স্থানীয় সরকার নির্বাচনের প্রতীক বিষয়ক গুজবে বিব্রত ইসি
‘স্থানীয় সরকার নির্বাচনে আর দলীয় প্রতীক ব্যবহার হবে না’- উল্লেখ করে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়ানো গুজবে বিব্রত নির্বাচন কমিশন (ইসি)। দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে বিভিন্ন দলের নেতাকর্মীরা এ বিষয়ে কমিশনে ফোন দিচ্ছেন। এছাড়া দেশের দুটি রাজনৈতিক দলের নীতিনির্ধারকও এ বিষয়ে ইসির কাছে জানতে চাচ্ছেন।
এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের সিনিয়র সচিব মো. আলমগীর বলেন, ‘স্থানীয় সরকার নির্বাচনে দলীয় প্রতীক বাদ দেয়ার কোনো প্রস্তাব বা এ সংক্রান্ত কোনো আইন সংশোধন করছে না ইসি। কমিশন ‘স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান নির্বাচন আইন, ২০২০’ শিরোনামের একটি আইনের খসড়া তৈরি করেছে। এটি মূলত পাঁচটি ভিন্ন ভিন্ন বিধিমালাকে একত্র করে একটি আইন হবে। আর আইন হবে বাংলায়।’
জানা যায়, পাঁচটি ভিন্ন ভিন্ন বিধিমালা নয়, আগামীতে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোর নির্বাচন হবে একটি আইনে। আর আইন হবে বাংলায়। এ জন্য ‘স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান নির্বাচন আইন, ২০২০’ শিরোনামের একটি আইনের খসড়া তৈরি করেছে নির্বাচন কমিশন। ১০ আগস্ট খসড়া আইনটি কমিশন সভায় উপস্থাপনও করা হয়।
স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের নির্বাচন পরিচালনার আইন বাংলায় করতে গিয়ে এর নির্বাচিত সদস্যদের পদবিও বাংলায় করা হচ্ছে। এ জন্য বিদ্যমান আইনে থাকা সিটি করপোরেশনের জায়গায় বাংলা অনুবাদ করে ‘মহানগর’ করা হচ্ছে। পৌরসভাকে ‘নগর ও নগর সভা’ ইউনিয়ন পরিষদকে ‘পল্লী পরিষদ’ ওয়ার্ডকে ‘মহল্লা’ করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
প্রস্তাবিত আইন অনুযায়ী মহানগরের মেয়রকে মহানগর আধিকারিক; পৌরসভার মেয়রকে পুরাধ্যক্ষ বা নগরপিতা; কাউন্সিলরকে পরিষদ সদস্য; উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যানকে উপজেলা পরিষদের প্রধান, উপ-প্রধান নামে বাংলায় রূপান্তর করার প্রস্তাব করা হয়েছে। আর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের ইউনিয়ন পরিষদ প্রধান এবং সদস্য রাখা হয়েছে।
এই সময় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে, ‘আগামীতে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে দলীয় প্রতীক থাকছে না’। বিশেষ করে আওয়ামী লীগের নেতারা এ ধরনের পোস্ট দেয়ায় বিষয়টি অনেকেই বিশ্বাস করেন।
এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের এক কর্মকর্তা জাগো নিউজকে বলেন, ‘এই ধরনের খবর ছড়িয়ে পড়ার পর ইসিতে একের পর এক ফোন আসছে। এমনকি ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নীতি নির্ধারণী নেতারাও ফোন দিচ্ছেন। অথচ এ বিষয়ে আমরা কিছুই জানি না। তাই ইসি এ নিয়ে বিব্রত।’
অবশ্য এ বিষয়ে স্থানীয় উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘দলীয় প্রতীকেই স্থানীয় সরকার নির্বাচন হবে। দলীয় প্রতীক ছাড়া এই মুহূর্তে স্থানীয় সরকারের কোনো নির্বাচন করার পরিকল্পনা সরকারের নেই। আসন্ন সিটি, ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনগুলো দলীয় প্রতীকেই হবে।’
এইচএস/এফআর/এমএস