দেশে ফিটনেসবিহীন কোনো নৌযান চলে না


প্রকাশিত: ০১:১০ পিএম, ০৯ নভেম্বর ২০১৫

দেশের নদীপথগুলোতে ফিটনেসবিহীন কোনো নৌযান চলাচন করে না বলে জানিয়েছেন নৌ-পরিবহণ মন্ত্রী শাজাহান খান।

জাতীয় সংসদে সোমবার প্রশ্নোত্তর পর্বে নূরজাহান বেগমের লিখিত প্রশ্নের উত্তরে তিনি এ তথ্য জানান।

মন্ত্রী জানান, এ বিষয়টি আরো নিশ্চিত হতে নৌযান তথ্য সংগ্রহের লক্ষ্যে একটি নৌ-শুমারি প্রকল্প গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নের পর বিষয়টি আরো নিশ্চিত হওয়া যাবে।

তিনি বলেন, নৌপথে ফিটনেস তথা সার্ভেবিহীন নৌযান চলাচল আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। এ ধরনের নৌযানের বিরুদ্ধে নৌ চলাচল অধ্যাদেশ ১৯৭৬ এর বিধান অনুসারে নৌ-আদালতে মামলা দায়েরপূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হয়।

ফিটনেসবিহীন নৌযান যাতে চলতে না পারে সেটা তদারকির জন্য নৌ-পরিদর্শক এবং প্রথম শ্রেণির ম্যাজিস্ট্রেট স্পেশাল অফিসার মেরিন সেইফটি দ্বারা নিয়মিত পরিদর্শন কার্যক্রম মাঝে মাঝে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হচ্ছে।

নৌযানগুলোতে অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ন্ত্রণ করতে মন্ত্রণালয়ের পদক্ষেপ সম্পর্কিত তাহজীব আলম সিদ্দিকীর এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, নৌযানের ছাদে যাতে যাত্রী না উঠতে পারে সেজন্য ছাদ সংযুক্ত করে কোনো সিড়ি রাখতে দেয়া হয় না। যাত্রার আগে নৌযানে ভয়েজ ডিক্লারেশন অনুযায়ী যাত্রী সংখ্যা সঠিক আছে কি না তা ট্রাফিক ইন্সপেক্টর কর্তৃক নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হয়। ক্ষমতা অনুসারে যাত্রী পূর্ণ হলেই নৌযানকে বন্দর ত্যাগ করতে বাধ্য করা হয়।

অতিরিক্ত যাত্রী ঠেকাতে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হচ্ছে। এছাড়া অতিরিক্ত যাত্রী বহন করার দায়ে নৌ-আদালতের মাধ্যমে নৌযানের সনদ বাতিলসহ মাস্টার ও মালিককে আদালতের বিবেচনা মতো শাস্তি দেয়া হয়।

গোলম দস্তগীর গাজীর এক প্রশ্নের জবাবে শাজাহান খান বলেন, বিআইডব্লিউটিএ’তে রক্ষিত তথ্য অনুযায়ী ১৯৮৩ সাল থেকে এখন পর্যন্ত মোট ৪১৫টি যাত্রীবাহী নৌযান দুর্ঘটনায় পড়েছে। এতে প্রায় চার হাজার ২৫৫ জন লোকের মৃত্যু হয়েছে।  

নৌপথে পণ্য পরিবহনে ব্যবসায়ীদের প্রণোদনা প্রদানে মন্ত্রণালয়ের পদক্ষেপ জানতে কামাল আহমেদ মজুমদারের মৌখিক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, দেশে কন্টেইনারে পণ্য পরিবহনে বাড়াতে ঢাকার অদূরে পানগাঁয়ে দেশের প্রথম অভ্যন্তরীণ কন্টেইনার টার্মিনাল (আইসিটি) নির্মাণ করা হয়। চট্টগ্রাম বন্দরের তিনটি ও বেসরকারি খাতের একটিসহ মোট চারটি কন্টেইনারবাহী জাহাজ চট্টগ্রাম থেকে পানগাঁওয়ে পণ্য আনা নেয়া করছে। চট্টগ্রাম থেকে পানগাঁয়ে পণ্য পরিবহনের জন্য বিআইডব্লিউটিসির চারটি কন্টেইনার জাহাজ নির্মাণের কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে। বেসরকারি খাতসহ ২০১৬ সালের মধ্যে এ রুটে পণ্য পরিবহনের জন্য ৩০টি নৌ-যান প্রস্তুত ও চলাচল করবে। এর বাইরেও পানগাঁও আইসিটিতে পণ্য হ্যান্ডেলিংয়ের জন্য আমদানি-রফতানিকারকদের তিন বছরের জন্য আর্থিক সুবিধা ও প্রণোদনা হিসেবে ৭০ শতাংশ ট্যারিফ হ্রাস করার প্রস্তাব নৌ-মন্ত্রণালয় থেকে অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। মংলা বন্দরের মাধ্যমে আমদানীকৃত ভোজ্যতেল একটি নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য। সর্বসাধারণের ক্রয় সীমার মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখার জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ের সম্মতি এবং নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনক্রমে মংলা বন্দরের মাধ্যমে আমদানীকৃত ক্রুড রিফাইন্ড অয়েল এর ল্যান্ডিং চার্জ টনপ্রতি ২৫০ টাকার পরিবর্তে ২৫ টাকা করা হয়েছে।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের সম্মতি এবং নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনক্রমে পদ্মাসেতু নির্মাণকল্পে মংলা বন্দরের মাধ্যমে আমদানীকৃত মালামালের ল্যান্ডিং চার্জ মওকুফ করা হয়েছে।   

এইচএস/একে/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।