নতুন চট্টগ্রাম সিটি গড়তে সবার সহযোগিতা চাইলেন রেজাউল
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) মেয়র হিসেবে নির্বাচিত হয়ে আবারও মাদক-সন্ত্রাস ও জুয়ার বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানের কথা জানালেন বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ মো. রেজাউল করিম চৌধুরী।
বুধবার (২৭ জানুয়ারি) অনুষ্ঠিত চসিক নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী হিসেবে নৌকা প্রতীক নিয়ে তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ধানের শীষের ডা. শাহাদাৎ হোসেনকে ৩ লাখ ১৬ হাজার ৭৬৯ ভোটের ব্যবধানে হারিয়ে আগামী পাঁচ বছরের জন্য চট্টগ্রামের নগর পিতা নির্বাচিত হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (২৮ জানুয়ারি) সকালে বহদ্দারহাটে অবস্থিত রেজাউল করিম চৌধুরীর বাসভবনের সামনে মহানগর আওয়ামী লীগের প্রধান নির্বাচনী কার্যালয়ে উপস্থিত নেতাকর্মী ও গণমাধ্যমের প্রতিনিধিদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করে সবাইকে ধন্যবাদ জানান। এ সময় তিনি তার পক্ষ থেকে চট্টগ্রাম মহানগরীর সব নাগরিকের প্রতি শুভেচ্ছা বার্তা ও ধন্যবাদ পৌঁছে দিতে সংবাদ মাধ্যমের প্রতি আহ্বান জানান।
গণমাধ্যমে ব্রিফিংকালে তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানসহ পঁচাত্তরের ১৫ আগস্টে ঘাতকের বুলেটে নির্মমভাবে নিহত বঙ্গবন্ধুর পরিবার-পরিজন, জেলহত্যার শিকার জাতীয় চারনেতা ও মহান মুক্তিযুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারী বীর মুক্তিযোদ্ধা, বীরাঙ্গনা ও লাখো শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান এবং মেয়র পদে মনোনয়ন দিয়ে চট্টগ্রামের মানুষের কল্যাণে ব্যাপক পরিসরে কাজ করার সুযোগ দেয়ায় আওয়ামী লীগের সভাপতি বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা ও মনোনয়ন বোর্ডের প্রতি কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানিয়ে উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় আস্থার প্রতিফলন ঘটানোর প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
চট্টগ্রাম মহানগরীর নানা সমস্যা সমাধানের ব্যাপারে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সমন্বিত প্রয়াসে জলাবদ্ধতামুক্ত, যানজটমুক্ত, মাদক-সন্ত্রাস ও জুয়ামুক্ত, নিরাপদ, পরিচ্ছন্ন, পরিবেশবান্ধব, পরিকল্পিত, সমৃদ্ধ, পর্যটন রাজধানী হিসেবে চট্টগ্রামকে গড়ে তুলতে নিরলসভাবে কাজ করার কথা বলেন এবং এ সময় তিনি এ কাজে সর্বমহলের সহযোগিতা কামনা করেন। স্বচ্ছতার সঙ্গে সিটি করপোরেশনের কাজকে শতভাগ ডিজিটালাইজেশনের উদ্যোগ নেয়ার কথাও বলেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, নির্বাচনী ইশতেহারকে সামনে রেখেই এর পূর্ণ বাস্তবায়নে আমি সর্বদা আপনাদেরকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করে যাব।
দীর্ঘদিন লাগাতার প্রচারণায় ক্লান্ত নেতাকর্মীরা ভোরবেলা বিজয়ের বার্তা নিয়ে ঘরে গেলেও সকাল দশটা থেকে আবারও দফায় দফায় নতুন মেয়রের বাসার সামনে কর্মী-সমর্থকদের ঢল নামতে থাকে। এ সময় তারা প্রিয় প্রার্থীর বিজয়ে উল্লাস প্রকাশ করেন এবং তাকে ফুলে ফুলে অভিষিক্ত করেন।
অভিনন্দন জানাতে আসা নেতাকর্মী ও শুভানুধ্যায়ীদের প্রতি ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, অভিনন্দন নয় সহযোগিতার হাত নিয়ে পাশে থাকা চাই। নেতাকর্মীদের উদ্দেশে রাখা বক্তব্যে তিনি বলেন, বিশাল জনগোষ্ঠী নিয়ে বিস্তীর্ণ চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচন করতে গিয়ে কিছু অনভিপ্রেত ঘটনা হয়তো ঘটে যায়। কোনো প্রকার উস্কানিতে উত্যক্ত না হয়ে ধৈর্যধারণ করে নির্বাচন কার্যক্রম পরিচালনার জন্য সবাইকে ধন্যবাদ। আগামীতেও অসীম ধৈর্য নিয়ে নির্বাচনী ইশতেহার বাস্তবায়নে নেতাকর্মীরা পাশে থাকবেন বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাবেক মেয়র আ জ ম নাসির উদ্দিন, সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট ইব্রাহিম হোসেন বাবুল, আলতাফ হোসেন বাচ্চু, সাংগঠনিক সম্পাদক নোমান আল মাহমুদ, শফিক আদনান, প্রচার সম্পাদক শফিকুল ইসলাম ফারুক, ক্রীড়া সম্পাদক দিদারুল আলম চৌধুরী, দফতর সম্পাদক শমসের আলী, সাংস্কৃতিক সম্পাদক আবু তাহের, তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক চন্দন ধর, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক মশিউর রহমানসহ মহানগর, থানা, ওয়ার্ড ও ইউনিট আওয়ামী লীগসহ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়াও সারাদিন বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে নবনির্বাচিত কাউন্সিলরা পৃথক পৃথকভাবে নবনির্বাচিত মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে শুভেচ্ছা বিনিময় ও অভিনন্দন জানান।
এআরএ