যুবলীগ নেতাকে হত্যা চেষ্টা মামলায় ফাঁসানোর অভিযোগ
যশোরে ইউনিয়ন যুবলীগের এক নেতাকে যড়যন্ত্রমূলকভাবে মামলায় ফাঁসানোর অভিযোগ উঠেছে। ইউপি নির্বাচনের সম্ভাব্য প্রার্থী হওয়ায় সদর উপজেলার লেবুতলা ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি নবকুমার ঘোষ ওরফে লব ঘোষের প্রতিপক্ষরা তাকে ষড়যন্ত্রমূলক মামলায় ফাঁসিয়েছে।
শুক্রবার দুপুরে প্রেসক্লাব যশোরে সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি করা হয়েছে। এছাড়াও সুবিচার ও নিরপেক্ষ তদন্তের দাবিতে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনে আবেদন করেছেন নবকুমার ঘোষের সহধর্মিনী সপ্তমী রাণী ঘোষ।
যশোর সদর উপজেলার লেবুতলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি সাধন কুমার ঘোষ লিখিত বক্তব্যে বলেন, ২১ নভেম্বর রাতে ছাত্রলীগের সাবেক নেতা তরিকুল ইসলাম নয়নকে গুলি করে দুর্বৃত্তরা। এই ঘটনায় নবকুমার ঘোষ ওরফে লব ঘোষ ও তার ভাইপো রাজ কুমার এবং এলাকার সাদ্দাম নামে অপর দুইজনের নামে ষড়যন্ত্রমূলক মামলা করা হয়েছে। অথচ নবকুমার গত ৫ নভেম্বর জটিল অপারেশনের জন্য যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হন।
সেখানে ১৭ দিন চিকিৎসা শেষে ২২ নভেম্বর দুপুর আড়াইটায় ছাড়পত্র পান। ওই দিন বিকেলে গ্রামের বাড়ি তেজরোলে ফেরেন। কিন্তু রাত ১২টার দিকে পুলিশ র্যাব ও বিজিবি সদস্যরা বাড়ি থেকে তাকে আটক করে। ওই রাতে পুলিশ লাইনে নিয়ে তাকে নির্যাতন করা হয়। ২৩ নভেম্বর দুপুরে পুলিশি হেফাজতে দ্বিতীয় দফায় নির্যাতন ও মিথ্যা স্বীকারোক্তি আদায়ের চেষ্টা করে ডিবি পুলিশ।
স্বীকারোক্তি আদায়ে ব্যর্থ হয়ে পুলিশ ২৩ নভেম্বর রাতে ৮৭/১২২৯ নম্বর মামলায় আটক দেখিয়ে কোতয়ালি থানায় পাঠায়। পরে পুলিশ আদালতে রিমান্ড আবেদন করে। এরপর আদালত আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেয়।
সংবাদ সম্মেলনে দাবি করা হয়, নবকুমার ঘোষ আগামী ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে সম্ভাব্য প্রার্থী। তার ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন এবং নির্বাচনে যাতে অংশ নিতে না পারে সেজন্য মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়েছে প্রতিপক্ষরা।
সংবাদ সম্মেলনে মানবাধিকার সংগঠন রাইটস যশোরের নির্বাহী পরিচালক বিনয়কৃষ্ণ মল্লিক বলেন, ঘটনার একদিন পর হাসপাতালে ১৭ দিন চিকিৎসা শেষে বাড়ির পর তাকে আটক করা হয়। আটকের একদিন পর উদ্দেশ্যেমূলক নবকুমার ঘোষ ও তার ভাতিজাকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে। এতে স্পষ্ট হয়েছে ষড়যন্ত্রমূলক তাদের ফাঁসানো হয়েছে।
মামলার সাক্ষী মোবারক হোসেন সংবাদ সম্মেলনে বলেন, হামলাকারীরা অন্ধকারের মধ্যে মোটরসাইকেলে পালিয়ে যায়। হামলাকারীদের চিনতে পারিনি। আর আমাকে সাক্ষী করা হয়েছে, সেটাও জানি না।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, লেবুতলা ইউনিয়ন কৃষকলীগের সহ-সভাপতি ইলিয়াস হোসেন, লেবুতলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সন্তোষ কুমার খাঁ, লেবুতলা ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম-আহ্বায়ক প্রদীপ কুমার খাঁ, প্রাক্তন মেম্বর আতর আলী প্রমুখ।
এদিকে, ষড়যন্ত্রমূলক মামলার সুষ্ঠ তদন্তের দাবিতে গত ২৪ নভেম্বর জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান বরাবর আবেদন করেছেন নবকুমার ঘোষের সহধর্মিনী সপ্তমী রাণী ঘোষ।
এ প্রসঙ্গে কোতয়ালি থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শিকদার আক্কাছ আলী বলেন, মামলাটি তদন্ত করা হচ্ছে। তার সম্পৃক্ততা আছে কি না খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আর ঘটনায় জড়িত না থাকলে চার্জশিটে বাদ দেয়া হবে।
মিলন রহমান/এআরএ/এমএস