মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি বিজ্ঞানী শফিকুজ্জামানের সাফল্য


প্রকাশিত: ০৫:৫০ এএম, ২৬ নভেম্বর ২০১৫

মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশের মর্যাদাকে আরো উচ্চশিখরে তুললেন ড. শফিকুজ্জামান সিদ্দিকী। পেয়েছেন বিজ্ঞানীর সাফল্য। মাত্র ৫ সেকেন্ডে  দুধ, দুগ্ধজাত ও খাদ্যে ফরমালিন এবং ৩০ সেকেন্ডে মেলামিন শনাক্ত করার পদ্ধতি উদ্ভাবনের স্বীকৃতি হিসেবে পেয়েছেন বেস্ট ইন্টার পিনোশিপ প্রজেক্ট অ্যাওয়ার্ড-২০১৫। সম্প্রতি কুয়ালালামপুরের রয়েল চুলান হোটেলে এক জমকালো অনুষ্ঠানের মাধ্যমে পাবনা সাঁথিয়ার সন্তান ড. শফিকুজ্জামান সিদ্দিকীর হাতে এ পুরস্কার তুলে দেন মালয়েশিয়ার হায়ার অ্যাডুকেশন মিনিস্টার দাতু শেরি ইদ্রিস বিন জোসহ।

মাইক্রোইলেকট্রড পোর্টাবল ডিভাইস নামের এই ফরমালিন ও মেলামিন সনাক্ত করার যন্ত্রটি ইতোমধ্যে সারাবিশ্বের বিজ্ঞানীদের নজর কেড়েছে। ফরমালিন ও মেলামিন শনাক্তের এ যন্ত্রটি বাজারে আনার প্রস্তুতি নিয়েছে মালয়েশিয়ার পুন-বি (PUN-B) নামে একটি কোম্পানি। ২০১৬ সালের মধ্যে যন্ত্রটি বাজারে আসবে বলে আশা প্রকাশ করেন ড. শফিকুজ্জামান সিদ্দিকী। তিনি বলেন, মালয়েশিয়ার গভঃ সাইন্স ফান্ড এই প্রজেক্টে বিনিয়োগ করেছে।

উদ্ভাবন সম্পর্কে ড. শফিকুজ্জামান সিদ্দিকী বলেন, ‘আমাদের উদ্ভাবিত ফরমালিন ও মেলামিন শনাক্তকরণ যন্ত্রটি প্রথম অবস্থায় বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠান, রিসার্স অ্যান্ড ইউনিভার্সিটি ও ফুড সিকিউরিটি সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোতে ব্যবহার করা হবে। এর ফলে যন্ত্রটির সুফল সাধারণ ভোক্তার কাছে পৌঁছাবে। পরবর্তীতে তা সরাসরি ভোক্তার কাছে পোঁছানো সম্ভব হবে।’

মাইক্রোইলেকট্রড পোর্টাবল ডিভাইস নামের এই ফরমালিন ও মেলামিন সনাক্ত করার যন্ত্রের উদ্ভাবনে ড. শফিকুজ্জামান সিদ্দিকীর সহকারী হিসেবে কাজ করেছেন তারই ছাত্রী রুবি আলিশা আলাওনি।

এর আগে শফিকুজ্জামান সিদ্দিকী টেকসই কৃষি উন্নয়নে অবদান রাখায় জাপানের টোকিও থেকে প্রসপার ডটনেট-স্কোপাস ইয়াং সায়েন্টিস্ট অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন। এছাড়া একটি আবিষ্কার স্বত্ত্ব (পেটেন্ট) এবং ১৩ গবেষণা পুরস্কার পেয়েছেন তিনি।

ইউনিভার্সিটি পুত্রা মালয়েশিয়া থেকে বর্ষসেরা স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থী হিসেবে বেস্ট পোস্ট গ্র্যাজুয়েট অ্যাওয়ার্ড-২০১১ পান ড. শফিকুজ্জামান। এছাড়া ২০১২ ও ২০১৩ সালে গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে বার্ষিক প্রশংসনীয় সেবা পুরস্কার পেয়েছেন তিনি। ২০০৮ সাল থেকে ইউনিভার্সিটি অব পুত্রা মালয়েশিয়া এবং ইউনিভার্সিটি মালয়েশিয়া সাবাহর গবেষণা ও আবিষ্কার সংক্রান্ত প্রতিযোগিতায় স্বর্ণ, রৌপ্য ও ব্রোঞ্জ পদকও পেয়েছেন ড. শফিকুজ্জামান সিদ্দিকী।

বর্তমানে মালয়েশিয়ার সাবাহ বিশ্ববিদ্যালয়ের জৈব প্রযুক্তি গবেষণা ইনস্টিটিউটের জ্যেষ্ঠ প্রভাষক হিসেবে কর্মরত আছেন তিনি। মলিকিউলার মাইক্রোবায়োলজিতে মাস্টার্স এবং ইলেক্ট্রোকেমিক্যাল বায়োসেন্সর বিষয়ের ওপর ইউনিভার্সিটি পুত্রা মালয়েশিয়া থেকে পিএইচডি অর্জন করেছেন শফিকুজ্জামান সিদ্দিকী।

১৯৭৭ সালে ১৩ ফেব্রুয়ারি পাবনার সাঁথিয়ায় সম্ভ্রান্ত এক মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন ড. শফিকুজ্জামান সিদ্দিকী। ১৯৯১ সালে নড়িয়া গদাই উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি, ১৯৯৩ সালে পাবনা অ্যাডওয়ার্ড কলেজ থেকে এইচএসসি এবং ১৯৯৮ সালে শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কৃষি বিষয়ে বিএসসি ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি।

আরএস/আরআইপি

প্রবাস জীবনের অভিজ্ঞতা, ভ্রমণ, গল্প-আড্ডা, আনন্দ-বেদনা, অনুভূতি, স্বদেশের স্মৃতিচারণ, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক লেখা পাঠাতে পারেন। ছবিসহ লেখা পাঠানোর ঠিকানা - [email protected]