দায়সারা হরতাল করবে জামায়াত!


প্রকাশিত: ০৪:৫৪ পিএম, ১৮ নভেম্বর ২০১৫

জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের মানবতাবিরোধী অপরাধে  মৃত্যুদণ্ডাদেশের রিভিউ আবেদন খারিজের প্রতিবাদে ডাকা বৃহস্পতিবারের সারাদেশে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল দায়সারাভাবেই পালন করার পরিকল্পনা করেছে দলটি।

জামায়াত সূত্রমতে, বুধবার রাতে পল্টনের একটি ভবনে দলটির নীতি নির্ধারণী ফোরাম কর্মপরিষদ সদ্যসদের কয়েকজন এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। হরতালে যেন নেতাকর্মীদের ক্ষয়ক্ষতি না হয় এ জন্য সারাদেশের তৃণমূল পর্যায়ে নির্দেশনাও দেয়া হয়েছে। নির্দেশনায় আরও বলা হয়েছে, নিজেদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা মেনেই যেন হরতাল পালন করা হয়।

এর আগে দলটির কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির মাওলানা দেলওয়ার হোসাইন সাঈদীর রায়ের পরবর্তীতে সারাদেশে যে পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে তা এখনও কাটিয়ে উঠতে পারেনি, এমন মন্তব্য খোদ জামায়াত নেতা-কর্মীদের।

তাদের মতে, সরকার রাজনৈতিকভাবে তাদের নেতাদের হত্যা করছে। তাই হরতাল কিংবা গণতান্ত্রিক আন্দোলন করে তাদের নেতাদের মুক্ত করা যাবে না। এ জন্য তৃণমূল থেকেই নেতাকর্মীরা রাজপথে আন্দোলনে তেমন একটা আগ্রহী নন।

একদিকে, তাজিয়া মিছিলে হামলা, বিদেশি হত্যকাণ্ডসহ বিভিন্ন ইস্যুতে প্রতিদিনই শতাধিক নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। এ মুহূর্তে হরতালে সহিংসতা করে আরও রোষানলে পড়তে নারাজ তৃণমূল থেকে কেন্দ্রীয় পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।

অন্যদিকে, দলটির মধ্যে ইতোমধ্যেই দেখা দিয়েছে দুই ভাগ, এক ভাগ যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে অভিযুক্তদের বাদ দিয়ে সম্পূর্ণ নতুন নেতৃত্বের পক্ষে। আর অন্যভাগ পুরানো নেতৃত্বকেই দলটির ইমেজ মনে করছে।

দলটির নেতারা মনে করছেন, সাঈদীর রায় পরবর্তী যে আন্দোলন হয়েছে সে আন্দোলন করার অবস্থা দলটির বর্তমান সময়ে নেই। দেশ-বিদেশে জঙ্গিবাদের অভিযোগে যে ইমেজ সংকটে পড়েছে তার থেকে উত্তোরণের জন্য এ হরতালকে কাজে লাগাবে তারা। দায়সারা হরতাল পালন করে দলটি প্রমান করতে চায় তারা সহিংস এবং জঙ্গি নয়।

এছাড়া বৃহস্পতিবারের হরতালকে ঘিরে জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীদের মাঝেও দেখা দিয়েছে গ্রেফতার আতঙ্ক। নোয়াখালী জেলার জামায়াতের নেতা আবদুল রহিম বুধবার রাত ৯টা ৪৫ মিনিটে এ প্রতিবেদককে তাদের গ্রেফতার আতঙ্কেক কথা বলেন। তিনি বলেন, পুলিশ সন্ধ্যার পর থেকেই তল্লাশি শুরু করেছে। রাত কোথায় কাটাবে এ নিয়েই তাকে চিন্তিত মনে হয়েছে।

যদিও জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরীর সহকারি সেক্রেটারি মুহাম্মদ সেলিম উদ্দীন বলেছেন, সরকার রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতেই একের পর এক তাদের নেতাদের হত্যার ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছে। সে ষড়যন্ত্রের ধারাবাহিকতায় সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক সফল মন্ত্রী আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদকে হত্যা করার ষড়যন্ত্র চলছে। কিন্তু জনগণ সরকারের সে ষড়যন্ত্র মেনে নেবে না।

হরতাল আহ্বানের বিবৃতিতে দলটির ভারপ্রাপ্ত আমীর মকবুল আহম্মেদ হরতাল পালনের জন্য সবাইকে আহ্বান জানিয়েছেন। পল্টনে বৈঠক প্রসঙ্গে জানার জন্য দলটির একাধিন নেতার মোবাইল নম্বরে ফোন করা হলে সবকটিই বন্ধ পাওয়া যায়।

এএম/বিএ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।