বিবৃতি ছাড়াই শেষ হলো প্রতিরক্ষামন্ত্রীদের সম্মেলন


প্রকাশিত: ১০:৫২ এএম, ০৫ নভেম্বর ২০১৫

দক্ষিণ চীন সাগরে চীনের কার্যকলাপ নিয়ে বিরোধের মধ্যে কোনো যৌথ বিবৃতি ছাড়াই শেষ হয়েছে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর প্রতিরক্ষামন্ত্রীদের সম্মেলন। বুধবার মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরে সম্মেলনটি অনুষ্ঠিত হয়।

সম্মেলনে দক্ষিণ চীন সাগর নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মতবিরোধের কারণে শেষ পর্যন্ত কোনো প্রকার মতৈক্যে পৌঁছাতে পারেন নি নেতারা।

বৈঠকে অংশ নেয়া কয়েকটি দেশ যৌথ ঘোষণায় দক্ষিণ চীন সাগরের দ্বীপ নিয়ে চীনের মালিকানা দাবির বিতর্কিত বিষয়টি বিবৃতিতে উলে­খ করার পক্ষে মত দেয়। কিন্তু চীন এ বিষয়টি বিবৃতিতে উলে­খ না করার জন্য জোর লবিং করেছে বলে জানান মার্কিন কর্মকর্তারা।

পরবর্তীতে এক সংবাদ সম্মেলনে মালয়েশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিশামুদ্দিন হুসেইন বলেন, "ঐক্যমত্যে পৌঁছানো সম্ভব না হওয়ায় অ্যাসোসিয়েশন অব সাউথ ইস্ট এশিয়ান নেশন্স (আসিয়ান) কোনো যৌথ বিবৃতি সই না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের একজন জ্যেষ্ঠ প্রতিরক্ষা কর্মকর্তার দাবি, চীন আসিয়ানভূক্ত দেশগুলোকে প্রভাবিত করেছে। এ কারণেই তারা কোনো বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেনি।

এদিকে চীনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অভিযোগ, দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার বাইরের `সুনির্দিষ্ট কয়েকটি দেশ` জোর করে যৌথ ঘোষণার বিষয়বস্তুতে নাক গলানোর চেষ্টা করেছে।

একটি যৌথ বিবৃতি ইস্যু না হওয়ার জন্য তারাই পুরোপুরি দায়ী।" সুনির্দিষ্ট দেশ বলতে যুক্তরাষ্ট্র ও জাপানকেই বুঝিয়েছে চীন।

আসিয়ানভূক্ত দেশগুলো দক্ষিণ চীন সাগরের মালিকানা নিয়ে চলমান বিরোধের একটি শান্তিপূর্ণ সমাধানের উপায় খুঁজছে এবং যে কোনো মূল্যে উন্মুক্ত সাগর বা আকাশে সংঘর্ষ এড়িয়ে যেতে চাইছে। হিশামুদ্দিনের স্বাক্ষর করা একটি কপি ভুলবশত গণমাধ্যমের হাতে এসে পড়লে তাতে এমনটিই দেখা যায়।

সম্মেলনে আসিয়ান ভূক্ত ১০টি দেশের প্রতিরক্ষামন্ত্রীরা ছাড়াও অস্ট্রেলিয়া, চীন, ভারত, জাপান, যুক্তরাষ্ট্রসহ আরো কয়েকটি দেশের প্রতিরক্ষামন্ত্রীরা অংশ নেন। গত সপ্তাহে দক্ষিণ চীন সাগরে চীনের তৈরি একটি কৃত্রিম দ্বীপের ১২ নটিক্যাল মাইলের মধ্য দিয়ে টহল দেয় যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষেপণাস্ত্রবাহী একটি যুদ্ধজাহাজ।

দক্ষিণ চীন সাগরের ওই এলাকাটিসহ অধিকাংশ এলাকা নিজেদের বলে দাবি করছে চীন। সেখানে মার্কিন যুদ্ধজাহাজ টহল দেয়ায় তারা ক্ষোভ প্রকাশ করেছে এবং যুক্তরাষ্ট্রকে সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, যুক্তরাষ্ট্র তাদের `উসকানি মূলক কার্যক্রম` বন্ধ না করলে ছোট্ট একটি দুর্ঘটনাই দক্ষিণ চীন সাগরে সংঘর্ষ উসকে দিতে পারে।

এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে বলা হয়, তারা `স্বাধীন নৌচলাচলের` অংশ হিসেবে দক্ষিণ চীন সাগরে জাহাজ পাঠিয়েছে। বুধবার চীনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী চ্যাং ওয়ানকুয়ান বলেন, স্বাধীন নৌচলাচলের নামে `উত্তেজনা বৃদ্ধি` করা উচিত না।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী জন কার্টার সংবাদ সম্মেলনে বলেন, বৈঠকে প্রতিরক্ষামন্ত্রীদের একটি বিবৃতিতে একমত হতে না পারার বিষয়টি দক্ষিণ চীন সাগরে চীনের উদ্বেগজনক গতিবিধির ইঙ্গিত দিয়েছে।

মার্কিন জাহাজের টহলের বিষয়ে তিনি বলেন, "দক্ষিণ চীন সাগরে যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনীর জাহাজ চলাচল নতুন নয়। গত কয়েক দশক ধরেই এমনটি চলে আসছে। বরং সেখানে দ্বীপ তৈরি করা, মালিকানা দাবি করা এবং সামরিকীকরণের ঘটনাই নতুন নতুন ঘটছে।

২০০৬ সালে প্রথম আসিয়ান এর প্রতিরক্ষামন্ত্রীদের সম্মেলন হয়েছিল। সে বছর আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখার বিষয়ে তারা কথা বলেছিলেন। এ মাসেই আবারো আসিয়ান এবং পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর নেতাদের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।

এসকেডি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।