বাংলাদেশের চেয়ে যুক্তরাষ্ট্রে ধর্ষণ-বিচারবহির্ভূত হত্যা বেশি ঘটে
বাংলাদেশের চেয়ে যুক্তরাষ্ট্রে ধর্ষণ ও বিচারবহির্ভূত হত্যার ঘটনা বেশি ঘটে বলে মনে করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশের চেয়ে যুক্তরাষ্ট্রে এ ধরনের ঘটনা বেশি ঘটলেও, বাংলাদেশকেই নেতিবাচকভাবে বেশি উপস্থাপন করা হয়।
রোববার (২৪ জানুয়ারি) বিকেলে আমেরিকার চেম্বার অ্যামচাম আয়োজিত এক ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে তিনি এ কথা বলেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম প্রতিদিন ধর্ষণ, মানবাধিকার লঙ্ঘনসহ বিভিন্ন খবর প্রকাশ করছে। মানবাধিকার সংগঠন অধিকারের তথ্যমতে, বাংলাদেশে ২০১৯ ও ২০২০ সালে যথাক্রমে মাত্র ১৮ ও ১৭ জন মানুষ বিচারবহির্ভূত হত্যার শিকার হয়েছে। একই সময় আমেরিকায় ৯৯৬ জন ও ১০০৪ জন পুলিশের হাতে বিচারবহির্ভূত হত্যার শিকার হয়েছে।
এদিকে বাংলাদেশে ২০২০ সালে ৯ হাজার ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। অপরদিকে আমেরিকায় ৮৭ হাজার ৭৮৫টি ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। তাদের (আমেরিকা) এ ধরনের ঘটনা আমাদের চেয়ে অনেক বেশি। কিন্তু গুগল সার্চ করলে দেখা যায়, বাংলাদেশকেই নেতিবাচকভাবে বেশি উপস্থাপন করা হয়।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের ৪০ লাখ নারী গ্রিন ফ্যাক্টরিতে কাজ করেন। নারী ও পুরুষ আইটি সেক্টরে কাজ করছেন। এ ধরনের বিষয় নিয়ে ভালো শিরোনাম আমাদের দেশের গণমাধ্যমে হয় না। উল্টো দেখা যায়, গণমাধ্যমে শুধু নেতিবাচক বিষয়গুলোই আসে।
আব্দুল মোমেন বলেন, সাংবাদিকরা মূলত নৈতিকতা ও সঠিক তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে সংবাদ পরিবেশন করেন। সাংবাদিকতা শুধু সংবাদ পরিবেশন করার জন্য নয়, বরং গণতন্ত্রের জন্যও প্রয়োজনীয়। সাংবাদিকতার প্রথম শর্ত হলো সত্য, সাংবাদিকতা হতে হবে স্বচ্ছ ও অনুসন্ধানমূলক। নিজেরা নিজেরা গবেষণা করে সংবাদ প্রকাশ না করাই ভালো। সাংবাদিকরা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টিতে ভূমিকা রাখে। এবার করোনা মহামারিতেও মানুষকে তথ্য-উপাত্ত দিয়ে তারা সচেতন করেছে ও সঙ্কটে পাশে থেকেছেন। প্রযুক্তিগত সাংবাদিকতা নতুন করে আধুনিক সাংবাদিকতার সুযোগ করে দিয়েছে। সাংবাদিকদের সমাজের স্বার্থ মাথায় রেখে কাজ করতে হবে।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশ সফলভাবে করোনা মোকাবিলা করতে পেরেছে। বাংলাদেশ জিডিপিসহ অনেক ক্ষেত্রে করোনার মধ্যেও এগিয়ে গেছে। আমি আশা করি, সাংবাদিকরা সরকারের ভালো কাজগুলো মানুষের সামনে তুলে ধরবেন। দেশে বর্তমানে অনেকেই তথ্য-প্রযুক্তিখাতে কাজ করে অর্থনৈতিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখছেন। তাদের তুলে ধরতে হবে। বিশ্বনেতাদের বিশ্বব্যাপী সংঘাত-সহিংসতার বিরুদ্ধে দাঁড়াতে হবে। পৃথিবীর আর কোথাও রোহিঙ্গাদের মতো দুর্দশা দেখতে চাই না।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আশা প্রকাশ করে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি পণ্য ও সেবা রফতানির ক্ষেত্রে অ্যামচাম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। বাংলাদেশ সব সামাজিক সূচকে এগিয়ে চলেছে। বর্তমান সরকার গৃহ নিয়ে গৃহহীনদের পাশে দাঁড়িয়েছে। ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিতে সরকার কাজ করছে ও পৌঁছে দিচ্ছে। অনুষ্ঠানে জো বাইডেনের নেতৃত্বে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রশাসনকে শুভেচ্ছা জানান তিনি।
বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত রবার্ট আর্ল মিলার জানান, বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের আগামীর সম্পর্ক আরও দৃঢ় ও বিস্তৃত হবে। যুক্তরাষ্ট্র সব সময় বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যমের পাশে রয়েছে বলেও জানান তিনি।
আইএইচআর/এমএসএইচ/এমএস