জমি দেখতে গিয়ে মারধরের শিকার সিআইডি কর্মকর্তা, গ্রেফতার ২

রাজধানী মোহাম্মদপুরে জমি দেখতে গেলে সিআইডির এক কর্মকর্তাকে মারধর করে তার অস্ত্র ছিনিয়ে নেয়া হয়েছে। এই অভিযোগে দুজনকে গ্রেফতার করেছে মোহাম্মদপুর থানা পুলিশ।
মঙ্গলবার (২৩ মার্চ) দুপুরে তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মো. হারুন অর রশীদ নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানান।
গ্রেফতাররা হলেন- জামিউল হক মোককাররম ওরফে বুলেট ও হাবিবুর রহমান হাবিব। হাবিবের কাছ থেকে সিআইডির ওই কর্মকর্তার ইস্যুকৃত সরকারি ৭.৬২ এমএম পিস্তল ও ৮ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়।
এর আগে রোববার (২১ মার্চ) দুপুরে মোহাম্মদপুরের বসিলা গ্রিন সিটি হাউজিংয়ে নারায়ণগঞ্জ সিআইডির পরিদর্শক গাজী মিজানুর রহমানকে ধারালো অস্ত্র, লোহার রড ও কাঠের লাঠি দিয়ে এলোপাতাড়ি মারপিট করে জখম করে। এরপর মঙ্গলবার গভীর রাতে মিরপুর ও মোহাম্মদপুরে অভিযান চালিয়ে ওই দুইজনকে গ্রেফতার করা হয়।
তেজগাঁও বিভাগের ডিসি বলেন, মোহাম্মদপুরের বসিলা এলাকায় হাউজিং, চন্দ্রিমা উদ্যানসহ বিভিন্ন হাউজিং সিটিগুলোতে মানুষ জমি কিনে থাকে। কারণ সহজে এসব জমি কেনা যায়। কিন্তু এই সব এলাকায় জমি দখলে নিতে গেলে বা বিক্রি করতে গেলে কঠিন হয়ে যায়।
ঘটনার বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, মোহাম্মদপুর বসিলা গার্ডেন সিটি থেকে নারায়ণগঞ্জ জেলায় কর্মরত সিআইডি কর্মকর্তা মিজানুর রহমান সিআইডি হেডকোয়ার্টারের উদ্দেশ্যে রওনা দেন। পথিমধ্যে বাসার কাছে তার নিজ নামে কেনা মোহাম্মদপুর গ্রিন সিটি হাউজিং-২ এ প্লট দেখতে যান। দুপুর দেড়টার দিকে ওই জমিতে পৌঁছালে আগে থেকে সেখানে দলবদ্ধভাবে অবস্থান করা কিছু লোক তার গতিরোধ করে তাকে ধারালো অস্ত্র, লোহার রড ও কাঠের লাঠি দিয়ে মারপিট শুরু করে।
ডিসি বলেন, আসামিরা মিজানুর রহমানকে মেরে তার ব্যবহৃত সরকারি পিস্তল, মোটরসাইকেল, মোবাইল ফোন, নগদ টাকা ছিনিয়ে নিয়ে চলে যায়। এ ঘটনায় মিজানুরের স্ত্রী অভিযোগ দায়ের করলে মোহাম্মদপুর থানায় মামলা হয়।
প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষীদের কাছ থেকে ঘটনায় জড়িত বেশ কয়েকজনের তথ্য সংগ্রহ করে পুলিশ। পরবর্তীতে তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় মঙ্গলবার গভীর রাতে জামিউল হক মোকাররম ওরফে বুলেটকে মিরপুর থেকে গ্রেফতার করা হয়।
হারুন-অর-রশীদ বলেন, প্রাথমিকভাবে জিজ্ঞাসাবাদে সে নিজে ওই ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে ও জড়িত অন্যদের নাম প্রকাশ করে। পরবর্তীতে তার দেয়া তথ্যমতে ঘটনায় জড়িত হাবিবুর রহমান হাবিবকে মোহাম্মদপুর জাকির হোসেন রোড এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। এ ঘটনায় মোহাম্মদপুর থানায় অস্ত্র আইন মামলা হয়। প্রাথমিকভাবে জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ডিসি হারুন বলেন, এ ঘটনায় আরও সাত-আটজনের নাম আসছে। আমরা তাদের রিমান্ড চাইব আদালতে। রিমান্ডে নেয়া হলে জানা যাবে তারা কার হয়ে কাজ করে। তাদের কাছ থেকে বিস্তারিত তথ্য নিয়ে যেসব ভূমি দস্যুদের নাম আসবে তাদের সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে।
টিটি/জেডএইচ/জিকেএস