গাজীপুরে শিশু হত্যার দায়ে বাবার যাবজ্জীবন
গাজীপুরে তিন মাসের শিশু কন্যাকে হত্যার দায়ে বাবাকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
সোমবার দুপুরে গাজীপুরের জেলা ও দায়রা জজ একেএম এনামুল হক এ রায় প্রদান করেন। একই সঙ্গে আসামিকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো ১ মাসের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
দণ্ডপ্রাপ্ত আসামির নাম মো. সোহেল রানা (৩২)। তিনি গাজীপুর মহানগরীর লাঠিভাঙ্গা গ্রামের হাফিজুর রহমানের ছেলে।
গাজীপুর জজকোর্টের পিপি অ্যাডভোকেট হারিছ উদ্দিন আহমদ জানান, ২০১৪ সালের ১৪ অক্টোবর সোহেল রানা তার স্ত্রী রাবেয়া আক্তার মহানগরীর কালাকৈর গ্রামে নানার বাড়ি বেড়াতে যায়। এ নিয়ে সোহেল রানার সঙ্গে স্ত্রী রাবেয়ার কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে ওই দিন দুপুরে রাবেয়া তার তিন মাসের শিশু কন্যা সোহানা আক্তারকে সোহেল রানার কাছে রেখে বাথ রুমে গেলে কৌশলে সোহেল রানা তার মেয়েকে নিয়ে পালিয়ে যায়। পরে কড্ডা ব্রিজের উপর থেকে সে তার মেয়ে সোহানাকে তুরাগ নদীতে নিক্ষেপ করে চলে যায়।
পরদিন সকালে অনুশোচনায় কড্ডা ব্রিজের নীচে নদীতে নেমে মেয়েকে খুঁজতে থাকে। দীর্ঘ কয়েক ঘণ্টা নদীর পানিতে খোঁজাখুজির কারণে আশপাশে মানুষ জমে যায়। তারা সন্দেহবশত সোহেল রানাকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে তার মেয়েকে নদীতে ফেলে হত্যার কথা স্বীকার করে। পরে স্থানীয়রা তাকে পুলিশের হাতে তুলে দেয়।
এ ঘটনায় রাবেয়ার ভাই আসাদুল হক বাদী হয়ে জয়দেবপুর থানায় মামলা করেন। পরে সোহেল রানাকে গাজীপুরের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে হাজির করা হলে দোষ স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেয়। জয়দেবপুর থানার এসআই মোবারক হোসেন আসামির বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। এ বছরের ৩১ আগস্ট সোহেল রানার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। মামলায় ১০ জন সাক্ষীর সাক্ষ গ্রহণ করা হয়। দীর্ঘ শুনানি শেষে সোমবার গাজীপুরের জেলা ও দায়রা জজ একেএম এনামুল হক ওই রায় প্রদান করেন। রাষ্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন পিপি মো. হারিছ উদ্দিন আহামদ, আসামিপক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট মো. শাহজাহান।
মো. আমিনুল ইসলাম/এমজেড/পিআর