দলীয় প্রতীকে স্থানীয় নির্বাচনে তৃণমূলের রাজনীতিও ধ্বংস হচ্ছে

সায়েম সাবু
সায়েম সাবু সায়েম সাবু , জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৫:২৬ পিএম, ২৬ জানুয়ারি ২০২১

স্থানীয় সরকার নির্বাচন দলীয় প্রতীকে আয়োজন আশীর্বাদের চেয়ে অভিশাপে পরিণত হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন নির্বাচন বিশেষজ্ঞ এবং সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার। তিনি বলেছেন, সরকারদলীয় রাজনৈতিক প্রভাব সর্বত্রই। তাদের মনোনীত প্রার্থীর সামনে কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী আর দাঁড়াতেই পারছে না।

পৌরসভা , চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনসহ চলমান স্থানীয় সরকার নির্বাচন প্রসঙ্গে জাগো নিউজের সঙ্গে আলাপচারিতায় ড. বদিউল আলম এ কথা বলেন। এসময় রাজনীতি, গণতন্ত্র নিয়েও মতামত ব্যক্ত করেন সুজন সম্পাদক।

স্থানীয় সরকার ব্যবস্থায় প্রতীকের ব্যবহার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, নির্বাচনে যা হচ্ছে, সে বিষয়ে আগেই শঙ্কাবোধ করেছিলাম। ২০১৫ সালে যখন মন্ত্রিসভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়, তখন আমরা এর বিরোধিতা করেছিলাম। সিদ্ধান্তের পক্ষেও ছিলেন অনেকে। তাদের যুক্তি ছিল, প্রতীকের মধ্য দিয়ে স্থানীয় সরকার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে তৃণমূলের রাজনীতি শক্তিশালী এবং সুসংগঠিত হবে। গণতন্ত্র শক্তিশালী হবে। বাস্তবে হয়েছে তার উল্টো। বরং এর মধ্য দিয়ে তৃণমূলের রাজনীতিও ধ্বংস করা হচ্ছে। মানুষ এখানেও আর ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারছে না। কারণ ভোট সুষ্ঠু বা প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক করার জন্য সদিচ্ছা নেই সরকারের। নির্বাচন কমিশনও সে সক্ষমতা অর্জন করেনি।

এই বিশ্লেষক বলেন, সরকারদলীয় রাজনৈতিক প্রভাব সর্বত্রই। তাদের মনোনীত প্রার্থীর সামনে কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী আর দাঁড়াতেই পারছে না। সরকার দলের মনোনীত প্রার্থীকে জেতানোর জন্য নির্বাচন কমিশন-প্রশাসন নিজেই দায়িত্ব নিচ্ছে বলে অসংখ্য অভিযোগ আসছে। এসব অভিযোগের ভিত্তিতে কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থা নেয় না। এটি একটি ট্রেন্ড হয়ে যাচ্ছে। ভয়ের কথা ঠিক এখানেই।

দলীয় প্রতীকের কারণে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে কম প্রতিযোগী অংশ নিচ্ছেন উল্লেখ করে ড. বদিউল আলম বলেন, এতে করে কম যোগ্যরা সুযোগ পাচ্ছেন। যার পেশীশক্তি বেশি, অর্থ বেশি— সেই টিকে থাকতে পারছে। মনোনয়ন নিয়ে ব্যাপক বাণিজ্য হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। অপেক্ষকৃত ভালো প্রার্থীরা নির্বাচন থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন। একই কারণে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে ভোটারাও। এটি তো সামগ্রিক নির্বাচন ব্যবস্থার জন্য ক্ষতি হলো।

‘মাঠে বিরোধী দল নেই। অন্য দলের পক্ষে জনবল কাজ করতে পারছে না। তবু মারামারি, হিংসা, খুন হচ্ছে। সরকারি দল নিজেরাই হিংসায় পুড়ে মরছে। এটি সামনে আরও ভয়াবহ হবে। কারণ রাজনীতিই এখন দুর্বৃত্তায়নের দখলে। কোনোভাবে টিকে থাকতে পারলে ফায়দা হাসিল করা যাবে। এ কারণে সরকারি দলের প্রতীক নিতে সবাই মরিয়া’— যোগ করেন সুজন সম্পাদক।

এএসএস/এইচএ/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।