৭ বছরেও শেষ হয়নি বেরোবির স্নাতকোত্তর
স্নাতক ডিগ্রি শেষ করলেও ৭ বছরেও শেষ হয়নি বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) প্রথম ছয়টি বিভাগের স্নাতকোত্তর।
স্নাতকোত্তর ডিগ্রির নীতিমালা প্রণয়ন, শিক্ষকদের উদাসীনতা, শিক্ষার্থীদের প্রতি বিভাগের শিক্ষকদের অমনোযোগী, ক্লাস-পরীক্ষা নেওয়ার ব্যাপারে অনীহা, পরীক্ষার খাতা মূল্যায়নে দীর্ঘসূত্রিতাসহ বিভিন্ন কারণে সেশনজটের কবলে পড়েছে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) প্রথম ছয়টি বিভাগের শিক্ষার্থীরা।
২০০৮ সালের ১২ অক্টোবর প্রতিষ্ঠিত হয় বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়। ২০০৮-০৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয় ২০০৯ সালের ৮ এপ্রিল। শুরুতে বিভাগ ছিল ছয়টি। সেশনজটে পড়ে চার বছরের স্নাতক কোর্স ছয় থেকে সাত বছর এবং এক বছরের স্নাতকোত্তর কোর্স দুই থেকে তিন বছরেও শেষ করতে পারছেন না তারা।
বিশ্ববিদ্যালয়টির ২০০৮-০৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের স্নাতক সম্মান বর্ষের ২০১২ সালের ডিসেম্বরে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও এতে প্রথম ব্যাচের অনেক বিভাগের সময় লেগেছে চলতি বছর র্পযন্ত।
সেশনজটের কারণে প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থীরা জটিল সব সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন প্রতিনিয়ত। সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন চাকরির আবেদন এবং বিদেশে উচ্চশিক্ষা নিতে আবেদনসহ বিভিন্ন স্কলারশিপের আবেদন করতে পারছেন না তারা।
প্রথম ব্যাচের শিক্ষার্থীরা জাগো নিউজকে অভিযোগ করে জানান, তাদের সঙ্গে অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগে আবেদন করতে পারলেও তারা পারছেন না।
সন্তানকে প্রতিষ্ঠিত করার স্বপ্ন যারা দেখেন, সেসব অভিভাবক তাদের সন্তানদের ভর্তি করিয়ে এখন হতাশায় ভুগছেন।
জাগো নিউজের অনুসন্ধানে জানা যায়, বর্তমানে বিজনেজ স্টাডিজ অনুষদভুক্ত অ্যাকাউন্টিং এবং মার্কেটিং বিভাগে রয়েছে ৭টি বিভাগ। যার মধ্যে প্রথম বিভাগসহ স্নাতকোত্তরে রয়েছে তিনটি এবং দুটি করে ব্যাচ। কলা অনুষদভুক্ত বাংলা ও ইংরেজি বিভাগ, সামাজিক অনুষদভুক্ত অর্থনীতি বিভাগ, বিজ্ঞান অনুষদভুক্ত গণিত বিভাগের স্নাতকোত্তর চূড়ান্ত পরীক্ষা হতে চলতি বছর বেশি সময় লাগবে বলেও জানা গেছে। অপরদিকে কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের স্নাতক শেষ হলেও স্নাতকোত্তর চালু না হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয় ছেড়ে অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতকোত্তর সম্পূর্ণ করছে বিভাগটির সব শিক্ষার্থী।
ফলাফল প্রকাশের বিলম্বের ব্যাপারে জানতে চাইলে বিজনেজ স্টাডিজ অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মতিউর রহমান জানান, বিভাগ দুটি থেকে চূড়ান্ত ফলাফল পাঠাতে বিলম্ব হচ্ছে বলেই স্নাতকোত্তরের ফলপ্রকাশে বিলম্ব হচ্ছে।
এ বিষয়ে যোগাযোগ করলে অ্যাকাউন্টিং বিভাগের বিভাগীয় প্রধান আপেল মাহমুদ এবং মার্কেটিং বিভাগের বিভাগীয় প্রধান শেখ মাজেদুল হক দ্রুতই ফল প্রকাশ হবে বলে জানান। যদিও মার্কেটিং বিভাগের ফলাফল এখনো পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তর পৌঁছেনি বলে জানা গেছে।
সেশনজটের কারণ জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ কে এম নূর-উন-নবী জাগো নিউজকে বলেন, নানামুখী আন্দোলনে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার পরিবেশ ব্যহত হয়েছিল। শিক্ষার্থীরা এখন সচেতন সুতরাং দ্রুতই সেশনজটের সমাধান হবে।
এমএএস/পিআর