৪১৩ কোটি টাকা ব্যয়ে নোয়াখালীর চার উপজেলায় সড়ক নির্মাণের প্রস্তাব
নোয়াখালীর কবিরহাটের সঙ্গে সোনাইমুড়ী উপজেলার এবং সোনাইমুড়ীর সঙ্গে বেগমগঞ্জ গ্যাসফিল্ড হয়ে সেনবাগ উপজেলার সরাসরি সড়ক যোগাযোগ স্থাপন করা হবে। এতে খরচ হবে ৪১৩ কোটি ৮১ লাখ টাকা। যদিও প্রকল্পটির বিভিন্ন খাতে খরচ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে পরিকল্পনা কমিশন।
প্রকল্পটি ২০২১ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২৩ সালের জুনের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে। প্রকল্পটি সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়/সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের উদ্যোগে সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদফতর বাস্তবায়ন করবে।
সম্প্রতি ‘নোয়াখালী সড়ক বিভাগাধীন ক্ষতিগ্রস্ত কবিরহাট-ছমিরমুন্সীরহাট-সোনাইমুড়ী সড়ক (জেড-১৪১০) এবং সেনবাগ-বেগমগঞ্জ গ্যাসফিল্ড-সোনাইমুড়ী সড়ক (জেড-১৪৪৬) উন্নয়ন’ প্রকল্পের মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভা সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
পিইসি সভায় পরিকল্পনা কমিশন মত দিয়ে বলেছে, ক্ষতিপূরণসহ অধিগ্রহণের জন্য ৭১ দশমিক ৬২ হেক্টর ভূমির জন্য ২১৯ কোটি ২৭ লাখ টাকার প্রাক্কলন রাখা হয়েছে, যা মোট প্রকল্প ব্যয়ের ৫২ দশমিক ৯৯ শতাংশ। ভূমি অধিগ্রহণ ব্যয় সংক্রান্ত তথ্য সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে সংগ্রহ করে সংযুক্ত করার বিষয়ে সভায় আলোচনা করা যেতে পারে। আর প্রস্তাবিত ভূমি অধিগ্রহণে কৃষি জমি ক্ষতিগ্রস্ত হবে কিনা, প্রাকৃতিক পরিবেশের ওপর কোনো বিরূপ প্রভাব পড়বে কিনা এবং ভবিষ্যতে এ প্রকল্পের আওতায় আরও জমি অধিগ্রহণের প্রয়োজন আছে কিনা— এসব বিষয়ে আলোচনার প্রয়োজন। এছাড়া ভূমি অধিগ্রহণ বিষয়ে জরিপ হয়েছে কিনা, তা নিয়েও আলোচনা প্রয়োজন।
সড়ক বাঁধ নির্মাণে ৩ দশমিক ০৬৮ লাখ ঘনমিটার মাটির কাজের জন্য ১২ কোটি ৪৭ লাখ ৭২ হাজার টাকার প্রস্তাব করা হয়েছে। এ ব্যয় নির্ধারণের ভিত্তি নিয়ে সভায় আলোচনা হতে পারে এবং জরিপ অনুযায়ী বাস্তবতার নিরিখে মাটির কাজের যৌক্তিক ব্যয় প্রাক্কলন করা যেতে পারে বলেও মত দিয়েছে পরিকল্পনা কমিশন।
এ প্রকল্পের আওতায় একটি বাস-বে নির্মাণ করা হবে। তার জন্য খরচ ধরা হয়েছে ৩৭ লাখ টাকা। এ ব্যয়ের ভিত্তি নিয়েও পরিকল্পনা কমিশন প্রশ্ন তুলেছে। প্রকল্পটির আরও বেশকিছু মতামতে ব্যয় নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে কমিশন।
৭১ দশমিক ৬২ হেক্টর জমির ভূমি অধিগ্রহণ ও ক্ষতিপূরণ প্রদান, ৩ দশমিক ০৬৮ লাখ ঘনমিটার সড়ক বাঁধ নির্মাণ (মাটির কাজ), ৮ কিলোমিটার নতুন ফ্লেক্সিবল পেভমেন্ট নির্মাণ, সাড়ে ৩ কিলোমিটার বাঁক সরলীকরণ, ২৬ দশমিক ৭২৩ কিলোমিটার প্রশস্তকরণসহ পুনঃনির্মাণ, সাড়ে ৪ কিলোমিটার প্রশস্তকরণসহ মজবুতিকরণ, ৪২ দশমিক ৭২৩ কিলোমিটার সার্ফেসিং, ১ হাজার ৮০০ মিটার আরসিসি বক্স কালভার্ট নির্মাণ (৫২টি), ৭ হাজার ৪০০ মিটার ব্রিক টো-ওয়াল নির্মাণ, ১ হাজার মিটার ব্রিক শ্যাশনারি রিটেইনিং ওয়াল, ২ হাজার মিটার ব্রিক ম্যাশনারি ড্রেন নির্মাণসহ আরও বেশকিছু কাজ করা হবে এ প্রকল্পের আওতায়।
সওজ বলছে, প্রস্তাবিত প্রকল্পটি কুমিল্লা সড়ক জোনের আওতায় নোয়াখালী সড়ক বিভাগের দুটি গুরুত্বপূর্ণ জেলা মহাসড়ক, যা নোয়াখালীর আওতাধীন চারটি গুরুত্বপূর্ণ উপজেলার সড়ক/সড়কাংশের সমন্বয়ে গঠিত। কবিরহাট-ছমিরমুন্সীহাট-সোনাইমুড়ী সড়ক এবং সেনবাগ-বেগমগঞ্জ গ্যাসফিল্ড-সোনাইমুড়ী সড়ক নোয়াখালীর গুরুত্বপূর্ণ জেলা মহাসড়ক।
কবিরহাট ও সোনাইমুড়ী উপজেলার মধ্যে সংযোগ স্থাপনকারী কবিরহাট-ছমিরমুন্সীরহাট-সোনাইমুড়ী সড়কে গত বর্ষাকালীন ভারী বৃষ্টিতে পেভমেন্ট ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যান চলাচল অনুপযোগী হয়ে পড়ে। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে সেখানে সহজে ও দ্রুত যানবাহন ও মালামাল পরিবহন বৃদ্ধিসহ সেখানকার আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন সাধিত হবে।
পিডি/এমএসএইচ/পিআর