শফীর মৃত্যু : এজাহারের ৩১ আসামির সঙ্গে তদন্তে যুক্ত হয়েছে ১২
হেফাজতে ইসলামের সাবেক আমির শাহ আহমদ শফীকে হত্যার অভিযোগ এনে গত বছরের ১৭ ডিসেম্বর চট্টগ্রামের একটি আদালতে মামলা দায়ের করেছিলেন তার শ্যালক মাঈন উদ্দিন।
চট্টগ্রামের জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শিপলু কুমার দের আদালতে করা ওই মামলায় আসামি করা হয়েছিল হেফাজতের ৩৬ জন সিনিয়র নেতাকে। পরে আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্তের আদেশ দেন।
জানা গেছে, আদালতে করা ওই মামলার তদন্তের ভার পড়ে পিবিআই কর্মকর্তা মনির হোসেনের ওপর। এরপর পিবিআই তদন্ত দল গত ১২ জানুয়ারি সরেজমিন এজাহারের ঘটনাস্থল হাটহাজারী মাদরাসা পরিদর্শন করে। মামলাটি গোপনে-প্রকাশ্যে অনুসন্ধানসহ ঘটনার বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে বেশ কয়েকজনকে।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ১০৬ দিনের তদন্ত শেষে মামলাটির এজাহারের ৩৬ জনের মধ্যে ৩১ জনের সম্পৃক্ততা উঠে আসে। অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেয়া হয় মামুনুল হকসহ পাঁচজনকে। তবে হেফাজতের বর্তমান আমির জুনায়েদ বাবুনগরীসহ নতুন করে আরও ১২ জনের সম্পৃক্ততা পায় পিবিআই।
সোমবার (১২ এপ্রিল) মোট ৪৩ জনকে অভিযুক্ত করে চট্টগ্রামের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ কায়সারের আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পিবিআই চট্টগ্রাম জেলার পুলিশ সুপার নাজমুল হাসান। তবে প্রতিবেদন দাখিলের বিষয়টি ছাড়া অন্য কোনো বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি তিনি।
পিবিআইয়ের তদন্ত প্রতিবেদনে থাকা ৪৩ আসামিরা হলেন- জুনায়েদ বাবুনগরী, আজিজুল হক ইসলামাবাদী, জাকারিয়া নোমান ফয়েজী, আব্দুল মতিন, মো. শহীদুল্লাহ, মাওলানা শফিউল আলম, শিব্বির আহমেদ, আবু সাঈদ, হোসাইন আহমদ, তাওহীদ, এরফান, মামুন, আমিনুল, মাসুদুর রহমান, জাহাঙ্গীর আলম, নুর মোহাম্মদ, মাওলানা নাছির উদ্দিন মুনির, মাওলানা মীর ইদ্রিস, হাবিব উল্লাহ আজাদী, আহসান উল্লাহ, মো. রিজুয়ান আরমান, হাসানুজ্জামান, মো. এনামুল হাসান ফারুকী, মীর সাজেদ, জাফর আহমদ, মীর জিয়াউদ্দিন, মাওলানা আহম্মদ, মাওলানা মাহমুদ, আসাদুল্লাহ, জুবাইর মাহমুদ, হাফেজ জুনায়েদ আহমেদ, আনোয়ার শাহ, ছাদেক জামিল কামাল, কামরুল ইসলাম কাসেমি, মো. হাসান, ওবায়য়েদুল্লা ওবায়েদ, জুবাইর, মাওলানা মোহাম্মদ, আমিনুল হক, সোহেল চৌধুরী, মবিনুল হক, নাইমুল ইসলাম খান ও হাফেজ সায়েম উল্লাহ।
আদালত সূত্রে আরও জানা গেছে, শফীর শ্যালকের করা ওই মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছিল- ‘আল্লামা শফীকে জোর করে শাহাদাত বরণ করতে বাধ্য করা হয়েছিল। আসামিরা পরস্পর যোগসাজশ করে মৃত্যুর কয়েকদিন আগে থেকে তার খাবার ও ওষুধ বন্ধ করে দিয়েছিল। তার মুখ থেকে অক্সিজেনের মাস্ক খুলে ফেলা হয়েছিল। এভাবে একের পর এক নির্যাতনের মাধ্যমে তাকে জোর করে শাহাদাত বরণ করতে বাধ্য করা হয়েছে।’
মিজানুর রহমান/এমআরআর/এমকেএইচ