কৃষিপণ্যের রফতানি বাড়াতে বিশ্বমানের প্যাক হাউস করা হবে পূর্বাচলে

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৭:৫৬ পিএম, ১০ নভেম্বর ২০২০

কৃষিপণ্যের রফতানি বাড়াতে পূর্বাচলে বিশ্বমানের সর্বাধুনিক প্যাক হাউস (মোড়কীকরণ কেন্দ্র) ও অ্যাক্রেডিটেশন ল্যাব স্থাপন করা হবে বলে জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুর রাজ্জাক।

মঙ্গলবার রাজধানীর ফার্মগেটে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল মিলনায়তনে হর্টিকালচার এক্সপোর্ট ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন (হর্টেক্স) আয়োজিত কৃষিপণ্যের রফতানি বাড়াতে ‘আধুনিক প্যাক হাউস সুবিধা এবং অ্যাক্রেডিটেড ল্যাবরেটরি নির্মাণ বিষয়ে পরামর্শ কর্মশালা’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে কৃষিমন্ত্রী এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আধুনিক প্যাক হাউস স্থাপনের জন্য পূর্বাচলে ২ একর জমি কৃষি মন্ত্রণালয়কে দিয়েছেন। সেখানে কৃষিপণ্যের রফতানি বৃদ্ধিতে বিশ্বমানের সর্বাধুনিক প্যাক হাউস এবং অ্যাক্রেডিটেশন ল্যাবরেটরি স্থাপন করা হবে। এই প্যাক হাউস নির্মাণের জন্য দ্রুত উদ্যোগ ও প্রকল্প গ্রহণ করা হবে। এটি নির্মিত হলে ইউরোপ, মধ্যপ্রাচ্যসহ বিদেশে দেশের ফলমূল ও শাকসবজি রফতানি বহুগুণ বাড়বে এবং কৃষি দেশের সার্বিক অর্থনীতিতে বিরাট অবদান রাখতে সক্ষম হবে।

মন্ত্রী বলেন, কৃষি যান্ত্রিকীকরণ ও বাণিজ্যিকরণের দিকে যাচ্ছে। কৃষি অবশ্যই আধুনিক হবে। সেজন্য একই সঙ্গে কৃষিপণ্যের আন্তর্জাতিক বাজার বাড়াতে হবে। এটির ক্ষেত্রে অন্তরায় হলো প্যাকেজিং এবং নিরাপদ খাদ্য হিসেবে আন্তর্জাতিকভাবে গ্রহণযোগ্য সার্টিফিকেটের অভাব। পূর্বাচলে এই প্যাক হাউস ও ল্যাব স্থাপিত হলে এইসব অন্তরায় দূর হবে। এছাড়া বিমানবন্দরের কাছে হওয়ায় পণ্য পরিবহন সহজতর হবে।

কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে, বাংলাদেশ থেকে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে তাজা ফলমূল ও শাকসবজি রফতানি হয়ে আসছে। এছাড়া প্রক্রিয়াজাত খাদ্যের চাহিদা দিনকে দিন বেড়েই চলছে। বিশ্বজুড়ে এ বাজারের পরিমাণ প্রায় ১০ হাজার বিলিয়ন মার্কিন ডলার। বর্তমান বিশ্বে রফতানিকারক দেশকে আমদানিকারক দেশের চাহিদা অনুযায়ী খাদ্যপণ্য সরবরাহ করতে হয়। এছাড়া ইন্টারন্যাশনাল প্ল্যান্ট প্রোটেকশন কনভেনশনের (আইপিপিসি) গৃহীত ইন্টারন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড ফাইটোস্যানিটারি মেজার্স (আইএসপিএম) অনুসরণ করে ফাইটোস্যানিটারি সার্টিফিকেট ইস্যু হয়ে থাকে। ইদানিং গুড এগ্রিকালচারাল প্র্যাকটিসেস সার্টিফিকেট এবং এমআরএল, হেভি মেটাল এবং অণুজীবের বিষয়েও আমদানিকারক দেশ তাদের চাহিদায় উল্লেখ করে থাকে।

বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাজ্য, ইতালি, ফ্রান্স, গ্রিস, জার্মানি, সুইডেন, ফিনল্যান্ড, সুইজারল্যান্ড, অষ্ট্রিয়া, নেদারল্যান্ডস, মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো, মালয়েশিয়া, হংকং, শ্রীলংকাসহ প্রায় ৪৩টি দেশে তাজা শাকসবজি ও ফলমূল রফতানি হয়ে থাকে। ২০১৯-২০ অর্থবছরে ১৬৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের তাজা শাকসবজি ও ফলমূল বাংলাদেশ থেকে রফতানি হয়েছে। এছাড়া ২৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের আলু রফতানি হয়েছে।

কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন কৃষিসচিব মো. মেসবাহুল ইসলাম। সভায় কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (সম্প্রসারণ) মো. হাসানুজ্জামান কল্লোল, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের নির্বাহী চেয়ারম্যান শেখ মোহাম্মদ বখতিয়ার, হর্টেক্স ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মনজুরুল হান্নান, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের সাবেক মহাপরিচালক মো. হামিদুর রহমান প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যানতত্ত্ব বিভাগের প্রফেসর মোহা. কামরুল হাছান। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়, গবেষণা প্রতিষ্ঠানের বিশেষজ্ঞ, গবেষক, ফল ও সবজি রফতানিকারক অ্যাসোসিয়েশন, ভ্যালু চেইন এক্সপার্ট, ল্যাবরেটরি এক্সপার্ট/বিজ্ঞানীরা উপস্থিত ছিলেন।

আরএমএম/এমএসএইচ/এমকেএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।