সাবরিনার দুই এনআইডি : কেউ জড়িত থাকলে ব্যবস্থা

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৩:৫৬ পিএম, ২৬ আগস্ট ২০২০
ফাইল ছবি

অডিও শুনুন

করোনাভাইরাস পরীক্ষা নিয়ে প্রতারণার অভিযোগে গ্রেফতার জেকেজি হেলথকেয়ারের চেয়ারম্যান ডা. সাবরিনা চৌধুরীকে দুটি জাতীয় পরিচয়পত্র দেয়ার সঙ্গে কেউ জড়িত থাকলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন সিনিয়র সচিব মো. আলমগীর।

বুধবার (২৬ আগস্ট) সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ তথ্য জানান। এর আগে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) থেকে ডা. সাবরিনার দ্বৈত ভোটার হওয়ার বিষয়টির তথ্য পেয়ে তার ব্যাখ্যা চেয়ে নির্বাচন কমিশনকে চিঠি দেয়া হয়।

ইসি সচিব বলেন, আমরা দুদকের চিঠি পেয়েছি। জাতীয় পরিচয়পত্রের বিষয়টি দেখে কমিশনের জাতীয় পরিচয়পত্র অনুবিভাগ। আমরা সেই বিভাগকে চিঠির বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য জানাতে বলেছি। আজকের মধ্যে তারা প্রতিবেদন দেবে। তারপর এ বিষয়ে আমরা বিস্তারিত জানাতে পারবো। এর আগে বিষয়টি সম্পর্কে কিছু বলতে পারছি না। দ্বৈত ভোটারের বিষয়টি প্রমাণিত হলে, আর এর সঙ্গে কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারীর সংশ্লিষ্টতা যদি পাওয়া যায়, তাহলে আমরা তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।

প্রসঙ্গত, ডা. সাবরিনা ২০১৬ সালের ভোটার তালিকা হালনাগাদের সময় দ্বিতীয়বার ভোটার হন। একটিতে ভোটার হন সাবরীনা শারমিন হোসেন নাম দিয়ে। জন্মতারিখ ১৯৭৮ সালের ২ ডিসেম্বর। অন্যটিতে ১৯৮৩ সালের ২ ডিসেম্বর। দুটি আইডিতে বয়সের ফারাক পাঁচ বছর

একটিতে স্বামীর নাম হিসেবে ব্যবহার করেছেন আর এইচ হক। দ্বিতীয়টিতে স্বামীর নাম লেখা হয়েছে আরিফুল চৌধুরী। একটিতে বাবার নাম সৈয়দ মুশাররফ হোসেন ও মায়ের নাম কিশোয়ার জেসমীন অপরটিতে মা-বাবার নাম পরিবর্তন করে সৈয়দ মুশাররফ হসেন ও জেসমিন হুসেন দিয়েছেন। দুই এনআইডিতে দুই ঠিকানাও ব্যবহার করেছেন তিনি। একটিতে মোহাম্মদপুরের পিসিকালচার হাউজিং সোসাইটির ঠিকানা অন্যটিতে বাড্ডা এলাকার প্রগতি সরণির আনোয়ার ল্যান্ডমার্কের ঠিকানা ব্যবহার করা হয়েছে।

এর আগে করোনাকাণ্ডে গ্রেফতার রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান সাহেদ করিমের এনআইডি স্থগিত করে ইসি। তিনি নিজের নাম সংশোধন করে ‘সাহেদ করিম’ থেকে হন ‘মোহাম্মদ সাহেদ’। মিথ্যা তথ্য দিয়ে এ কাজ করেন তিনি। বর্তমানে এর তদন্ত চলছে।

ভুয়া করোনার রিপোর্ট দেয়ার অভিযোগে গত ৫ আগস্ট জেকেজি হেলথকেয়ারের চেয়ারম্যান চিকিৎসক সাবরিনা আরিফ চৌধুরীসহ আটজনের বিরুদ্ধে ঢাকার সিএমএম আদালতে অভিযোগপত্র দেয় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিএমপি)। ২০ আগস্ট সাবরিনা ও আরিফুল হক চৌধুরীসহ আটজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত।

অভিযোগপত্রে বলা হয়, করোনা জালিয়াতিতে প্রধান ভূমিকা পালন করেছেন জেকেজির সাবরিনা ও তার স্বামী জেকেজির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আরিফুল হক চৌধুরী। এ দুজন ছাড়াও মামলার অন্য ছয় অভিযোগপত্রভুক্ত আসামি হলেন জেকেজির সমন্বয়ক সাঈদ চৌধুরী, জেকেজির সাবেক কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির, তার স্ত্রী তানজিনা পাটোয়ারী, বিপ্লব দাস, শফিকুল ইসলাম ও জেবুন্নেসা। মামলা থেকে মামুনুর রশীদ নামের আসামিকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। মামলা করার ৪২ দিনের মাথায় অভিযোগপত্র দেয়া হয়।

করোনার নমুনা সংগ্রহ ও ভুয়া রিপোর্ট দেয়ার অভিযোগে গত ২৩ জুন জেকেজি হেলথকেয়ারের কর্মচারী হুমায়ুন কবির ও তার স্ত্রী তানজিনা পাটোয়ারীকে গ্রেফতার করে তেজগাঁও থানা পুলিশ। পরদিন ২৪ জুন হুমায়ুন কবির ও তানজিনা ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। জবানবন্দিতে হুমায়ুন কবির জেকেজি হেলথকেয়ারে চাকরি করার সময় কীভাবে করোনার নমুনা সংগ্রহ এবং ভুয়া রিপোর্ট তৈরি করেছেন, সে ব্যাপারে বিস্তারিত তুলে ধরেন। হুমায়ুন কবির জবানবন্দিতে বলেন, করোনার নমুনা সংগ্রহ করে তা পরীক্ষা না করে ড্রেনে ফেলে দিতেন। এছাড়া শফিকুল ইসলামও আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

এইচএস/এমএসএইচ/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।