বাদশার কান্না হৃদয় ছুঁয়েছে কানাডাপ্রবাসীর

বিশেষ সংবাদদাতা
বিশেষ সংবাদদাতা বিশেষ সংবাদদাতা
প্রকাশিত: ০৩:৫৮ পিএম, ১৮ আগস্ট ২০২০

বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে দুই হাত হারানো যুবক বাদশা মিয়ার চোখের জল হৃদয় ছুঁয়েছে সুদূর কানাডায় বসবাসরত এক বাংলাদেশির। সেজন্য অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে কৃত্রিম দুটি হাত প্রতিস্থাপন করিয়ে বাদশা মিয়ার মুখে হাসি ফিরিয়ে দিতে চান তিনি। বাদশা যেন আবার কর্মক্ষম হতে পারেন, নিজ হাতে খেতে ও পোশাক পরতে পারেন, সে লক্ষ্যে কৃত্রিম হাত ক্রয় ও প্রতিস্থাপনে অস্ত্রোপচারের সব খরচ একাই বহন করবেন ওই প্রবাসী।

প্রবাসে বসে জাগো নিউজে প্রকাশিত ‘বাদশার আহাজারি’ শীর্ষক প্রতিবেদন পড়ে এবং ভিডিওতে বাদশার মর্মস্পর্শী দুর্ঘটনার বর্ণনা শুনে সেই বাংলাদেশি এই মানবিক উদ্যোগ নিয়েছেন। এরই অংশ হিসেবে প্রখ্যাত প্লাস্টিক সার্জন ডা. সামন্ত লাল সেনের সঙ্গে বাদশার বড় ভাই মোহাম্মদ আলীর যোগাযোগ করিয়েছেন তিনি।

আজ মঙ্গলবার (১৮ আগস্ট) সকালে জাগো নিউজের সঙ্গে আলাপকালে ডা. সামন্ত লাল সেন বলেন, অপেক্ষাকৃত তরুণ বয়সী বাদশা যেন কর্মক্ষম হয়ে উঠতে পারেন, সেজন্য তার দুটি কৃত্রিম হাত প্রতিস্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছেন ওই কানাডাপ্রবাসী। তিনি আমার সঙ্গে বাদশার ভাইয়ের যোগাযোগ করিয়েছেন। হৃদয়বান এ মানুষটি অস্ত্রোপচারের সব খরচ বহন করবেন বলে জানিয়েছেন।

jagonews24

শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের প্রধান সন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেন জানান, কৃত্রিম হাত তৈরিতে কত টাকা ব্যয় হবে, তা জানতে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ হয়েছে। তারা শিগগিরই তা জানাবে।

তিনি বলেন, কৃত্রিম হাত দুই ধরনের হয়। একটি মেকানিক্যাল, যা দিয়ে কাজ করা যায়। আরেকটি আর্টিফিসিয়াল, সেটি দিয়ে কোনো কাজ করা যায় না। আমার ব্যক্তিগত অভিমত বাদশা মিয়ার অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে একটি মেকানিক্যাল ও আরেকটি আর্টিফিসিয়াল হাত লাগিয়ে দিলে ভালো হবে।

প্রখ্যাত এই সার্জন বলেন, বাদশার মতো আরও অনেক রোগী রয়েছে দেশে। কারও হাত নেই, কারও পা নেই। এ ধরনের রোগীদের জন্য কৃত্রিম হাত-পা তৈরি ও অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে তাদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে দেয়ার লক্ষ্যে সরকারি পর্যায়ে প্রচেষ্টা চলছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এমন রোগীদের জন্য একটি ফান্ডও দিয়েছেন। তবে বাদশার কৃত্রিম হাত প্রতিস্থাপনের জন্য সব খরচ ওই প্রবাসীই বহন করবেন বলে কথা দিয়েছেন।

jagonews24

গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার কচুয়া ইউনিয়নের চন্দনপাঠ গ্রামের যুবক বাদশা মিয়া পূর্বঅভিজ্ঞতা ছাড়া জনৈক ঠিকাদারের অধীনে পল্লী বিদ্যুতের কাজ করতে গিয়ে ১১ হাজার ভোল্টের তারে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন। প্রাণে বাঁচলেও তার দু’হাত অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে কেটে ফেলতে হয়।

মর্মস্পর্শী এ দুর্ঘটনা ও দুই হাত হারিয়ে পঙ্গু হওয়ার পরবর্তী দুঃসহ জীবনের কথা সম্প্রতি জাগো নিউজকে শোনান বাদশা মিয়া। তার জীবনের এই ট্র্যাজেডি ১৬ আগস্ট ‘বাদশার আহাজারি’ শিরোনামে জাগো নিউজে প্রকাশ হয়। তারপর থেকে দেশ-বিদেশের অনেকে বাদশা মিয়াকে সহযোগিতা করতে তার স্বজনদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন।

এমইউ/এইচএ/এমকেএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।