‘মুশতাকের মৃত্যুতে কারও গাফিলতি থাকলে বিচার করা উচিত’
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গ্রেফতার হয়ে কারাবন্দি অবস্থায় লেখক মুশতাক আহমেদের মৃত্যুতে দুঃখ প্রকাশ করেছেন মৎস ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম।
তিনি বলেছেন, ‘মুশতাককে জেলের ভেতর কুপিয়ে কিংবা গুলি করে মারা হয়নি। তবুও এটা খতিয়ে দেখা দরকার। এতে যদি কারও গাফিলতি বা ত্রুটি থাকে, তাহলে তার তদন্ত করে বিচার করা দরকার।’
শনিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে সেন্টার ফর গর্ভন্যান্স স্টাডিজ (সিজিএস) আয়োজিত এক ভার্চ্যুয়াল সভায় তিনি এ কথা বলেন।
রেজাউল করিম বলেন, ‘একটি মামলায় আসামি থাকা অবস্থায় মুশতাক জেলের ভেতরে মারা গেছেন। এরকম কিন্তু অনেক মৃত্যু হচ্ছে। মুশতাকের মৃত্যু কোনভাবেই কাম্য নয়। কিন্তু অনেক আসামি কিন্তু বিচারাধীন অবস্থায় অথবা কারও দন্ড হয়ে গেছে- এমন অবস্থায় জেলের ভেতর মারা গেছেন। এটা এমন না যে, জেলের ভেতরে তাকে কুপিয়ে কিংবা গুলি করে মারা হয়েছে।’
মন্ত্রী আরও বলেন, ‘মুশতাকের মৃত্যু অনভিতপ্রেত। আমি নিজেও দুঃখিত। আমি মনে করি- এটা খতিয়ে দেখা দরকার। এটা যদি কারও গাফিলতি বা ত্রুটির কারণে হয়ে থাকে, তাহলে তার তদন্ত করে বিচার করা দরকার। কেননা আমরা বিচারহীনতার সংস্কৃতি থেকে বের হয়ে আসতে চাই।’
তিনি আরও বলেন, ‘এটা কিন্তু সেই বাংলাদেশ, যেখানে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের চার সংগঠককে রাষ্ট্রের নিরাপত্তা হেফাজত জেলখানায় থাকা অবস্থায় ১৯৭৫ সনের ৩ নভেম্বর বর্বরোচিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। তখন কিন্তু আমরা অনেক জ্ঞানীদের বিবেকদের তালাবদ্ধ করে রেখেছে। বিবেকের তখন কোনো সাড়া শব্দ ছিল না। বরং কিছু কিছু জ্ঞানপাপীদের উচ্ছ্বাস দেখেছি।’
যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় স্টেট ইউনিভার্সিটির রাজনীতি ও সরকার বিভাগের ডিস্টিংগুইসড প্রফেসর আলী রিয়াজ বলেন, বাংলাদেশে অপঘাতে মৃত্যু হয়। কিন্তু একটা বিচারিক প্রক্রিয়ার মধ্যে রাষ্ট্রের হেফাজতে থাকার সময় আমরা দেখলাম একজন লেখকের মৃত্যু হয়েছে।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিকের আইনের শিক্ষক ড. শাহদীন মালিক বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তার মতো আইন দুনিয়াতে নেই। বাকস্বাধীনতা খর্বকারী এমন আইন কোথায় হয়নি। আমরাই একমাত্র দেশ যারা এই আইনটা করেছি।
তিনি বলেন, গণমাধ্যমের সংখ্যা দিয়ে বাকস্বাধীনতা বিচার হয় না। কিন্তু এখন গণমাধ্যমের সংখ্যা দিয়ে বাকস্বাধীনতা পরিমাপ করা হচ্ছে। এটা একটা উদ্ভট দেশের উদ্ভট আইন। এটাকে অবিলম্বে বাতিল করতে হবে।
এসএম/এএএইচ/এমকেএইচ