মান্দায় প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে যৌতুক মামলার আসামি
নওগাঁর মান্দায় যৌতুক মামলার আসামি চেয়ারম্যান শারিকুল প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ালেও পুলিশ গ্রেফতার করছে না বলে অভিযোগ উঠেছে। বাদীর অভিযোগ আসামি নিজ এলাকায় প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ালেও পুলিশ মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে গ্রেফতার করছে না।
অভিযোগে জানা যায়, মান্দার ভারশোঁ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শারিকুল ইসলামের দ্বিতীয় স্ত্রী নীলা ইসলাম যৌতুক নির্যাতনসহ বিভিন্ন অভিযোগে আদালতে মামলা দায়ের করেন। এছাড়া প্রথম স্ত্রী থাকা সত্ত্বেও তা গোপন রেখে দ্বিতীয় বিয়ে করে। গত ৬ বৎসর আগে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী নীলার (হিন্দুধর্মী) সঙ্গে পরিচয় হয়। পরিচয়ের পর দেখা সাক্ষাৎ কথা বার্তায় এক পর্যায়ে দুইজনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক হয়।
প্রেমের সম্পর্ক নিয়ে বিয়ের উদ্দেশ্যে নীলা বাড়ি থেকে মায়ের সাত ভরি স্বর্ণ এবং নগদ এক লাখ ১৫ হাজার টাকাসহ শারিকুলের সঙ্গে পালিয়ে ঢাকায় আসেন। নীলাকে ধর্মান্তরিত করে শারিকুল বিয়ে বন্ধনে আবদ্ধ হন। বিয়ের পর পুরান ঢাকার সূত্রাপুর এলাকায় একটি বাসা ভাড়া নিয়ে দুইজনে বসবাস শুরু করেন।
কিন্তু বিয়ের কিছু দিন পর নীলা বুঝতে পারে তার স্বামীর প্রথম স্ত্রী এবং সন্তান ও সংসারের কথা। এছাড়া স্বামী শারিকুল লম্পট ও পর নারী লোভী তাও বুঝতে পারে। এরপর নীলাকে যৌতুকের জন্য চাপ প্রয়োগ ও শারীরিক নির্যাতন শুরু করে। এছাড়া নীলাকে সুগার মিলে চাকরি দেয়ার কথা বলে তার ভগ্নিপতির নিকট থেকে দুই লাখ টাকা হাতিয়ে নেন। চাকরি না দিয়ে সম্পূর্ণ টাকা আত্মসাত করেন শারিকুল। যতই দিন যায় যৌতুকের জন্য নীলার উপর তার নির্যাতনের মাত্রা ততই বাড়তে থাকে।
গত ২৬ জুন পাঁচ লাখ টাকা যৌতুকের জন্য স্বামী শারিকুল আবারও চাপ দিতে থাকে। নীলা যৌতুকের টাকা দিতে অপরাগতা প্রকাশ করলে স্বামী শারিকুল ক্ষিপ্ত হয়ে শারীরিক নির্যাতনসহ গলা টিপে শ্বাসরোধ করে মেরে ফেলার চেষ্টা করে। এ সময় নীলার চিৎকারে প্রতিবেশিরা এসে উদ্ধার করে স্থানীয় মিটফোর্ড হাসপাতালে ভর্তি করে।
নীলা সুস্থ হয়ে বাসায় ফিরে এসে স্বামী শারিকুলকে মোবাইল ফোনে এবং বিভিন্ন স্থানে খুঁজে না পেয়ে গত ১৩ জুলাই ঢাকা দায়রা জজ আদালত-৩ এ যৌতুক ও নারী নির্যাতন মামলা দায়ের করেন। যার নম্বর ৩৯৮/২০১৫।
ঘটনাটি ধামাচাপা দেয়ার জন্য চেয়ারম্যান শারিকুল ইসলাম স্থানীয় সাংবাদিক এবং পুলিশ প্রশাসনকে ম্যানেজ করে মোটা অঙ্কের টাকা দিয়ে নিজ এলাকায় প্রকাশে ঘুরছে ও ইউনিয়ন পরিষদে গিয়ে কার্যক্রম পরিচালনা করছেন বলে জানা গেছে।
মান্দা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোজাফফর হোসেন জানান, আসামি পলাতক থাকায় গ্রেফতার করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে তাকে গ্রেফতারে চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
মান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাইফুর রহমান খান জানান, পাঁচ দিন আগে নীলার কাছ থেকে স্বামী শারিকুল ইসলামের বিষয়ে জেনেছি।
লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। এছাড়া চেয়ারম্যান শারিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে সরকারি গাছ কাটাসহ অর্থ আত্মসাতের বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে বলেও জানান তিনি।
আব্বাস আলী/এআরএ/এমএস