ব্লগার হত্যা : অভিজ্ঞতার আলোকে মামলার তদন্ত হচ্ছে
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া ও পাবলিক রিলেসন্স বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মুনতাসিরুল ইসলাম বলেছেন, প্রকাশনা সংস্থা জাগৃতির স্বত্ত্বাধিকারী ফয়সাল আরেফিন দীপন হত্যা ও শুদ্ধস্বরে হামলার ঘটনার মোটিভ উদ্ধারে তথ্যপ্রযুক্তিগত সহায়তায় তদন্ত চলছে। এজন্য সোর্স নিয়োগ করা হয়েছে। সিসি টিভি ফুটেজও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অন্যান্য ব্লগার হত্যা মামলার তদন্তের অভিজ্ঞতাও বিবেচনায় নেয়া হচ্ছে।
মঙ্গলবার দুপুর দেড়টায় নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি। তিনি আরও বলেন, ‘পুলিশ প্রযুক্তির পাশাপাশি ম্যানুয়ালিভাবে তদন্ত কাজ পরিচালনা করছে। ঘটনার পর পৃথকভাবে দায়েরকৃত মামলা দুটি থানা পুলিশ তদন্ত করে আসছিল। তবে পাশাপাশি র্যাব ও ডিবি পুলিশও ছায়া তদন্ত কাজ করে আসছিল। তদন্তের অগগ্রতি ও গুরুত্ব বুঝে মামলা ডিবিতে হস্তান্তরের নির্দেশ দিয়েছেন ডিএমপি কমিশনার।
শাহবাগের আজিজ সুপার মার্কেটে দীপন হত্যা মামলার তদন্ত করবেন ডিবি দক্ষিণ টিম এবং শুদ্ধস্বরে হামলার ঘটনায় দায়ের করা মামলা তদন্ত করবে ডিবি পশ্চিম টিম। এ বিষয়ে ডিএমপির ডিসি (মিডিয়া) বলেন, আমরা এখন পর্যন্ত তদন্তের প্রাথমিক পর্যায়ে। তবে এর আগে অন্যান্য ব্লগার হত্যা মামলায় আমরা চার্জশিট দিয়েছি। বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদও করেছি। এসব ঘটনায় মামলার তদন্তের অভিজ্ঞতার আলোকে আমাদের মনে হয়েছে আনসাররুল্লাহ বাংলা টিম এ কাজ করে থাকতে পারে। তবে এ বক্তব্য আমাদের তদন্তের কারণে নয় অভিজ্ঞতার আলোকে বলছি।
আজিজ সুপার মার্কেটে ঘটনার দিন ৫টি গেইটে ৫টি সিসি টিভি ক্যামেরা লাগানো ছিল। কিন্তু ৫টির মধ্যে ২টিই বন্ধ ছিল। ওই সিসি টিভি ক্যামেরার ফুটেজ থেকে কী বিশেষ কিছু পাবেন বলে মনে করেন? -এমন প্রশ্নে মুনতাসিরুল ইসলাম বলেন, আমরা বলছি তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় তদন্ত করছি। সোর্সও নিয়োগ করেছি। তদন্তের প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছি। আপাতত আমরা এ বিষয়ে বেশি কিছু বলছি না।
শুদ্ধস্বরের আশেপাশে এলাকায় সিসি টিভি ক্যামেরা না থাকায় তদন্তে প্রভাব পড়বে কি-না জানতে চাইলে তিনি বলেন, “হত্যা চেষ্টা মামলার তদন্তের জন্য সিসি টিভি ফুটেজই এক মাত্র ইনডিকেটর নয়। আমরা অন্যান্য বিষয়ও অবজার্ভ করছি। যেমন প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনা, ভিকটিমদের বক্তব্য ও জব্দকৃত আলামত। যেহেতু ডিবিতে মামলা হস্তান্তর হয়েছে সুতরাং ডিবি গুরুত্বে সঙ্গে বিষয়টি খতিয়ে দেখবে।”
উল্লেখ্য, গত শনিবার দুপুরে রাজধানীর লালমাটিয়ায় শুদ্ধস্বর প্রকাশনীর কর্ণধার আহমেদুর রশিদ চৌধুরী টুটুলসহ ৩ জনের উপর হত্যার হামলা চালায় দুর্বিত্তরা। অপর দুজন হচ্ছেন- সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার ও লেখক তারিক রহিম এবং কবি ও লেখক সুদীপ কুমার বর্মন (রনদীপন বসু)।
একই দিন সন্ধ্যার দিকে শাহবাগে আজিজ সুপার মার্কেটে জাগৃতি প্রকাশনার স্বত্ত্বাধিকারী ফয়সাল আরেফিন দীপনকে কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। পরে মার্কেটের তৃতীয় তলার ১৩২ নম্বর দোকান থেকে তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
জাগৃতি প্রকাশনার স্বত্ত্বাধিকারী ফয়সাল আরেফিন দীপনকে কুপিয়ে হত্যার ৪৮ ঘণ্টা পর তার স্ত্রী রাজিয়া রহমান বাদি হয়ে শাহবাগ থানায় একটি মামলা করেছেন। এছাড়া একই দিনে লালমাটিয়ায় হামলার ঘটনায় মোহাম্মদপুর থানায় আরেকটি মামলা করেছেন প্রকাশনা সংস্থা শুদ্ধস্বরের মালিক আহমেদুর রশীদ চৌধুরী (টুটুল)। হাসপাতাল থেকে আহমেদুরের স্বাক্ষর নিয়ে মামলাটি করা হয়। উভয় মামলায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করা হয়েছে।
জেইউ/আরএস/পিআর