চট্টগ্রামে মা-ছেলে খুন : সন্দেহের তীর পাতানো ভাইয়ের দিকে

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক চট্টগ্রাম
প্রকাশিত: ১২:১৩ পিএম, ২৫ আগস্ট ২০২০
নিহত গুলনাহারের মেয়ে ময়ুরীর আহাজারি

চট্টগ্রাম নগরের চান্দগাঁও থানা এলাকায় মা ও ছেলেকে গলাকেটে হত্যার ঘটনায় নিহত গুলনাহার বেগমের এক পাতানো ভাইয়ের দিকে উঠেছে সন্দেহের তীর। নিহতের একমাত্র মেয়ে ময়ুরীর (১৪) দেয়া তথ্য অনুযায়ী ফারুক নামে ওই দোকান মালিককে খুঁজছে পুলিশ। তবে ঘটনার পর থেকেই ফারুক পলাতক আছেন।

এই হত্যাকাণ্ডের পেছনে ফারুক নামে এক ব্যক্তিকে সন্দেহ করছে ময়ুরী। ফারুক গুলনাহার বেগমের ‘পাতানো ভাই’ বলে জানিয়েছে সে।

সোমবার (২৪ আগস্ট) রাতে পুরাতন চান্দগাঁও থানার পাঠানিয়া গোদা এলাকার একটি ভাড়াবাড়ি থেকে মা ও ছেলের মরদেহ উদ্ধার করে চান্দগাঁও থানা পুলিশ। নিহতের শরীর ও গলায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার (অপরাধ ও অভিযান) এসএম মোস্তাক আহমেদ খান ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে জানান, নিহত গুলনাহারের একমাত্র মেয়ে ময়ুরীর দেয়া তথ্য সামনে রেখে তদন্ত এগোচ্ছে। সে জানিয়েছে, ফারুক নামে একজন তাদের বাসায় আসা-যাওয়া করতেন। কিছুদিন আগে ফারুকের সঙ্গে গুলনাহারের ঝগড়া হয়। তারপর থেকে গুলনাহারের ওপর ক্ষিপ্ত ছিলেন ফারুক।

তিনি বলেন, ‘খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ফারুক বহদ্দারহাট এলাকার খাজা রোডের বাসিন্দা। তিনি বহদ্দারহাটে একটি দোকান পরিচালনা করতেন। ঘটনার পর থেকে পলাতক রয়েছেন। ফারুকের বিষয়টি মাথায় রেখে তদন্তে এগিয়ে নিচ্ছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।’

এদিকে নিহত গুলনাহারের মেয়ে ময়ুরী পুলিশকে জানিয়েছেন, সে নগরের একটি পোশাক কারখানায় কাজ করে। সকালে মা-ভাইকে রেখে গিয়েছিলেন বাসায়। কিন্তু রাত ৮টার দিকে গার্মেন্টস থেকে বাসায় ফিরে মা-ভাইয়ের কোনো সাড়া শব্দ পাচ্ছিল না। পরে মা গুলনাহার বেগমকে বাথরুমে ও ভাই রিফাতকে বাথরুমের বাইরে রক্তাক্ত অবস্থায় দেখতে পায় সে। তার চিৎকারে প্রতিবেশীরা এগিয়ে এসে পুলিশকে খবর দেয়। জানা গেছে, নিহত গুলনাহার স্বামী পরিত্যক্তা। নয় বছরের ছেলে রিফাত ও ১৪ বছর বয়সী মেয়ে ময়ূরীকে নিয়ে পাঠানিয়া গোদা এলাকার রমজান আলী সেরেস্তাদারের বাড়ির মহিউদ্দিনের ভাড়া বাসায় বসবাস করছিলেন।

চান্দগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতাউর রহমান খন্দকার জাগো নিউজকে বলেন, ‘গুলনাহারের স্বামী তাকে ছেড়ে গিয়ে আরেকজনকে বিয়ে করেছেন। তিনি বাসায় ও হোটেলে রান্নার কাজ করতেন। গার্মেন্টসে চাকরি করে তার মেয়ে ময়ুরী। রাতে কারখানা থেকে ফিরে ময়ূরী তার মায়ের মৃতদেহ বাথরুমে এবং রিফাতের মৃতদেহ রান্নাঘরে দেখতে পায়। এ সময় তার চিৎকারে প্রতিবেশীরা এগিয়ে আসে এবং পুলিশকে খবর দেয়।’

তিনি বলেন, ‘নিহতদের শরীরের বিভিন্ন অংশে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন আছে। ছেলে রিফাতের গলায় আছে কাটা দাগ। ঘর থেকে পুলিশ ভাঙা প্লেটের রক্তমাখা টুকরো উদ্ধার করেছে। ধারণা করা হচ্ছে, ভোঁতা কোনো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে পরে কাচের প্লেটের ধারালো অংশ দিয়ে খুঁচিয়ে তাদের হত্যা করা হয়েছে।’

‘লাশের ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে পরিষ্কার ধারণা পাওয়া যাবে। এ ঘটনায় সম্ভাব্য সবকিছু সামনে রেখে তদন্ত কাজ এগিয়ে যাচ্ছে। তবে এখনো কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি’, বলেন ওসি আতাউর রহমান খন্দকার।

এসআর/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।