জলবায়ু পরিবর্তনে উন্নত দেশের কাছে ক্ষতিপূরণ আদায় করতে হবে
সংসদ সদস্যসহ জনপ্রতিনিধি ও সংশ্লিষ্ট প্রতিনিধিরা বলেছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবের কারণে উপকূলীয় এলাকায় ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস ও নদীভাঙনসহ প্রাকৃতিক দুর্যোগ বেড়েছে। আর প্রকৃতির এমন আচরণের জন্য দায়ী উন্নত দেশগুলো। যাদের কারণে পরিবেশ দূষণ বাড়ছে। তাই উন্নত দেশগুলোর কাছ থেকে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ক্ষতিপূরণ আদায়ে তৎপরতা বাড়াতে হবে।
‘আম্ফান পরবর্তী সময়ে কেমন আছে উপকূলবাসী’ শীর্ষক অনলাইন সংলাপে তারা এ আহ্বান জানান। মঙ্গলবার এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
নাগরিক সংগঠন সুন্দরবন ও উপকূল সুরক্ষা আন্দোলন এবং বেসরকারি সংস্থা লিডার্স আয়োজিত এই সংলাপে সূচনা বক্তব্য উত্থাপন করেন সুন্দরবন ও উপকূল সুরক্ষা আন্দোলনের সমন্বয়ক নিখিল চন্দ্র ভদ্র। প্রবাস দর্পণ সম্পাদক রূপচাঁদ দাশ রুপকের সঞ্চালনায় সংলাপে অংশ নেন সংসদ সদস্য নূরুন্নবী চৌধুরী শাওন ও অ্যাডভোকেট গ্লোরিয়া ঝর্ণা সরকার, মোংলা উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মো. ইকবাল হোসেন, লিডার্সের নির্বাহী পরিচালক মোহন কুমার মণ্ডল, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) বাগেরহাট জেলা আহ্বায়ক মো. নূর আলম, সাতক্ষীরার সাংবাদিক শরীফুল্লাহ কায়সার সুমন প্রমুখ।
সংলাপে উপকূলে বেড়িবাঁধ নির্মাণে সরকারের পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে সংসদ সদস্য নূরুন্নবী চৌধুরী বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে প্রাকৃতিক দুর্যোগ বেড়েছে। এতে উপকূলের জনগণের ঝুঁকিও বেড়েছে। সরকার এই ঝুঁকি মোকাবিলায় আপ্রাণ চেষ্টা করছে। বাজেটের সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও ইতোমধ্যে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বেশকিছু প্রকল্প নেয়া হয়েছে। দীর্ঘমেয়াদি আরও কিছু প্রকল্প নেয়া হবে।
সংসদ সদস্য গ্লোরিয়া ঝর্ণা সরকার বলেন, আম্ফান পরবর্তী সময়ে আমরা প্রধানমন্ত্রীর সহযোগিতা নিয়ে জনগণের পাশে দাঁড়িয়েছি। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে ভেঙে যাওয়া বাঁধ সংস্কার করেছি। তারপরও উপকূলের মানুষের নানা ঝুঁকি রয়েছে। এই ঝুঁকি মোকাবিলায় সরকারি ও বেসরকারি সংস্থাগুলোকে সম্মিলিতভাবে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।
সংলাপে বক্তারা ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরামের (সিভিএফ) দূত সায়মা ওয়াজেদ পুতুলকে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ঝুঁকিতে থাকা দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলীয় অঞ্চল সফরের আহ্বান জানিয়ে বলেন, উন্নত বিশ্বের অমানবিক আচরণের কারণে উপকূলের জনগণের দুর্ভোগের কথা বিশ্ববাসীর কাছে তুলে ধরা দরকার। দায়ী দেশগুলোর কাছ থেকে ন্যায্য ক্ষতিপূরণ আদায় করতে হবে। জলবায়ু পরিবর্তন ও দুর্যোগকে মাথায় রেখে স্থায়ী ও মজবুত বেড়িবাঁধ নির্মাণ এবং নিরাপদ খাবার পানির ব্যবস্থা করতে হবে।
বক্তারা আরও বলেন, অতীতে বেড়িবাঁধ নির্মাণে বিভিন্ন প্রকল্প নেয়া হলেও আমলাতান্ত্রিক জটিলতা ও অনিয়মের কারণে প্রকল্পগুলো যথাযথভাবে বাস্তবায়িত হয়নি। ঘূর্ণিঝড় সিডর ও আইলার পর হাজার হাজার কোটি টাকার প্রকল্প খুব বেশি কাজে আসেনি। তাই সঠিক গবেষণার মাধ্যমে টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণে দীর্ঘমেয়াদি প্রকল্প গ্রহণ করতে হবে। জবাবদিহি নিশ্চিত করতে বাঁধনির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণে গৃহীত প্রকল্প বাস্তবায়নে মনিটারিং জোরদার করতে হবে। বাঁধ রক্ষণাবেক্ষণে জরুরি তহবিল গঠন ও বাঁধব্যবস্থাপনায় স্থানীয় সরকারকে সম্পৃক্ত করতে হবে। এছাড়া উপকূলের উন্নয়নে পৃথক বোর্ড গঠনের দাবি জানান তারা।
এইচএস/বিএ/জেআইএম