মাতারবাড়ি বিদ্যুৎ প্রকল্পে খরচ বাড়ছে ১২ হাজার কোটি টাকা
অডিও শুনুন
সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার পাওয়া কক্সবাজারের ‘মাতারবাড়ি ২x৬০০ মেগাওয়াট আল্ট্রাসুপার ক্রিটিক্যাল কোল-ফায়ার্ড পাওয়ার’ প্রকল্পের খরচ ও সময় বাড়ানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। নতুন করে প্রকল্পের ব্যয় ১২ থেকে ১৪ হাজার কোটি টাকার মতো বাড়ানো হতে পারে। এ খরচ বাড়লে এটি হবে দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ব্যয়বহুল প্রকল্প। এখন পর্যন্ত দেশে সবচেয়ে বেশি খরচ করা হচ্ছে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পে।
প্রকল্পের বাস্তবায়নকারী সংস্থা কোল পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেড (সিপিজিসিবিএল) সূত্রে জানা গেছে, নতুন করে প্রায় ১৪ হাজার কোটি টাকার মতো খরচ বাড়তে পারে মাতারবাড়ি বিদ্যুৎ প্রকল্পে। এতে প্রকল্পের ব্যয় ৩৬ হাজার কোটি থেকে বেড়ে প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকা হবে। এ খরচ বাড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে।
প্রকল্প বাস্তবায়ন সংশ্লিষ্ট শীর্ষ পর্যায়ের এক কর্মকর্তা জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমাদের যে অনুমোদিত ডিপিপি (উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনা), সেটার তুলনায় ব্যয় একটু বেড়েছে। সেটা আমাদের আবার অনুমোদন নেয়ার জন্য প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। অনুমোদিত ডিপিপিতে ব্যয় ৩৫ হাজার ৯৮৪ কোটি টাকা। এখন সেটা হয়তো ৫০ হাজার কোটি টাকার কাছাকাছি যাবে।’
সিপিজিসিবিএলের তথ্যমতে, প্রকল্পের ব্যয় প্রাক্কলন করা হয়েছিল ৩২ হাজার ৯৯২ কোটি ৩০ লাখ টাকা। এরপর ঠিকাদার নিয়োগ খরচ বেশি হওয়ায় এর বর্তমান ব্যয় গিয়ে দাঁড়ায় ৩৫ হাজার ৯৮৪ কোটি টাকায়। তার মধ্যে জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা (জাইকা) ঋণ হিসেবে দিচ্ছে ২৮ হাজার ৮৩৮ কোটি টাকা এবং বাকি সাত হাজার ৪৫ কোটি দিচ্ছে বাংলাদেশ সরকার ও সিপিজিসিবিএল।
সময় বাড়ানোর বিষয়ে প্রকল্প বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘আপাতত আমরা যে পর্যায়ে আছি, তাতে যথাসময়ই কাজ শেষ করতে পারব বলে আশা করি। তারপরও এটার সময় হয়তো বাড়বে। হলি আর্টিসানের কারণে আমরা তো ঠিকমতো কাজ করতে পারিনি। ওই সময় আমরা পিছিয়ে গিয়েছিলাম। তাছাড়া ডিপিপিটাও অনেক আগে করা। এসব কারণে প্রকল্পের মেয়াদ বাড়াতে হবে।’
সিপিজিসিবিএলের তথ্যমতে, প্রকল্পটি জাপানের সুমিতোমো করপোরেশন, তোশিবা করপোরেশন ও আইএইচআই করপোরেশনের কনসোর্টিয়ামকে ইপিসি ঠিকাদার হিসেবে নিয়োগ করা হয়েছে। ২০১৭ সালের ২২ আগস্ট ইপিসি ঠিকাদার বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পের কাজ শুরু করেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৮ সালের ২৮ জানুয়ারি এ প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। ২০২০ সালের আগস্ট পর্যন্ত এ প্রকল্পের ভৌত অগ্রগতি ৩২ দশমিক ৮০ শতাংশ।
প্রকল্পের ব্যয় বাড়ানোর বিষয়ে জানতে চাইলে প্রকল্প পরিচালক আবুল কালাম আজাদ জাগো নিউজকে বলেন, ‘চ্যানেল আগে ছিল ৩ কিলোমিটার, এখন হয়েছে ১৪ দশমিক ৩ কিলোমিটার। সে হিসেবে খরচ বাড়বে। এখনো আমরা হিসাব-নিকাশ করিনি। প্রকল্প চূড়ান্ত হলে করব। এখন যে ব্যয় ধরা আছে তার থেকে ১০-১২ কোটি টাকা বাড়তে পারে।’
প্রকল্পের মেয়াদ বাড়বে কি-না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘প্রকল্পের সময় বাড়বে। যে অনুযায়ী চুক্তি হয়েছে, সে অনুযায়ী সময় বাড়বে। ২০২৩ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রকল্পের মেয়াদ ধরা আছে। এখন তা এক বছর বাড়িয়ে ২০২৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত করার প্রস্তাব দেয়া হবে।’
পিডি/এমএএস/ইএআর/সায়ীদ আলমগীর/এসএস/এইচএ/জেআইএম