অ্যামনেস্টি বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে অস্বীকার করেছে
৭১’এর মুক্তিযোদ্ধাদের বিচার দাবি করে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল সম্প্রতি যে বক্তব্য দিয়েছে তাতে তারা বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে অস্বীকার করেছে। শুধু তাই নয় তাদের এমন বক্তব্যের মাধ্যমে তারা নিজেদের বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী ও পাকিস্তানিদের ভূমিকায় উপস্থাপন করেছে।
শনিবার বিকেল ৪টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের (টিএসসি) সামনে আয়োজিত এক সমাবেশে বক্তারা এ মন্তব্য করেন।
সম্প্রতি অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের উদ্ধত্যপূর্ণ বক্তব্যের বিরুদ্ধে এক প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক মুক্তিজোট।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, অচিরেই অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালকে ক্ষমা চেয়ে তাদের বক্তব্য পরিহার করতে হবে। অন্যথায়, বাংলাদেশ সরকার যেন সংগঠনটিকে বাংলাদেশ থেকে বহিস্কার করে সে দাবিও জানানো হয়। একই সঙ্গে এদেশে তাদের সকল কার্যক্রম নিষিদ্ধেরও দাবি করেন বক্তারা।
সমাবেশে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুস বলেছেন, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল সম্প্রতি যে বক্তব্য দিয়েছে তাতে প্রকারান্তরে তারা আমাদের মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছে। তারা আমাদের স্বাধীনতাকে অস্বীকার করেছে। মুক্তিযোদ্ধাদের বিচার দাবি করে তারা ’৭১-এ পাকিস্তানিদের ভূমিকাকে সমর্থন করেছে।
তিনি আরো বলেন, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ও হিউম্যান রাইটস ওয়াচ নামের এ দুটি সংগঠন মিথ্যা তথ্য দিয়ে বারবার এদেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে। কখনো গণতন্ত্রের নাম দিয়ে, কখনো ধর্মের নাম দিয়ে আবার কখনো মানবাধিকারের নাম দিয়ে এদেশের বিরুদ্ধে বারবার ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।
সেক্টর কমান্ডার্স ফোরামের সহ-সভাপতি ম. হামিদ বলেন, এদেশের যেকোনো বিষয়ে নাক গলানো সাম্রাজ্যবাদি দেশগুলোর সংগঠনগুলোর প্রধান কাজ। আমেরিকায় যখন মানবাধিকার লঙ্ঘন হয় তখন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের মতো সংগঠনগুলো চুপ থাকে কারণ সেগুলো তাদের কাছে বৈধ। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বিএনপি-জামাতের লবিস্টের মতো কাজ করছে।
তিনি বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারে আমাদের আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্যে তারা এ ধরনের অপপ্রচার চালাচ্ছে। আমাদের বিচারব্যবস্থাকে তারা রুদ্ধ করতে চায়।
নাট্যকার মামুনুর রশীদ বলেন, আমেরিকা হিরোশিমা-নাগাসাকিতে বোমা মেরে লাখ লাখ মানুষ হত্যা করলেও তারা এখনো তার বিচার চায়নি। ইসরাইলের হামলায় ফিলিস্তিনে যখন লাখ লাখ শিশু-নারী নিহত হয় তখনো তারা বিচার চায় না। আর আমরা যখন ৪০ বছর আগে আমাদের ৩০ লাখ শহীদদের হত্যার বিচার করতে যাই তখনি তারা এর বিরুদ্ধে দাঁড়ায়।
বাংলাদেশ গণসঙ্গীত সমন্বয় পরিষদের সভাপতি ফকির আলমগীর বলেন, এ ধরণের সংগঠনগুলোর মুখোশ উন্মোচন করে তাদের ধৃষ্টতার জবাব দিতে হবে। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র রুখে দাঁড়াতে হবে।
আবৃত্তিশিল্পী রফিকুল ইসলামের সঞ্চালনায় প্রতিবাদ সমাবেশে আরো উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ পথনাটক পরিষদের সভাপতি মান্নান হীরা, বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক আখতারুজ্জামান, জয়বাংলা সাংস্কৃতিক ঐক্যজোটের সাধারণ সম্পাদক শেখ আবদুল কাদের প্রমুখ।
এমএইচ/একে/আরআইপি