ইসলামই হচ্ছে গুরুত্বপূর্ণ উপদেশ
রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের এ হাদিসটি অত্যন্ত গভীরভাবে উপলব্ধি করা দরকার কেননা ইসলামে নসিহতের গুরুত্ব অপরিসীম। নসীহত শব্দের অর্থ হল- শুভ কামনা করা, উপদেশ দেয়া, কল্যাণ কামনা করা। যার কল্যাণ কামনা করা হয় তাকেই উপদেশ দেয়া হয়। নসীহতের বিপরীত হল : ধোঁকাবাজী, প্রতারণা, খেয়ানত, ষড়যন্ত্র, হিংসা-বিদ্বেষ ইত্যাদি। সুতরাং মানুষের বিবাদ মীমাংসা করাও একটি নসিহত। তাই এ হাদিসকে দ্বীনের এক-চতুর্থাংশ বলা হয়ে থাকে। হাদিসটি পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো-
عَنْ أَبِي رُقَيَّةَ تَمِيمِ بْنِ أَوْسٍ الدَّارِيِّ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم قَالَ
"الدِّينُ النَّصِيحَةُ. قُلْنَا: لِمَنْ؟ قَالَ لِلَّهِ، وَلِكِتَابِهِ، وَلِرَسُولِهِ، وَلِأَئِمَّةِ الْمُسْلِمِينَ وَعَامَّتِهِمْ" .
অর্থ : হজরত আবু রুকাইয়াহ তামিম ইবনে আওস আদ-দারি রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, দ্বীন হচ্ছে উপদেশ বা কল্যাণ কামনা। আমরা বললাম, কার জন্য? তিনি বলেন, আল্লাহর জন্য, তাঁর কিতাবের জন্য, তাঁর রাসুলের জন্য, মুসলিমদের নেতা (ইমাম) এবং সমস্ত মুসলিমদের জন্য। (মুসলিম)
হাদিসের শিক্ষা
০১. ইসলামের মূল কথা হল অপরের কল্যাণ কামনা। তাইতো রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ধর্ম হল কল্যাণ কামনা করা।
০২. পাঁচ প্রকার সত্ত্বার জন্য কল্যাণ কামনা করতে হবে।
প্রথমত : আল্লাহ তা’আলার জন্য কল্যাণ কামনা করা। এ কল্যাণ কামনা হল- তাকে সর্ব বিষয়ে প্রভু বলে মেনে নেয়া। শুধুমাত্র তাঁরই ইবাদত করা। তাঁর উপর বিশ্বাস স্থাপন করা। তাঁর সঙ্গে কাউকে শরিক না করা। তাঁর গুণাবলীগুলো অকাট্যভাবে বিশ্বাস করা। তাঁর আদেশগুলো মেনে নিষেধগুলো বর্জন করা। তাঁর জন্য ভালোবাসা এবং তাঁর জন্য ঘৃণা করা। সর্বোপরি তাঁর নিআমাতের শুকরিয়া করা।
দ্বিতীয়ত : আল্লাহর কিতাবের জন্য জন্য কল্যাণ কামনা করা। অর্থাৎ, কুরআন আল্লাহর পক্ষ থেকে অবতীর্ণ বলে বিশ্বাস করা। তা অধ্যয়নের মাধ্যমে জীবনের সর্বক্ষেত্রে তা বাস্তবায়ন করা।
তৃতীয়ত : রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জন্য কল্যাণ কামনা করা। অর্থাৎ, তাঁকে সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ রাসুল বলে বিশ্বাস করা, তাঁর আদেশ, নির্দেশ ও আদর্শ অনুসরণ অনুকরণসহ তাঁকে ভালবাসা।
চতুর্থত : মুসলমানদের নেতা ও ইমামদের জন্য কল্যাণ কামনা করা। অর্থাৎ সত্য ও ন্যায় প্রতিষ্ঠায় তাঁদের আনুগত্য ও সাহায্য করা, তাঁদেরকে সবসময় সৎ উপদেশ দেয়াসহ তাদের জন্য দোয়া করা।
পঞ্চমত : সাধারণ মুসলিমদের জন্য কল্যাণ কামনা করা। অর্থাৎ, দুনিয়অ আখিরাতের সব কাজে উপদেশ ও পারস্পারিক বিবাদ মীমাংসা করে দেয়া, তাদের সব ভাল কাজে সহযোগিতা করা, পরস্পরের দোষত্রুটি গোপন রেখে আত্মশুদ্ধির চেষ্টা করা। সহমর্মিতার সঙ্গে তাদের ভাল কাজের আদেশ করা আর অন্যায় থেকে বিরত রাখা। সর্বোপরি পরস্পর একে অপরের জন্য দোয়া করা।
জাগো ইসলামে লেখা পাঠাতে ই-মেইল : [email protected]
জাগোনিউজ২৪.কমের সঙ্গে থাকুন। কুরআন-হাদিস মোতাবেক আমলি জিন্দেগি যাপন করে আল্লাহর নৈকট্য অর্জন করুন। আমিন, ছুম্মা আমিন।
এমএমএস