকরা ৩০ ভাগ নারী ও শতকরা ৩১ ভাগ অভিবাসী।

সূত্র জানায়, বাংলাদেশে সাধারণ জনগোষ্ঠীর মধ্যে এইচআইভিতে আক্রান্তের হার এখনও শতকরা ০ (শূন্য) দশমিক ১ ভাগের নীচে, ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর মধ্যে শতকরা ১ ভাগেরও কম। ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর মধ্যে রয়েছে যৌনকর্মী, সমকামী পুরুষ, সূঁচ ও সিরিঞ্জের মাধ্যমে নেশাগ্রহণকারী ও যৌনকর্মীদের সঙ্গে যৌনসম্পর্ক স্থাপনকারী যেকোনো লোক (বিশেষভাবে ট্রাক বাস চালক, তাদের সহকারী ও রিকশাচালক)।

মঙ্গলবার (১ ডিসেম্বর) বিশ্ব এইডস দিবসে রাজধানীর ওসমানি স্মৃতি মিলনায়তনে ২০১৫ সালে এইচআইভিতে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা নতুন পরিসংখ্যান প্রকাশ করা হবে। বিগত কয়েক বছরের মতো এবারও দিবসটির প্রতিপাদ্য শূন্য লক্ষ্যমাত্রা অর্জন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এনএএসপির একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা সোমবার নিউজকে জানান, গত বছরের তুলনায় চলতি বছর এইচআইভিতে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে মোট রোগীর সংখ্যা আগাম জানাতে ওই কর্মকর্তা অস্বীকৃতি জানান।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত বছর সারাদেশে মোট ৬৭ হাজার ৮৭০ জন রোগীর এইচআইভি পরীক্ষা করা হয়।
আরো জানা গেছে, ইউএনএইডস এর অনুমিত পরিসংখ্যান অনুসারে ৮ হাজার ৯০০ ব্যক্তি এইচআইভিতে আক্রান্ত। অথচ এনএএসপির তথ্যমতে এ সংখ্যা অর্ধেকেরও অনেক কম।

এনএএসপির প্রোগ্রাম ম্যানেজার ডা. আনিসুর রহমান বলেন, এইচআইভি রোগীর সঠিক সংখ্যা নির্ধারণে অধিক লোকের এইচআইভি পরীক্ষা করতে হবে। সে ক্ষেত্রে সীমিত অর্থের মধ্যে সরকার সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। সরকারি ১২ ও এনজিওদের মাধ্যমে বিনামূল্যে এইচআইভি এইডস রোগীদের বিনামূল্যে ওষুধ সরবরাহসহ চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।

বিশ্ব এইডস উপলক্ষে সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবে এনএএসপির উদ্যোগে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব বিমান কুমার সাহা, এনএএসপি পরিচালক ডা. শফিকুল আলম, সহকারী পরিচালক ডা. রাইসুল হুদা, ডা. তড়িত কুমার সাহা ও লাইট হাউজ কনসোর্টিয়ামের নির্বাহী পরিচালক হারুন উর রশীদ প্রমুখ।

এমইউ/এসএইচএস/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।