করোনায় মৃত চিকিৎসকদের জাতীয় বীরের মর্যাদা দেয়ার ভাবনা
অডিও শুনুন
মহামারি নভেল করোনাভাইরাসে (কোভিড-১৯) আক্রান্ত ব্যক্তিদের চিকিৎসা প্রদান করতে গিয়ে চিকিৎসক, সেবক/সেবিকা, স্বাস্থ্যকর্মী, হাসপাতাল ও চিকিৎসা কেন্দ্র সংশ্লিষ্ট অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে যারা নিজেরা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে জীবন উৎসর্গ করেছেন বা করবেন, তাদেরকে জাতীয় বীরের মর্যাদা দেয়ার চিন্তাভাবনা করছে সরকার।
শুধু তাই নয়; শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্যরা যে সকল সুযোগ-সুবিধা পান, সেসব সুযোগ-সুবিধা তাদেরকেও দেয়া যায় কি-না, তা নিয়েও চিন্তাভাবনা চলছে। এছাড়া সেবাদানকারী অন্যান্য প্রতিষ্ঠানকে (যেমন ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা এবং ফায়ার সার্ভিস ইত্যাদি) একই ধরনের সুযোগ-সুবিধা প্রদান করা হবে কি না, তাও ভেবে দেখা হচ্ছে। হাইকোর্টের সুয়োমোটো (স্বতঃপ্রণোদিত) রুলের পরিপ্রেক্ষিতে এ ধরনের চিন্তাভাবনা করছে সরকার।
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
সূত্র জানায়, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের সেবা দানকারী চিকিৎসক, নার্স ও অন্যান্য স্বাস্থ্যসেবা কর্মী এবং হাসপাতালের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নিজেরা করোনা আক্রান্ত হলে তাদের যথাযথ মর্যাদা প্রদানের বিষয়ে সচিব, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগসহ অন্যদের কারণ দর্শাতে সুয়োমোটো রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। হাইকোর্টের রুলের বিষয়ে করণীয় ও সুপারিশ প্রণয়নের জন্য আট সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিতে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিবকে (প্রশাসন) আহ্বায়ক এবং যুগ্মসচিব/উপসচিবকে (আইন অধিশাখা) সদস্যসচিব করা হয়েছে।
কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন-মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ, অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ, আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগ এবং মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব অথবা যুগ্মসচিব পদমর্যাদার কর্মকর্তা।
বুধবার (১৯ আগস্ট) স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের উপসচিব (আইন অধিশাখা) মাকসুদা ইয়াসমিন স্বাক্ষরিত চিঠিতে এ তথ্য জানানো হয়। চিঠিতে কমিটির কর্মপরিধি বিষয়ে বলা হয়-
>> নভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের চিকিৎসা প্রদান করতে গিয়ে যেসব চিকিৎসক, সেবক সেবিকা, স্বাস্থ্যকর্মী, হাসপাতাল/ চিকিৎসা কেন্দ্র সংশ্লিষ্ট অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারী নিজেরা করোনায় আক্রান্ত হয়ে জীবন উৎসর্গ করবেন তাদেরকে জাতীয় বীরের মর্যাদা দেয়া যায় কি-না, সে বিষয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সুপারিশ প্রণয়ন।
>> শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারগণ যেসব সুযোগ-সুবিধা পান, সেসব সুযোগ-সুবিধা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে জীবন উৎসর্গকারী চিকিৎসক, সেবক/সেবিকা, স্বাস্থ্যকর্মী, হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্র সংশ্লিষ্ট সকল অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পরিবারকে প্রদান করা যাবে কি-না, সে বিষয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সুপারিশ প্রণয়ন। এবং
>> সেবা প্রদানকারী অন্যান্য প্রতিষ্ঠান যেমন-ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা এবং ফায়ার সার্ভিস ইত্যাদি প্রতিষ্ঠান এ রকম দাবি পেশ করবে কি-না, সে বিষয়ে সুপারিশ প্রণয়ন।
প্রয়োজনে কমিটিতে নতুন সদস্য যোগ করা যাবে। যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদনক্রমে কমিটি গঠন করা হলো বলে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়।
এমইউ/এসআর/পিআর