ইউএনও ওয়াহিদা কথা বলছেন, ডান হাত-পা উঠাতে পারছেন না

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৪:৩৮ পিএম, ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২০

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া বলেছেন, দুর্বৃত্তদের হামলায় গুরুতর আহত হয়ে চিকিৎসাধীন দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ওয়াহিদা খানমের সেন্স (অনুভূতি) আছে, কথাও বলছেন। তবে ভয় ইনফেকশন (সংক্রমণ) নিয়ে। ইনফেকশন না হলে শারীরিক অবস্থার উন্নতিটা স্বাভাবিক হবে।

শনিবার (৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাজধানীর ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্স হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ইউএনও ওয়াহিদা খানমের শারীরিক অবস্থার খোঁজ-খবরের পর সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।

অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া বলেন, অপারেশনের পর তিনি কথা বলতে পারছেন। বর্তমানে তার অনুভূতি আছে, তবে শক্তি নেই। ডান হাত, ডান পা উঠাতে পারছেন না। যেহেতু উনার মাথার অংশটা কাটা ছিল এবং ময়লা ছিল অনেক, এর ফলে ওই জায়গাটাতে ইনফেকশন হওয়ার সম্ভাবনা আছে। এটাই এখন আমাদের ভয়।

এর আগে শনিবার সকালে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্স হাসপাতালের নিউরো ট্রমা বিভাগের প্রধান নিউরোসার্জন ও গঠিত মেডিকেল বোর্ডের প্রধান মোহাম্মদ জাহিদ হোসেন বলেন, ওয়াহিদা খানমের অপারেশন সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। তবে রয়েছে সংক্রমণের ঝুঁকি, সে জন্য বোর্ডের চিকিৎসকরা তাকে পর্যবেক্ষণে রেখেছেন।

তিনি বলেন, রোববার রাতে তার অপারেশনের ৭২ ঘণ্টা অতিবাহিত হবে। পরশু সকালে তার সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে- তাকে আইসিইউতে অবজারভেশনে রাখা হবে নাকি বেডে স্থানান্তর করা হবে। এটা বলতে পারি যে তার অবস্থার উন্নতি হচ্ছে।

মোহাম্মদ জাহিদ হোসেন বলেন, তার মাথার বাঁ-দিকটা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ডান পাশের কিছু অংশ প্যারালাইজড অবস্থায় আছে। তিনি তার স্বামীর সঙ্গে কথা বলেছেন। পরিচিতদের তিনি চিনতে পারছেন।

প্রসঙ্গত, গত বুধবার (২ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ৩টার দিকে দুর্বৃত্তরা ঘোড়াঘাট উপজেলা পরিষদ চত্বরে ইউএনও ওয়াহিদা খানমের সরকারি বাসভবনে প্রবেশ করে। হত্যার উদ্দেশ্যে তারা ইউএনও ওয়াহিদা খানম ও তার বাবা ওমর আলীকে কুপিয়ে এবং হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করে গুরুতর জখম করে।

পরে সকালে আহত বাবা-মেয়েকে প্রথমে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। অবস্থার অনতি হলে ইউএনও ওয়াহিদাকে বিমানবাহিনীর হেলিকপ্টারে ঢাকায় আনা হয়। তিনি এখন ঢাকার আগারগাঁওয়ে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্স ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তার বাবা রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

এ ঘটনায় বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) জাকির হোসেনকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন রংপুর বিভাগীয় কমিশনার আব্দুল ওয়াহাব। এ হামলার ঘটনায় ইউএনও ওয়াহিদার ভাই শেখ ফরিদ বাদী হয়ে বৃহস্পতিবার (৩ সেপ্টেম্বর) রাতে ঘোড়াঘাট থানায় মামলা করেন।

ইউএনও ওয়াহিদা খানম ও তার বাবার ওপর হামলার ঘটনায় শুক্রবার দিনভর অভিযান চালিয়ে ছয়জনকে আটক করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তারা হলেন- ঘোড়াঘাট উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক (বহিষ্কৃত) জাহাঙ্গীর আলম (৪২), উপজেলা যুবলীগের সদস্য (বহিষ্কৃত) আসাদুল ইসলাম (৩৫), শিংড়া ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি দক্ষিণ দেবীপুর গ্রামের গোলাম মোস্তফা আদুর ছেলে মাসুদ রানা (৪০), নৈশপ্রহরী নাহিদ হোসেন পলাশ (৩৮), চকবামুনিয়া বিশ্বনাথপুর এলাকার মৃত ফারাজ উদ্দিনের ছেলে রঙমিস্ত্রি নবিরুল ইসলাম (৩৫) ও একই এলাকার খোকার ছেলে সান্টু চন্দ্র দাস (২৮)।

জেইউ/বিএ/এমএস

টাইমলাইন  

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।