আরাকান নেতা রেনেজুর পরবর্তী শুনানি ১৮ নভেম্বর
মিয়ানমারের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন আরাকান আর্মির শীর্ষ নেতা ডা. রেনিন সোয়ে ওরফে রেনেজু মারমাকে সোমবার আদালতে হাজির করেছে পুলিশ। দুপুরে রাঙামাটি জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহসেন আলীর আদালতে হাজির করলে তাকে জেলহাজতে পাঠান আদালত।
একই সঙ্গে পরবর্তী শুনানির জন্য পুলিশকে ১৮ নভেম্বর আবার আদালতে হাজির করার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। আদালতের নির্দেশে বর্তমানে রাজস্থলী থানা পুলিশের হেফাজতে তাকে রাঙামাটি জেলা কারাগারে রাখা হয়েছে। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও রাজস্থলী থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অহিদ উল্লাহ সরকার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
ওসি জানান, এর আগে পাঁচ দিনের রিমান্ড শেষে ১৯ অক্টোবর রেনিন সোয়েকে আদালতে হাজির করা হলে তাকে জেলে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন রাঙামাটি জেলা ও দায়রা জজ আদালতের অতিরিক্ত চিফ জুডসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সাবরিনা আলীর আদালত। পাশাপাশি আদালতের দেয়া আদেশে সোমবার আরেক দফা শুনানির জন্য আদালতে হাজির করা হয়। এরপর তার বিরুদ্ধে করা পুলিশের তিন মামলার পরবর্তী শুনানির জন্য ১৮ নভেম্বর ধার্য করেছেন আদালত।
রাজস্থলী থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অহিদ উল্লাহ সরকার জাগো নিউজকে বলেন, বহুল আলোচিত মিয়ানমারের বিদ্রোহী সংগঠন আরাকান আর্মির ওই শীর্ষনেতা রেনিন সোয়ের বিরুদ্ধে প্রথমে অবৈধ বিদেশি অনুপ্রবেশ এবং সন্ত্রাস দমন আইনে পৃথক দুটি মামলা করে রাজস্থলী থানা পুলিশ। দীর্ঘদিন পলাতক থাকার পর ১৩ অক্টোবর মধ্যরাতে পরিচালিত এক অভিযানে তাকে রাঙামাটির রাজস্থলীর বাঙালহালিয়া ইউনিয়নের ইসলামপুর নামক এলাকার আদর্শ নতুনপাড়া থেকে তাকে গ্রেফতার করে রাজস্থলী থানা পুলিশে হস্তান্তর করে যৌথবাহিনী। গ্রেফতারের পর রেনিন সোয়ের বিরুদ্ধে মুদ্রা পাচার আইনে আরেকটি মামলা করে রাজস্থলী থানা পুলিশ। তিনটি মামলায় ১৪ অক্টোবর রাঙামাটি জেলা ও দায়রা জজ আদালতের নির্দেশে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেয় রাজস্থলী থানা পুলিশ।
তিনি আরও জানান, রিমান্ডে পুলিশি জেরায় বাংলাদেশে আরাকান আর্মির তৎপরতা সম্পর্কে অনেক চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছেন গ্রেফতারকৃত আরাকান আর্মি নেতা রেনিন সোয়ে। কিন্তু মামলার তদন্তের স্বার্থে সেগুলো প্রকাশ করা যাবে না।
উল্লেখ্য, ২৬ আগস্ট বান্দরবানের থানচির বড় মদকে বিজিবির একটি টহল দলের ওপর গুলিবর্ষণ করে হামলা চালায় আরাকান আর্মি। ওই ঘটনার রাতে রাঙামাটির রাজস্থলীতে ডা. রেনিন সোয়ের সুরম্য বাড়িতে অভিযান চালায় যৌথবাহিনী। ওই সময় তার বাড়ি থেকে ঘোড়া, মোটরসাইকেল, ল্যাপটপ, ক্যামেরা, আরাকান আর্মির পোশাক উদ্ধার করা হয়। বেশ কিছু সরঞ্জাম উদ্ধারসহ তার সহযোগী আরাকান আর্মির সদস্য অংনু ইয়ং রাখাইনকে আটক করা হয়। পরদিন ২৮ আগস্ট বাড়ির দুই কেয়ারটেকার মংশৈ অং মারমা ও জসি অং মারমাকে আটক করে পুলিশ।
ওই ঘটনায় রেনিন সোয়েকে প্রধান আসামি করে রাজস্থলী থানা পুলিশের করা পৃথক দুটি মামলায় মংশৈ অং মারমা ও জসি অং মারমাও বর্তমানে রাঙামাটি কারাগারে রয়েছেন।
সুশীল প্রসাদ চাকমা/এমজেড/পিআর