‘প্রেম-ভালোবাসা-উৎসব নেই, ফুল বিক্রিতেও ভাটা’
‘মানুষ ফুল কি কিনব, করোনায় মনে শান্তি নাই। প্রেম ভালবাসা উৎসবও নাই। ফুলের কদরও কম।’ রাজধানী শাহবাগে শিশুপার্ক সংলগ্ন ফুলের আড়তের সামনে দাঁড়িয়ে এভাবে হতাশার কথা জানাচ্ছিলেন বিক্রেতা শাহ আলম।
আড়ত থেকে ফুল কিনতে এসেছিলেন শাহ আলম। তিনি ফুল বিক্রি করেন খিলগাঁওয়ের তালতলা এলাকায়। বিক্রিতে ভাটা তাই আড়ত থেকে কিনছেনও কম। শাহ আলম বলেন, গতবছর গোলাপসহ এক হাজার ২০০ পিস ফুল কিনেছিলাম। সব বিক্রিও করেছিলাম। কিন্তু এবার ফুল বিক্রি কম। গত দুইদিন বাজারের পরিস্থিতি দেখে আজ মাত্র ২০০ পিস ফুল নিয়ে যাচ্ছি। বেশি নিলে লোকসান গুণতে হতে পারে।
পাশেই গোলাপের তোড়া উঁচিয়ে ধরে এক পাইকারি বিক্রেতা চিৎকার করে বলছিলেন, ‘ভালোবাসা, হায়রে ভালোবাসা রে!’ তিনি বাগান থেকে গোলাপ নিয়ে আড়তে এসেছিলেন বিক্রি করতে। তবে গোলাপের ভালো দাম পাচ্ছেন না বলে জানান।
মোল্লা নামে পরিচিত ওই ফুল বিক্রেতা বলেন, যে দামে ফুল কিনেছি, সেই হিসাবে দাম নেই। ৫০০ টাকার এক মুঠো গোলাপ ৩০০ টাকা বিক্রি করতে হচ্ছে।
তবে সবাইকে গোলাপ কেনার অনুরোধ করে তিনি বলেন, ভালোবাসার দিনে যে গোলাপ ফুল কিনবে, সেই জিতবে। ফুল কিনে লস নেই।
পাইকারি ফুল বিক্রেতা আনোয়ার হোসেন বলেন, বাজারে এবার চাহিদার তুলনায় সরবরাহ বেশি। আবারও ক্রেতাও কম। কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকায় সেভাবে ফুলের বিক্রি নেই। এজন্য ফুলের দর পড়ে গেছে।
তিনি জানান, গতকালও এক হাজার গোলাপ নয়শ' থেকে হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছে। আজকে সেগুলো পাঁচশ' থেকে ছয়শ' টাকাও বিক্রি করা সম্ভব হচ্ছে না।
বিক্রেতা সালমা বেগম বলেন, করোনার কারণে কোনো ব্যবসায় তো ভাল চলছে না। ভালোবাসা দিবস নিয়েও মানুষের মাঝে আগ্রহ কম। বসন্ত উৎসবও সেভাবে জমে ওঠেনি। অন্যান্য বছরের তুলনায় মানুষের হাতে তাজা ফুল কমই দেখা গেছে।
তবে রোববার (১৪ ফেব্রুয়ারি) ভোরে ফুল বিক্রেতাদের সঙ্গে আলাপকালে বিক্রি নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া পাওয়া গেছে। তবে বিক্রেতারা বলছেন- গতকাল শনিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) বিক্রি ভালো হয়েছে। আজ সকাল থেকে তুলনামূলক বিক্রি কম। তবে কেউ কেউ আবার বেচাকেনা ভালো।
এমইউ/এএএইচ/এএসএম