পাকিস্তানি জঙ্গিদের সঙ্গে মামুনুলের সম্পৃক্ততা ছিল : ডিসি হারুন
পাকিস্তানের একটি জঙ্গিগোষ্ঠীর সঙ্গে হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হকের সম্পৃক্ততা ছিল। ২০০৫ সালে তিনি পাকিস্তানে যান। সেখান থেকে পরামর্শ ও প্রশিক্ষণ নিয়ে এসে দেশের বিভিন্ন স্থানে বোমা হামলা, অগ্নিসংযোগ ও সহিংসতার ঘটনা ঘটান। এছাড়া সরকার উৎখাতে মামুনুল হক সব ধরনের পরিকল্পনাও করেন।
রোববার (২৫ এপ্রিল) বিকেলে ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মো. হারুন অর রশীদ রিমান্ডে থাকা মামুনুল হকের বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান।
তিনি বলেন, পাকিস্তানে ৪০ দিন অবস্থান করেন মামুনুল হক। সেখান থেকে জঙ্গি ও উগ্রবাদী মতাদর্শ নিয়ে দেশে ফেরেন তিনি।
মামুনুল হক হেফাজতকে সিঁড়ি হিসেবে ব্যবহার করে রাজনৈতিক ফায়দা লুটতে চেয়েছিলেন বলে জানান হারুন অর রশীদ।
তিনি বলেন, কওমি মাদরাসার ছাত্রদের ব্যবহার করে রাজনৈতিক ফয়দা নেয়ার পায়তারা করছিল মামুনুল। রিমান্ডে শাপলা চত্বরে যাওয়া থেকে শুরু করে অনেক কথার বিষয়ে স্পষ্ট ব্যাখ্যা দিতে পারেনি তিনি। এছাড়াও বিভিন্ন বক্তব্যের বিষয়ে সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা দিতে পারেনি।
ডিসি হারুন বলেন, ভগ্নীপতি নেয়ামত উল্লাহর মাধ্যমে পাকিস্তানি জঙ্গি গোষ্ঠীর সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ হয় মামুনুলের। বঙ্গবন্ধুর খুনি মেজর ডালিম হচ্ছেন মামুনুল হকের আপন ভায়রা ভাই। পাকিস্তানি জঙ্গি গোষ্ঠী, গ্রেনেড হামলার আসামি এবং জামায়াতের শীর্ষ দুই নেতার সঙ্গে যোগাযোগের মাধ্যমে কওমি মাদরাসার ছাত্রদের ব্যবহার করে সরকার উৎখাতের ছক এঁকেছিল মামুনুল হক। তার ভাই মাহফুজুল হকের কোনো মামলায় জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেলে তাকে গ্রেফতারের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, ১৮ এপ্রিল মোহাম্মদপুরের জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদরাসা থেকে মামুনুল হককে গ্রেফতার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
মারধর, হুমকি, ধর্মীয় কাজে ইচ্ছাকৃত গোলযোগ সৃষ্টি, চুরির অভিযোগে মোহাম্মদপুর থানায় করা মামলায় তাকে গ্রেফতার করা হয়।
গোয়েন্দা পুলিশের কর্মকর্তারা জানান, মামুনুল হকের বিরুদ্ধে ২০১৩ সালের ৫ মে হেফাজতের তাণ্ডবের ঘটনায় দায়ের হওয়া একাধিক মামলা রয়েছে। এছাড়া সাম্প্রতিক মোদিবিরোধী আন্দোলনের সময়ও সহিংসতার একাধিক মামলায় তার নাম রয়েছে।
এরআগে ৩ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার রয়েল রিসোর্টে মামুনুল হককে ‘ঘেরাও’ করার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে বলতে শোনা যায়, মামুনুল এক নারীসহ আটক হয়েছেন। যদিও ওই নারীকে নিজের স্ত্রী বলে দাবি করেন মামুনুল হক। ওইদিন সন্ধ্যায় রিসোর্ট থেকে তাকে ছাড়িয়ে স্থানীয় একটি মসজিদে নিয়ে যান হেফাজত নেতাকর্মীরা।
এরপর হেফাজতের নেতাকর্মীরা রিসোর্ট, স্থানীয় আওয়ামী লীগের কার্যালয়, বাড়িঘরে হামলা ও ভাঙচুর এবং যানবাহনে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটায়। এছাড়া তারা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে আগুন জ্বালিয়ে অবরোধ করে।
টিটি/জেডএইচ/এমকেএইচ