রাজন হত্যা মামলায় ৪ জনের ফাঁসি


প্রকাশিত: ০৬:৪৫ এএম, ০৮ নভেম্বর ২০১৫

সিলেটে নির্মমভাবে খুন হওয়া শিশু শেখ সামিউল আলম রাজন হত্যা মামলার রায়ে প্রধান আসামি কামরুলসহ ৪ জনের ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত। রোববার দুপুর পৌনে ১টার দিকে সিলেট মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক আকবর হোসেন মৃধা এ রায় ঘোষণা করেন।

রায়ে ৪ জনকে ফৌজদারি দণ্ডবিধির ৩০২ ও ৩৪ ধারায় সবোচ্চ শাস্তি ফাঁসি, দণ্ডবিধির ১০৯, ৩০২ ও ৩৪ ধারায় একজনকে যাবজ্জীবন, লাশ গুম করার অপরাধে ২০১ ধারায় তিনজনকে সাত বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড, দুইজনকে এক বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড ও তিনজনকে বেকসুর খালাস দেয়া হয়।

Kamrul-sylhet

ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন, শহরতলির কুমারগাঁওয়ের শেখপাড়া গ্রামের কামরুল ইসলাম, বাদল, চৌকিদার ময়না মিয়া ওরফে বড় ময়না, তাজউদ্দিন আহমদ বাদল ও জাকির হোসেন ওরফে পাভেল।

ভিডিও চিত্র ধারণকারী নুর মিয়াকে দেয়া হয় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড আর কামরুলের তিনভাই মুহিত আলম, আলী হায়দার ওরফে আলী ও শামীম আহমদকে ৭ বছর করে কারাদণ্ডাদেশ দেন আদালত। এদের প্রত্যেককে ১০হাজার টাকা করে জরিমানাও করেন আদালত।

এছাড়া রায়ে এক বছর করে কারাদণ্ড ও ১ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে দুলাল আহমদ ও আয়াজ আলীকে। এদিকে, অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় বেকসুর খালাস দেয়া হয়েছে তিনজনকে। এরা হলেন, রুহুল আমিন, আছমত আলী ও ফিরোজ মিয়া।

Kamrul

রায়ে বাদী পক্ষের আইনজীবী মসরুর চৌধুরী সন্তোষ প্রকাশ করলেও আসামি পক্ষের আইনজীবী আলী হায়দার ফারুক জানিয়েছেন, আমরা ন্যায় বিচার পাইনি। রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করা হবে।

এদিকে, আসামিদের আদালতে উপস্থিত করার সঙ্গে সঙ্গে ফাঁসি ফাঁসি স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে আদালত প্রাঙ্গণ। অসংখ্য সাধারণ মানুষ আদালতে উপস্থিত হয়ে খুনিদের ফাঁসির দাবি জানান।

রাজনের বাবা শেখ আজিজুর রহমান ও মা লুবনা বেগম সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, রায়ে আমরা খুশি। দ্রুত রায় ঘোষণা করায় প্রধানমন্ত্রীসহ বিচার সংশ্লিষ্ট ও গণমাধ্যমকর্মীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তারা বলেন, এখন আমরা এই রায়ের দ্রুত কার্যকর চাই।

এক প্রতিক্রিয়ায় রাজনের বাবা-মা জাগো নিউজকে বলেন, আমরা ছেলের হত্যাকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসি হয়েছে। ছেলেটা মৃত্যুর সময় অনেক কষ্ট পেয়েছে। খুনিদের ফাঁসি হলে মনে শান্তি পাব।

Kamrul

আদালতে ছোট ছেলেকে কোলে নিয়ে রাজনের মা লুবনা বেগম বলেন, আমি ন্যায় বিচার পেয়েছি। আমার ছেলেকে তো আর পাব না। ছেলেকে ওরা অনেক কষ্ট দিয়ে মেরেছে। আমি আর কিছু চাই না, এখন শুধু তাদের রায় কার্যকর চাই।

এর আগে গত ৩ নভেম্বর যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে সিলেট মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. আকবর হোসেন মৃধা রায়ের দিন ধার্য করেছিলেন।

উল্লেখ্য, গত ৮ জুলাই চুরির মিথ্যা অপবাদে সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়কের কুমারগাঁও বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন শেখপাড়ায় নির্যাতন চালিয়ে হত্যা করা হয় সবজি বিক্রেতা শিশু সামিউল রাজনকে।

ছামির মাহমুদ/এসএস/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।