অবশেষে চলে গেলেন নাসিমা
যৌতুকের দাবিতে অগ্নিদগ্ধ নাসিমা আক্তার নাইস (২৩) অবশেষে মারা গেছেন। শুক্রবার দুপুরের দিকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। আগুনে নাসিমার শরীরের ৮২ শতাংশ পুড়ে যায়।
যৌতুকের জন্য স্ত্রীর গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন দেয়ার অভিযোগে তার স্বামী রুবেল হোসেনের (৩০) বিরুদ্ধে নওগাঁ সদর থানায় মামলা হলে তাকে এখনো গ্রেফতার করা হয়নি। তার বাড়ি বগুড়ার আদমদিঘি উপজেলার কুন্ডুগ্রামে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক (এসআই) মঞ্জুরুল ভুইয়া জানান, মৃত্যুর আগে তার জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়েছে। এছাড়াও তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে- যে তার স্বামীই নাসিমার গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন দিয়েছেন। তার ভাড়া বাড়ি এখন তালাবদ্ধ। গ্রামের বাড়িতেও তাকে ধরার জন্য অভিযান চালানো হয়েছে। তিনি পলাতক রয়েছেন। এখন অন্যভাবে তাকে গ্রেফতারের চেষ্টা চালানো হচ্ছে। বিকেলে ময়নাতদন্ত শেষে নাসিমার মরদেহ তার গ্রামের বাড়িতে পাঠানো হয়েছে।
নাসিমার বাবা আব্দুল গাফফার জানান, নাসিমা তার একমাত্র সন্তান। সপ্তম শ্রেণিতে পড়ার সময় মেয়ের বিয়ে দিয়েছিলেন। জামাই হাফেজিয়া মাদ্রাসার শিক্ষক। শিক্ষকতা ছেড়ে দিয়ে তিনি মসজিদের ঈমামতি শুরু করেছিল। গত চার-পাঁচ মাস আগে তা বাদ দিয়ে নওগাঁ সদরে তিনি প্লাস্টিক সামগ্রীর দোকান দেয়। এ জন্য তিনি দুই লাখ টাকা দিয়েছেন।
এর আগেও দুই দাফায় তাকে ৭০ হাজার টাকা দেয়া হয়েছিল। এছাড়াও একমাত্র সন্তান হওয়ার কারণে মেয়ের মা তাকে না জানিয়ে গোপনে জামাইকে টাকা দিতেন। নওগাঁয় দোকান করার পর তারা একটা ভাড়া বাসায় থাকতেন।
তিনি আরো জানান, এবার তার জামাইয়ের দাবি ছিল আরও ১০ লাখ টাকা। টাকা না পেয়ে গত ২৪ অক্টোবর রাতে সে নাসিমার গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। এর আগেও তিনবার স্বামীর অত্যাচারে তার মেয়ে চলে এসেছিল। সালিসি বৈঠকের মধ্যেমে আর নির্যাতন না করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে জামাই তার মেয়েকে নিয়ে যায়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত মেয়েকে এইভাবে মেরে ফেলবে তা বুঝতে পারেননি।
শাহরিয়ার অনতু/এআরএ/এমএস