পাঠ্যক্রমে মার্শাল আর্ট অন্তর্ভুক্ত করার দাবি
আত্মরক্ষা ও আত্মবিশ্বাসসহ শিক্ষার্থীদের শারীরিক এবং মানসিক বিকাশে পাঠ্যক্রমে মার্শাল আর্ট অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানিয়েছে বিভিন্ন সংগঠন।
মঙ্গলবার (১৩ অক্টোবর) রাজধানীর শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা), মার্শাল আর্ট ফাউন্ডেশন এবং গ্রীনফোর্সের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এক মানববন্ধনে এ দাবি জানানো হয়।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, বাংলাদেশে নগরায়নসহ দ্রুত সামাজিক নানা পরিবর্তন ঘটছে। সামাজিক বিভিন্নমুখী পরিবর্তন ও ক্রমবর্ধনশীল নগরায়নের ফলে বাড়ছে নতুন নতুন সামাজিক সমস্যা যেমন-যৌন হয়রানি, মাদকাসক্তি, স্বাস্থ্যহীনতা, একাকিত্ব, হতাশা, কিশোর অপরাধসহ বিপথগামিতার নানা দিক। এই অস্থির প্রতিযোগিতায় কোমলমতি শিশু-কিশোরসহ তরুণদের সুস্থ স্বাভাবিকভাবে বেড়ে ওঠার অনুকূল পরিবেশ দিতে আমরা যদি ব্যর্থ হই, তাহলে এসব সমস্যার হার বাড়তেই থাকবে।
তারা বলেন, খেলাধুলায় সামাজিক, মানসিক ও দৈহিক সুস্থতার বিকাশ ঘটে। বর্তমান বিশ্বে ইনডোর ক্রীড়া হিসেবে মার্শাল আর্ট বিশ্বব্যাপী চর্চা হচ্ছে। একটি স্বাস্থ্যোজ্জ্বল, শক্তিশালী বাংলাদেশ নির্মাণে প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মার্শাল আর্ট চর্চার সুযোগ তৈরি করা জরুরি।
পবার চেয়ারম্যান আবু নাসের খান বলেন, মহানগরী ঢাকাসহ সারাদেশেই বিশেষ করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে খেলাধুলাসহ সামাজিকতার সুযোগগুলো ক্রমেই সংকুচিত হয়ে আসছে। অথচ খেলাধুলা বা শরীরচর্চা একজন মানুষের সুস্থভাবে বেড়ে ওঠার অন্যতম আবশ্যিক অনুষঙ্গ। আমাদের দেশে একসময় ঢাকা শহরে অনেক খোলা জায়গা ছিল, যা খেলার মাঠ হিসেবে ব্যবহৃত হতো। কিন্তু ধীরে ধীরে সেসব খোলা জায়গা অপরিকল্পিতভাবে দালান-কোঠা নির্মাণ ও বিভিন্নভাবে দখলের ফলে আজ প্রায় বিলীনের পথে। শুধু শহরাঞ্চল নয়, এখন গ্রামেও খেলার মাঠের সংকট সৃষ্টি হচ্ছে। এমতাবস্থায় অল্প জায়গায় ইনডোর ক্রীড়া হিসেবে মার্শাল আর্ট প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে চালু করা দরকার।
মার্শাল আর্ট ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান আতিক মোরশেদ বলেন, মার্শাল আর্টের বিভিন্ন কৌশল যেমন-কারাতে, তায়কোয়ান্দো, উশু, জুড়ো, কিক বক্সিং, জুজুৎসু, বুত্থান প্রভৃতি কৌশলগুলো বিশ্বব্যাপী চর্চা হচ্ছে। মার্শাল আর্টের একটি বিশেষত্ব হলো স্বাস্থ্য সুরক্ষার পাশাপাশি এর মাধ্যমে কার্যকরী আত্মরক্ষার কৌশল শেখা যায় এবং অল্প জায়গায় অনেকে একসঙ্গে অনুশীলন করতে পারেন। তাই উন্নত দেশগুলো তাদের শিক্ষা কারিকুলামে মার্শাল আর্টকে একটি বিষয় হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করেছে। যার দীর্ঘমেয়াদি সুফল তারা পাচ্ছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে কিছু বিশ্ববিদ্যালয় এবং অভিজাত এলাকার স্কুলে এটি চালু থাকলেও প্রয়োজন সারাদেশের শিক্ষার্থীদেরকে চর্চার সুবিধা করে দেয়া।
মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন সোতোকান কারাতে বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক ও সাফ গেমসে কারাতের কোচ মো. জসিম উদ্দিন, সাফ গেমসে গোল্ড মেডেলিস্ট হুমায়রা আক্তার অন্তরা, সচেতন নগরবাসীর সভাপতি জি এম রুস্তম খান, নদী বাঁচাও আন্দোলনের সদস্য সচিব শাকিল রেহমান, যুগ্ম-প্রচার সম্পাদক মো. হাসিবুল হক পুনম, ইঞ্জিনিয়ার এ কে এম মুজিবুর রহমান, গ্রীনফোর্সের সমন্বয়ক প্রমুখ।
এএস/এসআর/পিআর