বেরোবিতে সাত হাজার শিক্ষার্থীর জন্য মাত্র ১৭টি কম্পিউটার
রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (বেরোবি) প্রতিষ্ঠার আট বছরেও সাত হাজার শিক্ষার্থীর ইন্টারনেট সুবিধার জন্য রয়েছে কেবল ১৭টি কম্পিউটার। চলতি অর্থবছরের বাজেটেও ইন্টারনেট খাতের জন্য রাখা হয়নি পৃথক বরাদ্দ। ফলে তথ্যসুবিধা থেকে বঞ্চিতই রয়ে গেছে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজার হাজার শিক্ষার্থী।
অনুসন্ধানে দেখা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ২১টি বিভাগের মধ্যে চার-পাঁচটি বিভাগে কম্পিউটার ল্যাব থাকলেও ইন্টারনেট সংযোগবিহীন অচলাবস্থায় পড়ে রয়েছে ল্যাবগুলো। অধিকাংশ বিভাগে কম্পিউটার ল্যাব না থাকায় ল্যাবের প্রয়োজন মেটাতে না পেরে শিক্ষার্থীরা কেন্দ্রীয় সাইবার সেন্টারে যান ল্যাব ক্লাস করতে। যেখানে ব্যবহার উপযোগী কম্পিউটারের সংখ্যা রয়েছে মাত্র ১৭টি। আর এই কম্পিউটার দিয়েই মিটছে বিশ্ববিদ্যালয়য়ের শিক্ষার্থীদের ল্যাব ও ইন্টারনেট চাহিদা। বিশ্ববিদ্যালয়ের সাইবার সেন্টারের এমন বেহাল দশায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন শিক্ষার্থীরা।
সাইবার সেন্টারে ৩০টি কম্পিউটার থাকলেও অধিকাংশই দীর্ঘদিন ধরে অচল। কর্তৃপক্ষকে বারবার বিষয়টি অবহিত করার পরও কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয়নি বলে জাগো নিউজকে জানান শিক্ষার্থীরা। তারা আরো জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ে বিনামূল্যে একমাত্র সাইবার সেন্টারে ইন্টারনেট ব্যবহারের সুবিধা থাকলেও অধিকাংশ বিভাগের ল্যাব ক্লাসের জন্য ব্যবহার হচ্ছে এটিই। ইন্টারনেটের গতি নিয়েও হতাশ শিক্ষার্থীরা।
এছাড়া বিজনেজ স্টাডিজ অনুষদভুক্ত ল্যাব, অর্থনীতি বিভাগ ও পরিসংখ্যান বিভাগের ল্যাব রীতিমতো অচল হয়ে পড়ে আছে। এ সকল বিভাগের শিক্ষার্থীরা জানান, ল্যাবে ইন্টারনেট সুবিধা না থাকায় তারা প্রয়োজনীয় তথ্যসুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। বিশ্ববিদ্যালয়য়ের প্রায় সব বিভাগেই কম্পিউটার কোর্সটি পড়ানো হয় বলে বিভাগ সূত্রে জানা গেলেও শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, পর্যাপ্ত ল্যাব সুবিধা না থাকায় কম্পিউটার ছাড়াই ক্লাস করতে হয় তাদের।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জনিয়ারিং ও ইলেক্ট্রনিক্স অ্যান্ড টেলিকমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের মত গুরুত্বপূর্ণ দুই বিভাগের ল্যাবে নেই ইন্টারনেট সুবিধা। এ বিভাগের শিক্ষার্থীরা বলেন, তথ্য সুবিধা পেতে বাধ্য হয়েই সাইবার সেন্টারে যেতে হয়। তবে শিক্ষার্থীদের চাপে খুব কমদিনই ইন্টারনেট ব্যবহারের সুযোগ পেয়ে থাকি।
বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. তুহিন ওয়াদুদ বলেন, সাত হাজার শিক্ষার্থীর প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল প্রযুক্তি ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে। ফলে শিক্ষার্থীরা তথ্য সুবিধা না পেয়ে প্রযুক্তি বিমুখ হচ্ছে।
সাত হাজার শিক্ষার্থীর জন্য ১৭টি কম্পিউটার যথেষ্ট কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের ডিন এবং সাইবার সেন্টারের পরিচালক ড. মো. তাজুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, ‘সাত হাজার শিক্ষার্থী তো এক সঙ্গে আসে না। তাই এটা কোন সমস্যাই নয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. একেএম নুর-উন-নবী জাগো নিউজকে বলেন, সমস্যাটি সম্পর্কে জানি। সমস্যা দ্রুতই সমাধানের চেষ্টা চলছে। এছাড়া শিক্ষার্থীদের ইন্টারনেট সুবিধায় জানুয়ারি থেকে ক্যাম্পাসে ফাইবার অপটিক সংযোগ চালুর ব্যাপারেও জানান তিনি।
এসএস/এআরএস/পিআর